১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ সামনে রেখে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় রাজধানীর নয়াপল্টনে জড়ো হচ্ছেন নেতাকর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সরব হয়ে উঠছে নয়াপল্টন। বাড়ছে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি। যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে নয়াপল্টন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে যোগ দিতে ভোলা থেকে এসেছেন মিজানুর রহমান আলম। তিনি ভোলা চরফ্যাশন ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, আমি গত ৫ তারিখেই ঢাকা চলে আসছি। আমাদের চরফ্যাশন ইউনিয়ন থেকে কম করে হলেও দুই হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় চলে এসেছে। গণসমাবেশ ঘিরে সরকার গণপরিবহন বন্ধ করে দিতে পারে, এ কারণে আমরা আগেভাগে ঢাকায় চলে এসেছি।
কিশোরগঞ্জ থেকে আসা তমাল আহমেদ নামের একজন বলেন, গত ৪ ডিসেম্বর ঢাকায় এসেছি। আমার নামে এ পর্যন্ত ১১টি মামলা হয়েছে। এলাকায় ঠিকমতো থাকতে পারি না। এবার হয় সরকার পতন করবো, না হয় মরবো।
এদিকে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ ঘিরে যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে গত কয়েকদিন ধরেই নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নয়াপল্টন কার্যালয়ে প্রবেশের দুপাশে ফকিরাপুল ও নাইটেঙ্গেল মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি রাখা হয়েছে সাজোয়া যান ও জলকামান।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ এবং দেশের বিভিন্ন এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে সাংগঠনিক বিভাগগুলোতে ধারবাহিকভাবে গণসমাবেশ করেছে বিএনপি। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিভাগীয় গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। দলটি তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়াপল্টনে এ গণসমাবেশ করতে চায়। এ জন্য গত ১৫ নভেম্বর সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বরাবর চিঠিও দেয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে নয়াপল্টনে বিএনপির গণসমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। পুলিশ বিএনপিকে ২৬ শর্তে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে।
তবে সেখানে বিএনপি সমাবেশ করতে নারাজ। প্রথম দিকে তারা নয়াপল্টনেই সমাবেশ করতে নিজেদের অনড় অবস্থানের কথা জানান। পরে অবশ্য সোহরাওয়ার্দীর বিকল্প স্থানে অনুমতি পেলে ‘বিবেচনা’ করার কথা জানিয়েছে বিএনপি।
বিএনপি ‘বিকল্প স্থান’ চাওয়ার পর পুলিশ টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান ও পূর্বাচলে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে গ্রিন সিগন্যাল দেয়। তাতে সাড়া দেয়নি বিএনপি। ফলে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশের স্থান নিয়ে এখনো কাটেনি অনিশ্চয়তা।
এদিকে সমাবেশের নামে ঢাকায় কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করলে বিএনপি প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতারা। তবে বিএনপি বরাবর বলে আসছে, তারা অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশের মতো ঢাকায়ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবে।