প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আর টানাটানি করবেন না, তাদের শান্তিতে ঘুমাতে দিন।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে গণসংহতি আন্দোলনের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জ্ঞানচক্ষু খুলে গেছে। সাহসের সঙ্গে, সততার সঙ্গে উনি নিজের দলের দিকে তাকাতে পেরেছেন। উনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর বাড়ি যখন আক্রান্ত হয়েছিল তখন বঙ্গবন্ধু ফোন করেছিলেন তার দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কাছে। ফোন করেছিলেন তোফায়েল আহমেদ, আব্দুল রাজ্জাক, সেনাপ্রধান সফিউল্লাহ এবং আরও অনেককে। উনি ফোন করে অনুনয়-বিনয় করেছিলেন, আমার এখানে আসো, কী হচ্ছে তোমরা দেখ।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি তো বললেন না উনি (বঙ্গবন্ধু) জিয়াউর রহমানকে কেনো ফোন করেননি? জেনারেল ওসমানীকে কেনো ফোন করেননি? বিডিআর প্রধান জেনারেল খলিলকে কেনো ফোন করেননি? খালেদ মোশাররফকে কেনো ফোন করেননি? সবচেয়ে বড় কথা যারা স্বাধীনতা এনেছিলেন সেই তাজউদ্দীনকে কেনো ফোন করেননি? সৈয়দ নজরুল ইসলামকে কেনো ফোন করেননি। উনি কি বিব্রতবোধ করছিলেন? সেদিন বঙ্গবন্ধু পাশে যারা দাঁড়াতে পারতেন তাদের কাউকে তিনি ডাকেন নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিহাস ভুলে গেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন উনি (শেখ হাসিনা) বলতে শুরু করেছেন চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের লাশ নাই। উনি কী করে জানলেন? তার বডি যারা রিসিভ করেছিলেন তাদের অনেকই বেঁচে আছেন, অনেকেই আবার বেঁচে নেই। তার পোস্টমর্টেম করেছিলেন ডা. তোফায়েল। তিনি এখনো বেঁচে আছেন। সর্বকালের সবচেয়ে বৃহৎ জনসমাগম হয়েছিল জিয়াউর রহমানের মরদেহ যখন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আনা হয়।
তিনি আরও বলেন, আজ হঠাৎ এইসব তথ্য কেন আনছেন? এটা অনেকাংশে মস্তিষ্ক বিকৃতির লক্ষণ। আপনার ওপর এত মানসিক চাপ-অত্যাচার। আপনার বিশ্রাম প্রয়োজন। চিকিৎসা প্রয়োজন। অনুগ্রহ করে জিয়াউর রহমানকে নিয়ে টানাটানি করবেন না। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে টানাটানি করবেন না। তাদের শান্তিতে ঘুমাতে দেন।
গণসংহতির ঢাকা মহানগর সমন্বয়কারী মনির উদ্দীন পাপ্পুর সভাপতিত্বে এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশিদ ফিরোজ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেল, গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তাছলিমা আক্তার প্রমুখ।