নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের সক্ষমতা বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে কর্মসংস্থানের দিকে জোর দেওয়া হয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। এবার আমাদের মানুষ কাঠামোর উন্নয়ন করতে হবে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য আমাদেরকে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে হবে।প্রতিমন্ত্রী আজ রংপুরে ‘রংপুর শিল্প ও বাণিজ্য মেলা ২০২৪’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
রংপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এর সভাপতি মোঃ আকবর আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মোঃ হাবিবুর রহমান, পুলিশ কমিশনার মোঃ মনিরুজ্জামান, পুলিশ সুপার মোঃ ফেরদৌস আলী চৌধুরী, রংপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এর সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু হেনা মো: রেজওয়ানুল করিম, রংপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন বাবুল, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডাক্তার মোঃ দেলোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, রংপুরে মেরিন একাডেমি হয়েছে, অনেকগুলো ইউনিভার্সিটি হয়ে গেছে, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি হচ্ছে, চিলমারীতে আন্তর্জাতিক নদী বন্দর হচ্ছে, শিপ পার্সোনেল ইনস্টিটিউট হতে যাচ্ছে। আরো অনেক কিছুই হবে। এই যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে- এটা ধরে রাখার জন্য দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য সেমিনার সিম্পোজিয়ামগুলো খুবই বেশি প্রয়োজন। এগুলো থেকে বেরিয়ে আসবে আমরা কোন পথে হাঁটবো। একটি সরকার প্রত্যেকটি মানুষের কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে উপকার করতে পারে না; সম্ভব নয় ।
সরকারের দায়িত্ব পথ তৈরি করা করে দেওয়া। যে পথ দিয়ে মানুষ হাটবে। আজকে ব্যবসা বান্ধব, শিক্ষা, শ্রমিক, কৃষি, ছাত্র, নারী বান্ধব প্রধানমন্ত্রী যেখানেই যাবেন সেখানে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের বন্ধুত্বের আঁচলে বাঁধা আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ব শেখ হাসিনা। কাজেই এই নেতৃত্বকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। আমাদের হাজার বছরের পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বঙ্গবন্ধুকে উপহার দিয়েছিলেন । আমরা স্বাধীন সার্বভৌম দেশ পেয়েছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরের মাথায় তাকে হত্যা করা হয়। আমরা আলোর মুখ দেখতে পাই নাই। আমরা অন্ধকারে চলে গেছি। সেই অন্ধকার থেকে আলোর আমাদেরকে তুলে এনেছেন তারই রক্তের উত্তরাধিকার দেশরত্ন শেখ হাসিনা। বাংলার আলোর দিশারী।
এই আলোকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। এ আলো শুধু বিনোদনের জন্য নয়। এ আলো কাজে লাগাতে হবে আগামী প্রজন্মের জন্য। কারণ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জয়লাভের জন্য রাজনীতি করেন না। তিনি রাজনীতিতে বিজয়ী হওয়ার জন্য রাজনীতি করেন না। তিনি রাজনীতি করেন আগামী প্রজন্মকে আলো দেখার জন্য। পথ দেখানোর জন্য। তিনি সেজন্য ২০০৮ সালে ২০২১ সালের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা দিয়েছিলেন। ২০৪১ সালের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা দিয়ে থেমে থাকেন নি। তিনি বদ্বীপ পরিকল্পনা দিয়েছেন। কাজেই এই নেতৃত্বকে কাজে লাগাতে হবে। রংপুর বিভাগের ব্যবসা বাণিজ্য শিল্প কারখানা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে রংপুরকেই নেতৃত্ব দিতে হবে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, রংপুর অঞ্চলে একসময় মংগা ছিল। দারিদ্রতা ছিল । এই অঞ্চলের মানুষকে ‘মফিজ’ বলে তিরস্কার করা হতো। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ দারিদ্র্যতাকে তুলে দিয়েছে। এ অঞ্চলে মঙ্গা নাই, দারিদ্রতা নাই। মঙ্গা দেখতে হলে জাদুঘরে যেতে হবে। এসব উন্নয়ন করেছেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তিনি রংপুরকে বিভাগ করেছেন। রংপুর বিভাগের ধরলা নদী খনন হচ্ছে। ঘাঘট নদী খননের লক্ষ্যে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। ঘাঘট নদীর নৌপথকে পুনরুদ্ধার করে জীবন ও জীবিকায় কাজে লাগানো হবে। রংপুর বিভাগের বুড়িমারী, হিলি, বাংলাবান্ধা, বিরল স্থলবন্দর চালু আছে।
এগুলোতে ইমিগ্রেশন বন্ধ ছিল। আস্তে আস্তে ইমিগ্রেশন চালু হচ্ছে। পোর্টগুলোকে আপগ্রেডেশন করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের জন্য আমদানি রপ্তানির জন্য সুযোগ সুবিধা যাতে থাকে, পর্যটকদের যাওয়া আসা প্ল্যাটফর্ম থাকে, সেসব বিষয়ে অনেকগুলো প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যের সহায়ক হবে। উত্তরাঞ্চলে কল কারখানা তৈরি করা দরকার। এক সময় শুধু বড় সুগার মিল ছিল। জ্বালানি নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলে আলোর প্রদীপ জ্বলা শুরু হয়েছে। রংপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এ মেলার আয়োজন করেছে।