সম্প্রতি বাংলাদেশের অভ্যন্তর দিয়ে ভারতের এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে রেল চলাচলের যে সমঝোতা-চুক্তি হয়েছে তার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে খেলাফত মজলিস। খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভায় নেতৃবৃন্দ গভীর উদ্বেগের সাথে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার ভারত সফর করে দেশের জন্য কিছুই আনতে পারেননি। বরং দেশের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে ভারতকে রেল চলাচলের ট্রানজিট দিয়ে এসেছেন।
বহু বছর ধরে শুকনো মৌসুমে বাংলাদেশ তিস্তার পানি পাচ্ছে না, চুক্তি অনুযায়ী গঙ্গার পানিও পাচ্ছে না। বরং বর্ষা মৌসুমে উজানে বাঁধ খুলে দিয়ে ভারত বাংলাদেশের সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর অঞ্চল প্লাবিত করে অর্থনৈতিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্থ করছে। ভারত তার অভ্যন্তরীণ মাত্র ২২ কিলোমিটার পথ ব্যবহার করে নেপালের সাথে বাংলাদেশের সরাসরি বাণিজ্য করার সুযোগ দিচ্ছে না, ভূটানের সাথেও না। সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশের নাগরিক হত্যা বন্ধ হচ্ছে না। গতকালকেও একজন বাংলাদেশীকে তারা হত্যা করেছে।
বাংলাদেশের প্রতি যে রাষ্ট্রের এত অবিচার, এত বিমাতাসুলভ আচরণ সে রাষ্ট্রকে অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া, ট্রানজিট দেওয়া জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। দেশের স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে এই জনবিচ্ছিন্ন সরকার শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকতে ভারতের সাথে এই অসম সমঝোতা-চুক্তি করেছে। বাংলাদেশকে ভারতের নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। ভারতের এই রেল ট্রানজিট বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরো ক্ষতিগ্রস্থ করবে। রেলপথে জনগণের ভোগান্তি আরো বাড়াবে।
ভারত শুধু নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থে নয়, বরং ভৌগলিক স্বার্থে রেল ট্রানজিট সুবিধা নিতে চায়। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহে বিদ্রোহ ঠেকাতে সহজে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ এই রেলপথ ব্যবহার করতে চায়। এর ফলে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব চরম হুমকীর মুখে পড়বে। বাংলাদেশের জনগণ দেশের স্বার্থ-সার্বভৌমত্ব বিরোধী কোন চুক্তি মেনে নিবে না। অবিলম্বে রেল ট্রানজিট সহ ভারতের সাথে দেশের স্বার্থ বিরোধী সকল সমঝোতা-চুক্তি বাতিল করতে হবে। না হলে বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক জনগণ ভারতপ্রেমিক সরকারকে আর কোন ছাড় দিবে না।
গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাহী বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন আমীরে মজলিস মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ। যুগ্ম-মহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত নির্বাহী বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিজানুর রহমান, প্রশিক্ষণ ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, অর্থ সম্পাদক আলহাজ¦ আবু সালেহীন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক ডা: রিফাত হোসেন মালিক, প্রচার ও তথ্য সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু, যুব বিষয়ক সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, সাহাব উদ্দিন আহমদ খন্দকার, মুফতি আবদুল হক আমিনী, জিল্লুর রহমান, অধ্যাপক মাওলানা আজিজুল হক, আবুল হোসেন, প্রিন্সিপাল মাওলানা আজিজুল হক প্রমুখ।