বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী পাঠানো নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বক্তব্য রেখেছেন, তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি স্বরূপ।
সোমবার লন্ডন থেকে মুঠোফোনে গণমাধ্যমের কাছে দলের পক্ষ থেকে বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। প্রতিক্রিয়ায় মমতাকে এ বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সকালে কয়েকটি পত্রিকায় একটা সংবাদ দেখলাম, ভারতের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সে বিষয়ে আমি বক্তব্য না রেখে পারছি না। তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) যে উক্তি করেছেন বাংলাদেশে শান্তি বাহিনী প্রেরণের… এটা সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ। আমরা মনে করি এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে নেতৃবর্গের যে দৃষ্টিভঙ্গি, তা কিছুটা হলেও প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত। এই ধরনের কোনো চিন্তাও তাদের মধ্যে আসা উচিত হবে না। কারণ, বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে এবং সম্প্রতি একটা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তারা গণতন্ত্রকে ফিরে পেয়েছে। এ দেশের মানুষ যেকোনো মূল্যে এই ধরনের চক্রান্তকে রুখে দেবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ক্ষুণ্ন হওয়া বা বিপন্ন হওয়ার যে অলীক কাহিনি ভারতীয় মিডিয়াগুলোতে প্রচারিত ও প্রকাশিত হচ্ছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বার বার বলেছি, এখানে ভারতের সাংবাদিকরা এসেছিল, তারাও দেখেছেন… বাংলাদেশে এই ধরনের কোনো পরিস্থিতি নেই। অথচ ভারতবর্ষের মিডিয়া ও তাদের নেতৃবর্গ যেভাবে সম্পূর্ণ একটা মিথ্যাকে প্রচার করছেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি দিচ্ছেন… তা কোনোভাবেই বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনকভাবে যে কথাগুলো বলা হচ্ছে, অতি সম্প্রতি ইসকনকে নিয়ে যে এখানে নতুন করে চক্রান্ত শুরু হয়েছে, তা বাংলাদেশের মানুষ কখনো গ্রহণ করবে না। এটা খুব পরিষ্কার যে, ইসকনের সাম্প্রতিক ভূমিকা অত্যন্ত সন্দেহজনক, রহস্যজনক এবং বাংলাদেশের স্থিতিশীলতার প্রতি হুমকিস্বরূপ।
প্রসঙ্গত, সোমবার বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিয়ে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ চান তৃণমূল নেত্রী মমতা। এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশে ইসকনের তিনজন পুরোহিত গ্রেফতার হওয়ার খবরের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এমন দাবি তুললেন।