বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের মাধ্যমে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা পেয়েছি, নির্বাচনটি কবে হচ্ছে। এটি একটি ভালো খবর। তবে আমরা আরও বেশি আনন্দিত হতাম এবং আশ্বস্ত হতাম, দেশের মানুষ মানুষও আশ্বস্ত হতো রোডম্যাপটি কী হতে পারে, কবের মধ্যে তারা নির্বাচন নিয়ে ভাবছেন। যদি তারা একটু পরিষ্কার করতেন, তাহলে আমার মনে হয় দেশের মানুষ আরও অনেক বেশি আশ্বস্ত হতো।’
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
রুমিন বলেন, ‘আপনারা জানেন দেশে ৫ আগস্টের পর থেকে নানা মহল বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত। তারা এই সরকারকে একদিনের জন্য শান্তিতে দেশ পরিচালনা করছে বা করবে এই সুযোগ দিতে রাজি না। সেই জায়গা থেকে আমরা বিশ্বাস করি, দেশের মানুষও বিশ্বাস করে একটি নির্বাচিত সরকার যত সহজে এ ধরনের অস্থিতিশীলতা বা সমস্যা মোকাবিলা করতে পারে, আর কোনও সরকারের পক্ষে এ ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। সুতরাং দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে, একটি নির্বাচন যত দ্রুত সম্ভব দিলে এটা সকলের জন্য মঙ্গলজনক হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি একটা অর্থনৈতিক স্থবিরতা। আমরা লক্ষ করছি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ কিন্তু সেভাবে হচ্ছে না। কারণ, বিনিয়োগের জন্য একটা স্থিতিশীল পরিবেশ প্রয়োজন। ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করবে তখনই, যখন দেশে স্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করবে। তাই সেই দিক থেকে চিন্তা করলে নির্বাচিত সরকারের কোনও বিকল্প নেই। সুতরাং আমরা আশা করবো, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের একটি রোডম্যাপ দেবে, কী কী সংস্কার তারা কত দিনের মধ্যে সম্পন্ন করে মানুষের ক্ষমতা মানুষের হাতে ফিরিয়ে দেবে। এটা আমাদের প্রত্যাশা।’
মামলা বাণিজ্য প্রসঙ্গ টেনে ব্যারিস্টার রুমিন বলেন, ‘আমরা জানি, বহু নিরীহ মানুষকে টাকা দিলে মামলা থেকে নাম যাবে আবার টাকা না দিলে মামলায় নাম দেওয়া হবে, এরকম ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনা শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া নয়, সারা বাংলাদেশের ঘটেছে। এগুলো হচ্ছে আগে কোনও কারণে হয়তো শত্রুতা ছিল, বিরোধ ছিল। এখন আমার (প্রতীকী) অবস্থা একটু শক্ত হয়েছে। শুভ দিন আসছে বলে মনে হচ্ছে। আমি আমার জমির দ্বন্দ্ব, যার সঙ্গে পারিবারিক দ্বন্দ্ব আছে, যার সঙ্গে গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব আছে, তাকে এনে মামলায় দিয়ে দিচ্ছি।
যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করবো, আপনাদের সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমি পুলিশকে অনুরোধ করবো, মামলা নেওয়ার আগে দয়া করে যাচাই-বাছাই করবেন। অনেক পুলিশ অফিসাররা বলেন, মামলা দিতে আসছে, তো মামলা নিতেই হবে। হ্যাঁ, তা ঠিক আছে। আপনারা মামলা নেন। কিন্তু পরের দিন গিয়ে গ্রেফতার করার জন্য দৌড়ঝাঁপ করবেন না। একটু খবর নেন, খোঁজ নেন, তদন্ত করেন। যদি তদন্তে সত্যতা পাওয়া যায়, নিশ্চয়ই আপনারা তাদের গ্রেফতার করবেন। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু তার আগে সত্য-মিথ্যা যাচাই করুন। তদন্ত করুন। আর যারা মামলা বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত তাদের আমি বলবো, সাবধান হয়ে যান। বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু জীবন দিতে শিখেছে। বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু ক্ষমতার বিরুদ্ধে শক্তভাবে দাঁড়াতে শিখেছে। এই শেখা জিনিস কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ কখনও ভুলবে না। সাঁতার যে একবার শেখে সে কিন্তু আমৃত্যু সাঁতার কাটতে পারে। সুতরাং সাবধান হয়ে যান।’