জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গত ২৬ আগস্ট ভার্চুয়াল সভায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি।
আজ শনিবার (২৮ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের পক্ষ থেকে এই প্রতিবাদ জানান।
লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ, তাঁর মাজার সম্পর্কে এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সম্পর্কে যে মিথ্যাচার করেছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায়। অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নিম্নমানের মিথ্যাচার জাতিকে বিভ্রান্ত করবার এবং জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করবার অপচেষ্টা বলে মনে করে বিএনপি। দলীয় সভায় এ ধরনের মিথ্যাচার থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানানো হয়।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ইউনিসেফের মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) প্রকাশিত প্রতিবেদনে কভিড-১৯ এর কারণে সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে অবস্থানের প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় আলোচনা হয়। দীর্ঘকাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা স্তর পর্যন্ত চার কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত। আগেও বিএনপি স্বাস্থ্যবিধি মেনে, ১৮ বছরের বেশি বয়সের সব শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের টিকা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। শুক্রবারের সভায়ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা আসার চার বছর অতিক্রম করার পরও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরানোর কোনো ব্যবস্থা করতে না পারা সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতা। সরকার রোহিঙ্গা শরানার্থীদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে দিতে কোনো কার্যকারী কূটনৈতিক পদক্ষেপ না নেওয়ায়, চীনের মধ্যস্থতা ব্যর্থ হয়েছে। ভারত এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেনি। জাতিসংঘের কোনো ফলপ্রসূ উদ্যাগ গ্রহণ করানোর ক্ষেত্রেও সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, দলীয় সভায় সম্প্রতি আফগানিস্তানের কাবুল বিমানবন্দরে সন্ত্রাসীদের বোমা বিষ্ফোরণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। এছাড়া করোনাভাইরাসের টিকার পর্যাপ্ত মজুদ না রেখেই টিকা কর্মসূচি আবার শুরু করা সরকারের আরো একটি ভুল সিদ্ধান্ত বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চন্দ্রিমা উদ্যানে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর নেই। তার পরও বিএনপি সেখানে গিয়ে বিশৃঙ্খলা করে কেন। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তার কোনো প্রমাণ নেই। তিনি খুনি মোশতাকের মূল শক্তি ছিলেন।
ওই সভায় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, জিয়া দেশের স্বাধীনতা ও অস্তিত্বে কখনও বিশ্বাস করতেন না। তাকে ধরে এনে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্র পাঠ করানো হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পরও জিয়াউর রহমান পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন।