ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক তথ্য আছে এখন কিন্তু সেগুলো ডিজিটাল মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে পারিনি আমরা। জাতির পিতাকে নিয়ে তিন হাজারের মতো বই প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলো অনলাইনে ছড়িয়ে দিতে পারলে নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুকে চিনবে, জানবে ও ভালোবাসবে। তিনি নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও তার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্ব, বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেম এবং তার আদর্শ ও নেতৃত্বের দৃঢ়তা সম্পর্কে জানানোর জন্য সাংবাদিকগণকে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ডিআরইউ সদস্য সন্তানদের বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ বিষয়ক আবৃত্তি আসর ‘মৃত্যু্ঞ্জয়ী বঙ্গবন্ধু ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পিআইবি’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব ব্ক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিআরইউ সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাদিরা শারমিন।
মন্ত্রী বলেন, টেলিকম, ডাক, যোগাযোগ, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ এমন কোন খাত নেই যে খাতের অগ্রগতির অভিযাত্রা বঙ্গবন্ধু শুরু করেননি। বঙ্গবন্ধুর শাসনামল বাহাত্তার থেকে পঁচাত্তর অত্যন্ত ঘটনাবহুল। তিনি এই সময়ের মধ্যেই জাতিকে এগিয়ে নেওয়ার সোপান রচনা করেন। মন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের অর্জন বর্ণনা কর বলেন, তেহাত্তর সালে আইটিইউ এবং ইউপিইউ এবং পঁচাত্তরের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে অংশগ্রহণের যাত্রা শুরু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর পথ অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশেকে পঞ্চম শিল্পবিপ্লবের নেতৃত্বের জায়গায় উপণীত করেছেন বলে উল্লেখ করেন দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত।
১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংবাদিক নেতা জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমরা যেভাবে শিশু জীবন কাটিয়েছি আজকের শিশুদের জীবন এইভাবে কাটবে না। তিনি অভিভাবকদেরকে শিশুদের বিকাশে তাদেরকে ইন্টারনেট জগতে প্রবেশের সুযোগ প্রদানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, পৃথিবীর বড় লাইব্রেরির নাম ইন্টারনেট। প্যারেন্টাইল গাইডেন্স দিয়ে শিশুদের ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ দিলে ইন্টারনেটের খারাপ দিক থেকে তাদের রক্ষা করা সম্ভব বলে তিনি উল্লেখ করেন। কম্পিউটারে বাংলা ভাষার প্রবর্তক জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, সাংবাদিকদের কম্পিউটার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আমরা যাত্রা শুরু করেছিলাম। আপনাদের শিশুদের মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে ডিজিটাল শিক্ষা প্রদানে কাজ করছি।
তিনি বলেন, সামনের দিনে শিশুরা পুতুল নিয়ে খেলবে না, তারা খেলবে রোবট নিয়ে। এই সময়টার জন্য সন্তানকে প্রস্তুত না করলে আপনার সন্তান পেছনে থাকবে। সাংবাদিকদের সন্তানদের জন্য বিনামূল্যে প্রথম শ্রেনি থেকে পঞ্চম ম্রেণি পর্যন্ত বিজয় ডিজিটাল শিক্ষা কনটেন্ট প্রদানের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন মন্ত্রী। বাহাত্তর সালে সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে কলম ধরেছি এখনো কলম থামেনি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আপনাদের এবং আপনাদের সন্তানদের ডিজিটাল প্রশিক্ষণের দায়িত্ব নেব।
অনুষ্ঠানে জাফর ওয়াজেদ বঙ্গবন্ধুর জীবনে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় নজরুল ইসলাম মিঠু সাংবাদিকদের সন্তানদের সাংস্কৃতিক বিকাশে ও ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণে রিপোর্টার্স ইউনিটি থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা জানান। সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিকদের সন্তানদের বঙ্গবন্ধুর ওপর আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর উপস্থিতির জন্য ধন্যবাদ জানান্। এর আগে শিশুরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা কবিতা আবৃত্তি করে।