গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে দেশ প্রেমিক সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামা ছাড়া বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, আইনের শাসন বলতে কিছুই অবশিষ্ট নেই। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে তখনকার ছাত্র যুবক, তরুণরা ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ স্বাধীন করেছিল, তেমনি আজকের তরুণ সমাজকেও বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করে দেশে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাহলেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে, জনগণ তার ভোটাধিকার ও আইনের শাসন ফিরে পাবে।
শুক্রবার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বিজয় শোভাযাত্রা শেষে এসব কথা বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
পায়ে হেঁটে হেঁটে দেড় ঘণ্টার এই শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। কেরাণীগঞ্জের জিনজিরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিজয় শোভাযাত্রা শুরু করে উপজেলার কালীগঞ্জ গুদারাঘাটে গিয়ে শেষ হয়।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে বিএনপির এ নেতা বলেন, যে নেত্রী ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে দুই শিশু সন্তান বর্তমানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও প্রয়াত আরফাত রহমান কোকোসহ বন্দী ছিলেন। যে নেত্রী দীর্ঘ নয় বছর আপোসহীনভাবে রাজপথে গণতান্ত্রিক আন্দোলেনের নেতৃত্ব দিয়ে স্বৈরাচার এরশাদের পতন ঘটিয়েছেন। পরে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সংযোজন করেছেন। সেই নেত্রী আজ কেমন আছেন, সবাই জানেন! কেন তিনি চিকিৎসা পাবেন না। রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে তাকে মিথ্যা ভিত্তিহীন মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারা নেওয়া হয়, এখন তিনি হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তার দেশে আর কোনো চিকিৎসা অবশিষ্ট নেই। তাকে বাঁচাতে হলে চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশনেত্রীকে বিদেশ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু একজনের বাধার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। সেই একজন হচ্ছেন শেখ হাসিনা।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আপনাদের প্রস্তুতি নিতে হবে, রাজপথে দুর্বার আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে। যে আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। যে আন্দোলনে গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পান। যে আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি। যে আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারি।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের গয়েশ্বর বলেন, আজ আপনারা সকল বাধা উপেক্ষা করে হাজার হাজার নেতাকর্মী এ শোভাযাত্রায় যোগ দিয়েছেন। আপনাদের বলতে চাই, সামনের বছর বিজয় শোভাযাত্রা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে সাথে নিয়ে করতে চাই। এখান থেকেই সেই যাত্রা শুরু হোক।
কে কাকে ভোট দিবে তা ভাবার সময় এখন নয় উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, বাংলাদেশ কোন পথে যাবে তা রাজপথে ঠিক করতে হবে। নির্যাতন, গুম, খুন যা-ই হোক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও ভোটাধিকার আদায়ে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কর্মসূচি হচ্ছে টেইক ব্যাক বাংলাদেশ-এ কর্মসূচি নিয়ে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
এ শোভাযাত্রায় আরো অংশ নেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী। এছাড়াও বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দিন মাস্টার, মোসাদ্দেদ আলী বাবু, যুবদল নেতা সেলিম চৌধুরীসহ ঢাকা-৩ আসনের বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েক হাজার নেতাকর্মী।