বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়ে সেনাপ্রধান যে সময়সীমার উল্লেখ করেছেন তাতে তিনি খুশি, যদিও তারা আরো আগে নির্বাচন প্রত্যাশা করেছিলেন। একই সঙ্গে জয় সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে আওয়ামী লীগকে ছাড়া প্রকৃত সংস্কার ও নির্বাচন অসম্ভব।’
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা জয় মঙ্গলবার রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এখন অন্তত একটা প্রত্যাশিত সময়সীমা আছে, এটা জেনে আমি খুশি।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমরা এমন নাটক আগেও দেখেছি যেখানে একটি অসাংবিধানিক, অনির্বাচিত সরকার সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তারপরে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে যায়।’
গতকাল রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, যাতে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে সে জন্য তিনি যেকোনো পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেবেন।
শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে দেশের সার্বিক সংস্কারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে নির্বাচন কবে হতে পারে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখ জানানো হয়নি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে যে ছয়টি সংস্কার কমিটির সুপারিশ পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে এবং ‘সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করলে এবং ভোটার তালিকা তৈরি হলে ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
ওয়াশিংটন থেকে রয়টার্সকে জয় বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো ও বৃহত্তম রাজনৈতিক দলকে বাদ দিয়ে বৈধ সংস্কার ও নির্বাচন করা অসম্ভব।’
গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন হাসিনা। তার দলের অধিকাংশ সিনিয়র নেতা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, দেশের ভেতরে আত্মগোপনে আছেন কিংবা প্রায় এক হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যার বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।
জয় দাবি করেন, হাসিনার পতনের পর আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।
জয়ের এই মন্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত কোনো সাড়া পায়নি রয়টার্স।
নির্বাচনী সংস্কার কমিটির প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘পর্যালোচনা করে তিন মাসের মধ্যে তারা সুপারিশ জমা দেবেন।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপ করবে কি না, সেটা সরকারের ওপর নির্ভর করছে।’