শনিবার রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কেবিনে রাখা হয়েছে। তিনি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের ‘নিবিড় পর্যবেক্ষণে’ রয়েছেন।
রোববার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে বেগম খালেদা জিয়ার সবশেষ শারীরিক অবস্থা জানাতে গিয়ে এসব কথা জানান তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
এ সময় ডা. জাহিদ বলেন, ম্যাডাম কেবিনে আছেন। তিনি শনিবার রাত থেকে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তার অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল রয়েছে। গতকাল থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হচ্ছে।
এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন আছেন। গতকাল রাতে হাসপাতালে ভর্তির পর তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা একটি বৈঠক করেছেন বলেও জানান অধ্যাপক জাহিদ।
তিনি বলেন, গতকাল ভর্তি হওয়ার পর মেডিক্যাল বোর্ডের পরামর্শে ম্যাডামের বেশকিছু পরীক্ষা করা হয়েছে। ওই পরীক্ষাগুলোর কিছু রিপোর্ট গতকাল পাওয়া গেছে। কিছু আজ এবং বাকিগুলো রাতে পাওয়া যাবে। রিপোর্ট পাওয়ার পর মেডিক্যাল বোর্ড আজ রাতের কোনও এক সময়ে আবার বসবেন এবং রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করে পরবর্তী চিকিৎসা প্রেসক্রাইব করবেন। তবে প্রাথমিকভাবে মেডিক্যাল বোর্ড গতকাল এক দফা বসে যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সেটা নিয়েছেন। সকাল বেলায়ও বোর্ডের কয়েকজন সদস্য ওনার শারীরিক অবস্থা নিরীক্ষা করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ডা. জাহিদ বলেন, ওনার কিছু অসুস্থতা ছিল। তাছাড়া নিয়মিত চেকআপের পাশাপাশি নতুন কিছু উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। এজন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে অনুযায়ী তাকে এখানে নিয়মিত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সেই চিকিৎসায় উনি মোটামুটি রেসপন্স করছেন।
হাসপাতালে খালেদা জিয়া কয়দিন থাকতে পারেন– জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে। তাছাড়া ওনার শারীরিক অবস্থা ও পরীক্ষার রিপোর্টের ওপর নির্ভর করবে। কাজেই এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা সম্পর্কে জানতে চাইলে ডা. জাহিদ বলেন, ওনার কিছু শারীরিক অসুস্থতা যেমন হার্টের জটিলতা, লিভারের জটিলতা, কিডনির জটিলতা– এগুলো ছিল, আছে। সেগুলোর কোনোটা একটু বৃদ্ধি পেয়েছিল সেজন্য চেকআপ ও চিকিৎসা করতে ওনাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খালেদা জিয়াকে কেবিনে স্পেশালিস্ট এমআইএসটি নার্স ও ডাক্তাররা টেক কেয়ার করছেন। কেবিনে মানে, শি ইজ আন্ডার স্ট্রিক্ট সুপারভিশন।
অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা হচ্ছেন অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী, অধ্যাপক নুর উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক একিউএম মহসিন, অধ্যাপক শেখ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক জিয়াউল হক এবং অধ্যাপক সাদেকুল ইসলাম। এছাড়া লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমানসহ অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডে রয়েছেন।
হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করছেন প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর সহধর্মিণী শর্মিলা রহমান সিঁথি। এছাড়াও লন্ডন থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমান সবসময় খোঁজ রাখছেন বলে জানান অধ্যাপক জাহিদ।