ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে তলাহীন ঝুড়ি থেকে উন্নত বাংলাদেশের সোপান তৈরি করে গেছেন। বিশ্বে ১৯৬৯ সালে তৃতীয় শিল্প বিপ্লব শুরু হয়েছিলো বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র স্থাপন, আইটিইউ-ইউপিইউ এর সদস্য পদ অর্জন, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন, প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ, বাংলা টাইপরাইটার প্রস্তুতকরণ, কুদরতে হুদা শিক্ষা কমিশন গঠন এবং কারিগরি শিক্ষা প্রসারের মধ্য দিয়ে তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে অংশ গ্রহণের সূচনা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই শুরু হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মোবাইল ফোন সাধারণের নাগালে পৌঁছে দিতে ৪টি মোবাইল কোম্পানিকে লাইসেন্স প্রদান, ভি-স্যাটের মাধ্যমে অনলাইন ইন্টারনেট প্রবর্তন এবং কম্পিউটার সাধারণের জন্য সহজলভ্য করতে ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার ও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বিকাশের ব্যবস্থা করে তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ পরিপূর্ণ করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ বছরে বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দানের সক্ষমতা অর্জন করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী আজ সজীব ওয়াজেদ উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র, গাজীপুরে মুজিবশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড চেয়ারম্যান ও সিইও ড. শাহজাহান মাহমুদ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: খলিলুর রহমান, বিটিআরসি‘র ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালনা পরিষদের সদস্য ড. মো: সাজ্জাদ হোসেন এবং গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কামরুজ্জামান বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকে বাঙালি জাতির ইতিহাসের মহানায়ক উল্লেখ করে বলেন, আমরা ভাগ্যবান জাতি কারণ একজন বঙ্গবন্ধুকে আমরা পেয়েছিলাম বলেই স্বাধীনতা পেয়েছি। বঙ্গবন্ধু এমন একজন মানুষ এবং নেতা যাকে নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা আলোচনা করলেও শেষ করার মতো নয়। বঙ্গবন্ধুর দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্ব এবং তার গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরে বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশনারি নেতৃত্ব এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়-এর পরামর্শে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ দেশে ডিজিটাল সংযোগ স্থাপনে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেছে। ইতোমধ্যে দেশের ১৬০টি দূর্গম ইউনিয়ন ছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইভারের উচ্চগতির সংযোগ প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের এমন কোন অঞ্চল থাকবে না যেখানে উচ্চগতির সংযোগ থাকবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, আগামী ১২ ডিসেম্বর আমরা ফাইভ-জি যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। পৃথিবীর যে ৬/৭টি দেশ ফাইভ-জি প্রযুক্তি যুগে পা দিয়েছে বাংলাদেশ তাদের মধ্যে একটি বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ফাইভ-জি প্রযুক্তি হবে একটি ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি টু-জি, থ্রি-জি কিংবা ৪জি প্রযুক্তির মতো নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ফাইভ-জি প্রযুক্তি হবে পৃথিবীকে বদলে দেওয়ার প্রযুক্তি।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব বলেন, বাংলাদেশের টেলিকম বিপ্লবে বঙ্গবন্ধুর অবদান চির অম্লান হয়ে থাকবে। তিনি ডিজিটাল কানেক্টিভিটি প্রসারে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সফলতা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় ড. শাহজাহান মাহমুদ স্যাটেলাইট যুগে বাংলাদেশের প্রবেশ একটি দেশের তথ্য প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক বলে উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী মুজিবশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে শিশু-কিশোর চিত্রাংকণ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।