ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলা ঘিরে সরবরাহ উদ্বেগ থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে দফায় দফায় বেড়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। ১০০ ডলার ছাড়িয়ে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১৪০ ডলারে উঠে আসে। তবে বড় দেশগুলোর মজুদ ছাড়ার ঘোষণায় গত সপ্তাহে দাম কিছুটা কমেছে। যদিও সপ্তাহের শেষ দিন গত শুক্রবার দাম আবারও ৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ইকোনমিকসের হিসাব অনুযায়ী, গত শুক্রবার বিশ্ববাজারে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত ডাব্লিউটিআই তেলের দাম ৩.১২ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেল হয়েছে ১০৯.৩৩ ডলার। আর লন্ডনের ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দাম ৩.০৬ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেল হয় ১১২.৬৭ ডলার।
এদিকে বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদা নিয়ে আন্তর্জাতিক এনার্জি এজেন্সি জানায়, ২০১৯ সালে বিশ্বে দৈনিক প্রায় ১০ কোটি ব্যারেল তেলের প্রয়োজন হয়েছে। তবে বিশ্ব চাহিদার ৫ শতাংশের ১ শতাংশেরই প্রয়োজন হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের, অর্থাৎ দেশটি দৈনিক দুই কোটি ব্যারেলের বেশি ব্যবহার করেছে। এর পরেই রয়েছে চীন ও ভারত। দেশ দুটি যথাক্রমে দৈনিক এক কোটি তিন লাখের বেশি ও প্রায় ৫০ লাখ ব্যারেল তেল ব্যবহার করে।
বিশ্বে প্রাকৃতিক তেলের মোট মজুদ রয়েছে ১.৫৫ ট্রিলিয়ন ব্যারেল। যার মধ্যে ভেনিজুয়েলায় তিন লাখ তিন হাজার ৮০৬ মিলিয়ন ব্যারেল, সৌদি আরবে দুই লাখ ৫৮ হাজার ৬০০ মিলিয়ন ব্যারেল ও ইরানে দুই লাখ আট হাজার ৬০০ মিলিয়ন ব্যারেল মজুদ রয়েছে। অর্থাৎ বিশ্ব মজুদের অর্ধেকই রয়েছে এই তিনটি দেশের হাতে।
অন্যদিকে ইউক্রেনে হামলাকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার তেলসহ অন্যান্য জ্বালানি নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুরু থেকেই রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন। ২০২২ সালের শেষ নাগাদ রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি বন্ধ করার কথা জানিয়েছে মিত্র যুক্তরাজ্যও। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপে বাড়ছে তেলের দাম।
রাশিয়ার তেল, গ্যাস ও কয়লার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, রাশিয়ার তেলবাহী জাহাজ আর যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না। মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। রাশিয়া হচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশ। দৈনিক ৭০ লাখ ব্যারেল বা বৈশ্বিক ৭ শতাংশ তেল সরবরাহ করে দেশটি। সূত্র : ট্রেডিং ইকোনমিকস ও রয়টার্স।