চলচ্চিত্রে শেখ মুজিবুর রহমানের বউ এর চরিত্রে যে অভিনয় করে তার স্বামীকে (মোস্তফা সরয়ার ফারুকী) উপদেষ্টা বানানো হয়। কেন? ইলিয়াস কাঞ্চনকে চোখে পড়ে না? সংস্কৃতিক অঙ্গনে যার বিশাল অবদান। সড়ককে নিরাপদ করতে যার সব থেকে বড় অবদান সেই ইলিয়াস কাঞ্চন এর মতো ভালো মানুষকে উপদেষ্টা বানাতে কিসের ভয়?
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম এসব কথা বলেন।
নিসচা আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নিসচার প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম বলেন, ইলিয়াস কাঞ্চন একক উদ্যোগে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন গড়ে তুলেছেন। সেভাবে তাঁর পাশে থাকতে পারেননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিরাপদ সড়ক গড়তে যে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা দরকার, সেটা হয়নি। বরং যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের নিয়ে মন্ত্রীরা বিদ্রূপ করেছেন।
সড়কে যে মাফিয়া চক্র বিদ্যমান যারা সরকারকেও গোনে না তাদের এখনো ধরা হচ্ছে না কেন? অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, পুলিশ কেন তাদের ধরতে পারছে না। কিসের এত ভয়? এত বছর পরও সড়ক নিরাপদ হয়নি। রাষ্ট্রের ব্যবস্থাপনায় সেই চিন্তা তো আসেই নাই, উপরন্তু রাষ্ট্রের বিভিন্ন মন্ত্রীরা ইলিয়াস কাঞ্চনকে বিদ্রুপার্থে সমালোচনা করেছে।
এখন কেউ সড়কে সিন্ডিকেট গড়ে তুললে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান আবদুস সালাম। তিনি বলেন, যারা বিএনপির নাম ব্যবহার করে এসব করছে, তারা দলকে খাটো করতে চাইছে। বর্তমান সরকারের উচিত সব সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া।
তিনি আরও বলেন, গত দেড় দশকে সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থাপনায় যে আধুনিকতা আনা দরকার সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় কোনো মাস্টারপ্ল্যান আমরা দেখিনি। প্রতিনিয়ত সড়কে গাড়ির চাপ বাড়ছে। কিন্তু সেই অনুপাতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। আমাদের রেল ও নৌ পথে অনেক অব্যবস্থাপনা বিদ্যমান। আমি মনে করি সড়কের চেয়ে রেল ও নৌ পথে বেশি দৃষ্টি দেওয়া দরকার যেন সড়কে চাপ কমে।
আধিপত্যবাদী সংস্কৃতির কারণে আমাদের দেশীয় কৃষ্টি-কালচার হারিয়ে যাচ্ছে। আমি ইলিয়াস কাঞ্চনকে অনুরোধ করব, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের পাশাপাশি সংস্কৃতিক আন্দোলন করুন।
বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বলেন, আমরা সবাই আন্দোলন করেছি, সবাই মিলে আলোচনা করে ৩১ দফা দিয়েছি। আপনারা কবে নির্বাচন করতে চান তার একটা রোডম্যাপ দেন। নয়তো চক্রান্ত হতেই থাকবে। সংখ্যালঘুদের আড়ালে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ আছে। তারা চক্রান্ত করছে। আবদুস সালাম বলেন, আওয়ামী লীগের ভূত সব জায়গায় বসে আছে। তাদের হাতে সংস্কার সম্ভব নয়। যারা শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার বানিয়েছে তারা এখনো সব জায়গায় বহাল তবীয়তে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম।