বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালে রাগ করে কোটা সিস্টেম বাতিল করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেছেন। আপনি তো ডামি প্রধানমন্ত্রী। আপনি শপথ নেয়ার সময় বলেছিলেন রাগ ও বিরাগের বশবর্তী হয়ে কোনো কাজ করবেন না। আপনি তো শপথ ভঙ্গ করেছেন। সংবিধান ভঙ্গ করছেন প্রতিনিয়ত।
আজ সোমবার ঢাকা মহানগর যুবদল দক্ষিণের আহ্বায়ক খন্দকার এনামের পরিবারের খোঁজ নিতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী আরও বলেন, সব চেয়ে বড় যদি অপরাধী হয়, কারাবন্দী হয়, সেটি তো আপনাকে হতে হবে। প্রতি মুহূর্তে তিনি একের পর এক আইন ভাঙছেন। রাগের বশবর্তী হয়ে আপনি কোটা পদ্ধতি বাতিল করেছেন, প্রথমেই আপনি শপথ ভঙ্গ করেছেন। আপনি শপথ ও আইন ভঙ্গকারী প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী প্রতি প্রশ্ন ছুঁড়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ৭১ সালের যুদ্ধের সময় আপনি কোথায় ছিলেন? ঢাকায় তো ছিলেন স্বামীকে নিয়ে। কই স্বামীকে তো মুক্তিযুদ্ধে পাঠাননি।
রিজভী বলেন, আজ কোটা সংস্কারের জন্য উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি হয়েছে। এর কারণ প্রধানমন্ত্রী যৌক্তিক আন্দোলন পরিপন্থী কথা বলেছেন। কি বলেছেন, ‘যারা আন্দোলন করেছেন তারা নাকি রাজাকারের নাতি’। ১৮ সালে আপনি আন্দোলনরত ছাত্রদের সান্তনা দিতে বাতিল করেছিলেন। মনে আক্রোশ পুষে রেখেছিলেন, সময়মতো সেটি কাজে লাগাবেন। তাই লাগিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি যদি ৩৪ বছর আগে ফিরে যেতে পারতাম। তাহলে এই কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নিতাম।
আইন আদালত প্রধানমন্ত্রীর আঁচলে বন্দী এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, আদালতকে দিয়ে আপনি সব ইচ্ছা পূরণের কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও পুলিশ বাহিনী লেলিয়ে দিয়েছেন। আপনি হয়তো ভাবছেন, সব পথ বন্ধ করে দিয়েছেন, কেউ আসবে না। মনে রাখবেন, বেহুলার বাসরঘরের কোথাও না কোথাও ছিদ্র থাকে। সেই ছিদ্র দিয়ে গণতন্ত্রকামী মানুষের ঢেউ আপনার সিংহাসন ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা রফিকুল ইসলাম, সহ-অর্থনৈতিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি জয়দেব জয়, সাবেক স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুর রহমান তুষার, সহ-সভাপতি তৌহিদুর রহমান আউয়াল, বিএনপি নেতা জাকির হোসেন, সাবেক ছাত্রনেতা নাহিদুর রহমান নাহিদ, মহিউদ্দিন মহি, ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহ পরান, ছাত্রদল নেতা ডা. মুশফিক, মিরাজ হোসেন, আশরাফুল আসাদসহ নেতৃবৃন্দ।
কারাগারে বন্দি এনামের স্ত্রী নাজনীন আক্তার লতা বলেন, ‘আমরা সব সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি। আমার দুটি বাচ্চা জন্ম হওয়ার সময় আমি আমার স্বামীকে কাছে পাইনি। এর চেয়ে কষ্ট আর কি হতে পারে। জন্ম হওয়ার পর তার সন্তানের মুখ দেখতে পারেনি। বাবা বেঁচে থাকার পরও আমার সন্তানদের এতিম অবস্থা।’