মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি বলেছেন, “আওয়ামী লীগ ও সরকারের বিরোধিতা করতে গিয়ে বিএনপি এখন রাষ্ট্রের বিরোধিতা শুরু করেছে। তারা বিশ্বে ৮টি ফার্ম নিয়োগ করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য টাকা বিনিয়োগ করেছে। এটা তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব প্রমাণ করছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি সবকিছুর ভেতরে নেতিবাচক কিছু খুঁজে পাচ্ছে। তারা প্রথম বলেছে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন করতে হবে। এখন যখন আইন পাস করা হয়েছে, তখন তারা বলছে এতো তড়িঘড়ি করা ঠিক না। যাকে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা, বিএনপির অবস্থা এখন সেরকম হয়েছে। ভালো কাজকে ভালো বলার মানসিক অবস্থা এখন তাদের নেই। এর দ্বারা মানুষের কাছে বিএনপি অস্তিত্বহীনতার জায়গায় পৌঁছে যাচ্ছে”।
বৃহস্পতিবার সাভারে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) এর কনফারেন্স হলে ইনস্টিটিউটের দুই দিনব্যাপী বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “করোনা সংকটের মধ্যেও দেশের অর্থনীতির চাকা, গবেষণা কার্যক্রম ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড অবশ্যই অব্যাহত রাখতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কাজ চালিয়ে যেতে হবে। কারণ দেশের ১৭ কোটি মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে, উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। দেশে নতুন নতুন গবেষণার সৃষ্টি সকলের কাছে পৌঁছে দিতে হবে”।
এ সময় বিএলআরআই’র গবেষকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, “গবেষণা ক্ষেত্রে সবটুকু মেধা ও যোগ্যতার বিকাশ ঘটাতে হবে। নিজের মেধা দিয়ে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে। দেশের জন্য বিজ্ঞানী ও গবেষকদের কাজ করতে হবে। গবেষকদের মধ্যে সৃষ্টির তৃষ্ণা থাকতে হবে”।
মন্ত্রী আরো যোগ করেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গবেষণা খাতকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিচ্ছেন। তিনি সব সময় গবেষণাকে সমৃদ্ধ করার কথা বলেন। বিএলআরআই এর অনেক গবেষণালব্ধ সৃষ্টি রয়েছে। তবে এ সৃষ্টিতেই থমকে যাওয়া যাবে না। সৃষ্টির উল্লাস যেমন নিজেকে গর্বিত করে, তেমনি জাতিকে গৌরবান্বিত করে। সে সৃষ্টির কারিগর হচ্ছেন গবেষকরা”।
তিনি আরো বলেন, “প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন এখন বিশ্বের বিস্ময়। মাছ, মাংস, দুধ, ডিম উৎপাদনে বর্তমানে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। এ সাফল্যের সূচনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন খাবারের অন্যতম উপাদান মাছ, মাংস, দুধ, ডিম। মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণের অন্যতম খাত প্রাণিসম্পদ খাত। এ খাতকে বিকশিত করার প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বিএলআরআই”।
বিএলআরআই এর মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস এম ফেরদৌস আলম ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএলআরআই এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান।
এতে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বিএলআরআই-এর প্রাক্তন ও বর্তমান ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী ও গবেষকগণ এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।
কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, “সরকার নিশ্চয়ই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেবে। তবে কখনো কখনো শিক্ষার্থীদের উপর ভর করে বিরোধী রাজনৈতিক দল বা কিছু কিছু লোক ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করে। এ জাতীয় সুযোগসন্ধানী কেউ আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক চাওয়া পূরণ করবে বলে আমার বিশ্বাস”।
পরে মন্ত্রী ৩৪টি গবেষণা প্রবন্ধের পোস্টার উপস্থাপনা প্রত্যক্ষ করেন এবং বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। দুই দিনব্যাপী এ কর্মশালায় মোট ৬২টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে।