আগামী দু-একদিনের মধ্যে চট্টগ্রাম ও ঢাকার গ্যাস সংকট দূর হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
রোববার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।
তিনি বলেন, আমাদের দুটি এফএসআরইউ (ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল)। একটি ডকিংয়ের (মেরামত) জন্য আমরা বিদেশে পাঠিয়েছিলাম। এসে কাজ শুরু করার সময় কিছু সমস্যা দেখা গেছে। দ্বিতীয় এফএসআরইউতেও কিছু সমস্যা দেখা গেছে।
আজকের দিনে দুটি এফএসআরইউ-ই চালু আছে। দুটির মধ্যে একটি আবার ডকিংয়ে চলে যাবে। যেটা বিদেশ থেকে এসেছে, সেটি পূর্ণ্যেদমে কাজ শুরু করেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা আশাবাদী, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় যে গ্যাস সংকট, সেটা আগামী দু-একদিনের মধ্যে আরও ভালো পরিস্থিতিতে যাবে। এটা একটা সুখবর। এটা একটা আকস্মিক বিষয়। আমি বলেছিলাম সাময়িক। শীতের সময় বিশেষ করে বাসাবাড়িতে গ্যাসের রান্নাবান্নায় গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়।
এ মুহূর্তে গ্যাসের চাহিদা ৩ হাজার ৮০০ এমএমসিএফ জানিয়ে তিনি বলেন, এখন আমরা দিতে পারি ৩ হাজার ২০০ এমএমসিএফ’র মতো। একটা গ্যাপ আমাদের থেকে যাচ্ছে, বিশেষ করে শিল্প এবং বিদ্যুতের ক্ষেত্রে।
‘বেশ কিছুদিন গ্যাস ছিল না এজন্য কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখতে হয়েছে। এজন্য কিছু স্বল্পতা পাওয়ার প্ল্যান্টে দেখা গেছে। আমরা আশা করছি, এটি আজকালের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।’
নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের শিল্প কারখানাগুলো কোনো গ্যাসই পাচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনটা একটু ধৈর্য ধরতে হবে। কাল থেকে সমাধান হয়ে যাবে।
বাংলাদেশে ৭৫ শতাংশ গ্রাহকই এলপিজি ব্যবহার করে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, শিল্প কারখানা বাদ দিলে আমাদের গ্যাসের গ্রাহক ২০ থেকে ২৫ লাখ। এই গ্রাহকদের আমরা ধীরে ধীরে মিটারের মধ্যে নিয়ে আসছি। এরই মধ্যে সাড়ে চার লাখ মিটার লাগানো হয়েছে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা আগামী তিন বছরের মধ্যে সবার বাসায় গ্যাসের মিটার লাগানো।
অর্থের জন্য গ্যাস মিটার লাগাতে দেরি হচ্ছিল জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, সেই অর্থের ব্যবস্থা হয়ে গেছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, এডিবি এবং জেবি ফাইন্যান্স করছে। এরই মধ্যে জালালাবাদ ৫০ হাজার মিটার লাগানো শুরু করেছে, আড়াই লাখ মিটার কর্ণফুলীতে কাজ শুরু করেছে, ঢাকায় প্রায় সাড়ে চার লাখ মিটার লাগানোর কাজ চলছে।
সবাইকে ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অচিরেই আমরা বাসাবাড়ির গ্যাসের মিটার লাগিয়ে সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন করবো। সেদিকে আমরা যাচ্ছি। আমরা চেষ্টা করছি, আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে সব বাসাবাড়িতে যেন নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস পান, যাতে মিটার পান। এটা আমাদের অনেক আগে থেকেই প্রকল্প। ৫ থেকে ৭ বছর আগে জাইকা থেকে ফান্ড পেয়েছিলাম। এটা চলমান প্রক্রিয়া। পরবর্তীসময়ে মিটার লাগানোর জন্য… প্রায় ২০ লাখ মিটার লাগাতে হবে, প্রত্যেক বাড়িতে যেতে হবে। এ প্রকল্পে এখন আমরা মোটামুটি অর্থের সম্ভাবনা পেয়েছি গত কয়েক মাস আগে। সে সম্ভাবনা অনুযায়ী আমরা কাজ করবো।
বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রায় সাড়ে সাত লাখ অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরপরও অবৈধ লাইন হচ্ছে। অবৈধ লাইনের কারণে বড় এলাকায় গ্যাস প্রাপ্তিতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
বাসাবাড়ির পাইপলাইনের গ্যাস এবং এলপিজির সিলিন্ডারে দামের মধ্যে পার্থক্য নিরসনে বিইআরসিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
প্রিপেইড গ্যাস মিটারের ভাড়া ১০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি আমার জানা নেই। আমি খবর নেবো।