১৭ এপ্রিল, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের শপথ রক্ষা করতে হলে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) বিকালে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষ্যে পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক-সাইফ-মিজান স্মৃতি সভাকক্ষে পিরোজপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় রাজধানীর বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন,বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা করতে গেলে শেখ হাসিনার নিকটবর্তী কেউ নেই। শেখ হাসিনাই বাঙালির সব আশা-আকাঙ্ক্ষার শেষ আশ্রয়স্থল। শেখ হাসিনা দেখিয়েছেন কিভাবে একটি বিপন্ন রাষ্ট্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে হয়। তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে একটি রাষ্ট্রকে দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করতে হয়।
তিনি দেখিয়েছেন হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানের সহাবস্থান থেকে কিভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হয়। তার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যদি আমরা ধরে রাখতে পারি, তাহলে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল যে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার শপথ গ্রহণ করেছিল, সে সরকারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্তদের স্বপ্ন সার্থক হবে। উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য গতিতে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবো, এটাই হোক ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের প্রত্যয়।
শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার শপথ গ্রহণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করেছিল। সেটা ছিল ঐতিহাসিক এক মাহেন্দ্রক্ষণ। সেটা ছিল এক দুঃসাহসী অভিযান। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার যে সময় শপথ গ্রহণ করে তখন কেউ কল্পনাও করেনি এভাবে অর্থ-সম্পদহীন একটা সরকার গঠন করে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা সম্ভব হবে, বিদেশের স্বীকৃতি আদায় করা যাবে। সবকিছু সম্ভব হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, তার ব্যক্তিত্ব ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার কারণে।
এ সময় প্রধান অতিথি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে গিয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। লাল সবুজের পতাকার বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আজ উন্নয়নের ম্যাজিশিয়ান। করোনোর ভয়াবহ অবস্থাও বাংলাদেশকে বিপর্যস্ত করতে পারেনি তার অন্যতম কারণ একজন রাষ্ট্র নায়ক আমরা পেয়েছি যিনি বিশ্বের বিস্ময়। যিনি বিশ্বের সব সরকার প্রধানদের অন্যতম শীর্ষ ব্যক্তিত্ব। সততা, আত্মবিশ্বাস, দৃঢ়তা এবং দেশপ্রেম যার অভীষ্ট। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ এখানে পৌঁছেছে।
তিনি আরো যোগ করেন, আবার নতুন করে স্বাধীনতাবিরোধীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাইছে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে। এ সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের, দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসীদের সচেতন থাকতে হবে। আবার যেন বিএনপি-জামায়াত, স্বাধীনতাবিরোধীরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে না পারে। আমাদের একটি জায়গায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সেটা হলো, আমাদের মৌলিক জায়গা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আদর্শিক জায়গা শেখ মুজিব।
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের সভাপতিত্বে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. হাসনাত ইউসুফ জাকী, এনএসআই এর যুগ্ম পরিচালক মোহা. আব্দুল কাদের, পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কানাই লাল বিশ্বাস, পিরোজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গৌতম নারায়ণ রায় চৌধুরী ও ফজলুল হক সেন্টু, পিরোজপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান নাসিম, পিরোজপুর জেলা পূজা পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোপাল বসু, স্থানীয় অন্যান্য সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।