জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, দেশে এখন একজনের কথাই আইন। তিনি যা বলবেন সেটাই আইনসিদ্ধ। কেউ না বললে যেনো শাস্তিযোগ্য অপরাধ করে ফেললো। তাই একজনের সিদ্ধান্তই এখন রায়। এমন বাস্তবতায় আমরা পড়ে গেছি। এ থেকে বাঁচতে হলে গর্ভনেন্স চেঞ্জ করতে হবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে হবে। রাজনীতি পরিবর্তন করতে না পারলে কোন কিছুই পরিবর্তন হবে না।
ইদানিং বিদেশীদের খুব দুর্নাম করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বিদেশীরা খারাপ উদ্দেশ্যে গণতন্ত্র ও ভোটের কথা বলছে। এসব কথার কোন অর্থ নেই। বিদেশীরা জনগণের পক্ষেই কথা বলছে, তারা ভালো কিছু চাচ্ছে। বিভিন্ন রোগের টিকা বিদেশীরা আমাদের দিয়েছে। আবার, তারা টাকা পয়সা দিয়ে টিকা কার্যক্রম বাস্তবায়নও করছে। করোনাকালে আমেরিকানরা ১০ কোটি টিকা ফ্রি দিয়েছে। অবস্থা এমন হয়েছে, আমরা শুধু লুটপাট করবো আর বিদেশীরা আমাদের দেশের লোকদের দেখবে। আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের একটি প্রতিনিধি দল জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর সাথে সাক্ষাত করেন। তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।
এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, মাদক ব্যবসার সাথে একটি শক্তিশালী চক্র আছে। তারা বিদ্যমান আইন বাস্তবায়নে বাঁধা হয়ে আছে। মাদক নিয়য়ন্ত্রণে নেই, বরং আশংকাজনক ভাবে বাড়ছে। প্রতিটি গ্রামে মাদক আছে, প্রতিটি পরিবারে মাদকসেবী আছে। অভিযোগ আছে, মাদক ব্যবসায় বিশাল অংকের মুনাফা আছে যা ক্ষমতাসীন দলের নেতা পুলিশ ও সংশ্লিষ্টদের মাঝে ভাগ হচ্ছে। তাই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। যারা অর্থের লোভে মাদক বিস্তারে সহায়তা করছে, একদিন তাদের পরিবারই মাদকের ছোবলে ধংস হয়ে যাবে। লোভ লালসার রাজনীতির জন্যও দেশে মাদকের বিস্তার কমছে না। সিগারেটের নামে এখন গাঁজা বিক্রি হচ্ছে। ক্রস ফায়ারের নামে দেশে বিনা বিচারে অনেক হত্যা করা হয়েছে কিন্তু মাদকের বিস্তার মোটেই কমেনি। তামাকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে তামাক পণ্যের সাথে জড়িত শ্রমিকদের বিকল্প পেশা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, সড়ক নিরাপত্তার বিষয়ে বাংলাদেশের মত আর কোন দেশে এত অবহেলা হয় না। এখানেও অভিযোগ আছে, সরকারি দল, পুলিশ-প্রশাসন একটি বড় অংকের চাঁদা পায়। অনেক পরিবহন মালিক বলেছেন, ৫ শো টাকার টিকেট বিক্রি করতে হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। শুধু চাঁদা দিতেই এই বিশাল অংকের টাকা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে। এরাই আইন বাস্তবায়নে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। একটি কথা আছে, যে সমস্যার সমাধান নেই তাকে সমস্যাই মনে করা হয়না। এখন প্রতিদিন সড়কে দূর্ঘটনা হবে, মানুষ মারা যাবে। এটাই যেন স্বাভাবিক। এখন মানুষ প্রতিদিনের দুর্ঘটনাকে নিত্যদিনের ঘটনা মনে করছে। মানুষ মনে করে এটা নিয়ে কথা বলে লাভ নেই।
এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি -০২ খন্দকার দেলোয়ার জালালী, সাংবাদিক বিউটি রাণী, ঢাকা আহছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং এর সমন্বয়কারী মারজানা মুনতাহা, সদস্য শাহরিয়ার হোসেন, ঢাকা আহছানিয়া মিশন রোড সেফটি প্রকল্পের সমন্বয়কারী শারমিন রহমান, এডভোকেসি অফিসার তাসনিম মেহবুব বাঁধন, তরিকুল ইসলাম ও তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের মিডিয়া ম্যানেজার আল তানভীর নেওয়াজ, প্রোগ্রাম অফিসার অদুত রহমানসহ অনেকে।