বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন (Yao Wen) আজ সকালে সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি’র সঙ্গে বাংলাদেশ সচিবালয়ে তাঁর দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাতে বন্ধুপ্রতিম দু’দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় জোরদারকরণের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, নাটেশ্বর ও পানাম সিটি সংস্কার-সংরক্ষণ, বঙ্গবন্ধু অপেরা হাউজ নির্মাণে সহযোগিতাসহ সাংস্কৃতিক অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়।
চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, সংস্কৃতি দু’দেশের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের অন্যতম ভিত্তি। কোভিডের কারণে বিগত ২-৩ বছর যাবৎ সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় তিনি সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম জোরদারকরণের আহবান জানান। রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, গতবছর ২০২২ সালের ০৭ আগস্ট চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালীন সময়ে দু’দেশের মধ্যে ২০২৩-২০২৭ মেয়াদে সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তিনি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীকে আগামী ২৪-২৬ এপ্রিল মেয়াদে এশিয়া মহাদেশের ৩০টি দেশের অংশগ্রহণে চীনের শিয়াংয়ে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন ‘Alliance for Cultural Heritage in Asia (ACHA) শীর্ষক কনফারেন্সে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান। রাষ্ট্রদূত এসময় ২০২১ সালের ২৭-২৮ অক্টোবর মেয়াদে চীনের বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত ‘Asian Dialogue for Cultural Heritage Conservation’ শীর্ষক কনফারেন্সে বাংলাদেশের ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে ACHA সম্মেলনে অংশগ্রহণের বিষয়ে চীনের রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেন। কে এম খালিদ মুন্সিগঞ্জের নাটেশ্বর প্রত্নস্থল পার্ক নির্মাণের পাশাপাশি সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত পানাম সিটির সংস্কার-সংরক্ষণে চীনের সহযোগিতা কামনা করেন। তাছাড়া তিনি সিডনি অপেরা হাউজের আদলে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘বঙ্গবন্ধু অপেরা হাউজ’ নির্মাণেও চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা কামনা করেন।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে মোট ৫০৯টি পুরাকীর্তি বা প্রত্নস্থল রয়েছে। তিনি বলেন, এসব পুরাকীর্তিসমূহের সংস্কার-সংরক্ষণে চীন প্রযুক্তিগত ও কারিগরিভাবে সহযোগিতা করতে পারে। এক্ষেত্রে চীন তাদের প্রত্নতত্ত্ববিদ ও প্রত্ন-বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব সেক্টরে দক্ষ ও অভিজ্ঞ লোক তৈরিতে সহযোগিতা করতে পারে।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বাংলাদেশের পুরাকীর্তিসমূহের সংস্কার-সংরক্ষণে প্রশিক্ষণ প্রদান ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি বাংলা একাডেমি ও চাইনিজ ন্যাশনাল এডমিনিস্ট্রেশন অফ প্রেস এণ্ড পাবলিকেশনের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করেন। প্রতিমন্ত্রী জানান, এ বিষয়ে সামান্য মতভেদ রয়েছে এবং সেটি নিরসন হলে দ্রুত এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।
সাক্ষাৎকালে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কাজী নুরুল ইসলাম ও আয়েশা সিদ্দিকা, ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক কাউন্সিলর Liwen Yue প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।