নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান বলেছেন, বিএনপির কর্মসূচিতে কেন গিয়েছিলেন এক সাংবাদিক আমাকে এ প্রশ্ন করেছিলেন। আমি তাকে বলতে চাই, মাসখানেক আগে বিএনপির প্রোগ্রাম হলো, একটা ছেলে মারা গেল। যে ছেলেটা মারা গেছে বিএনপি বলবে বিএনপির কর্মী, আওয়ামীলীগ বলবে আমাদের আত্মীয়, পুলিশ বলবে সাধারণ পথচারী, সাংবাদিকরা ভাগ হয়ে গিয়ে কথা বলবে। সত্য কোনটা, সত্য সে একটা মানুষ, একটা মায়ের সন্তান বাবার সন্তান। সে যে দলই করুক না কেন। সত্য তাকে আর কেউ ফেরত দিতে পারবে না। আর যেহেতু পারবে না তাই কারো মৃত্যু আমরা কামনা করি না। এরকম কাল দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে।
মানুষ মারা গিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, খুনিরা এখন একটা দলের নেতৃত্বে চলে এসেছে। তারা একটা সিন্ডিকেট করতে চায়। তখন আমি একদম একা কেউ জানেনা পুলিশও জানেনা। সাংবাদিকদের কাছে ধরা খেয়েছি। তারা ছবি তুললো। আমাকে তারা জিজ্ঞাসা করলো কেন এসেছি? আমি বলেছি এমনি কারণ কোনো উদ্দেশ্যে না যদি উদ্দেশ্যে যেতাম একা যেতাম না। প্রশ্ন করে যদি আপনার উপর আক্রমন হতো, আমি বললাম মারতো, আমাকে মেরে যদি শান্তি পায় মারতো। আমার উদ্দেশ্য ছিল এখানে যেন কোন ঘটনা ঘটানোর সুযোগ কেউ করতে না পারে। যেই খবর আমরা পেয়েছিলাম সেটি করতে পারে নাই। মিটিং হয়েছে, এটি গণতান্ত্রিক অধিকার তারা করবে। রাজনীতির ভাষা শালীন করতে হবে। আমাকে গালি দেন কিন্তু জাতির পিতা ও জাতির পিতার কন্যাকে নিয়ে কথা বলার সময় অবশ্যই সচেতনতা অবলম্বন করুন।
রবিবার রাতে ফতুল্লার পুর্ব ইসদাইর যুব সংঘের উদ্যোগে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত খেলার পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন এমপি শামীম ওসমান। তিনি বলেন, আমরা অনেক কাজ দ্রুত করতে চেষ্টা করি কিন্তু আমলাতান্ত্রিক, রাজনৈতিক জটিলতা, হিংসা এসব কারণে দ্রুত করা সম্ভব হয় না। ২ বছর আগে নারায়ণগঞ্জের জন্য বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করিয়েছি। ২ বছর ধরে এটার কাগজ এদিক ওদিক ঘোরাফেরা করছে। অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে এসেছি, আগামী সংসদ অধিবেশন আছে সেদিন হয়তো আমার ভাষা আর ঠিক থাকবে না। সেদিন পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে যা বলার বলবো। আমি জানি কিভাবে আদায় করতে হয় সে অভ্যাস আমার আছে। আমি চেয়ে নিয়েছিলাম মেডিকেল কলেজ। অনেকে মেডিকেল কলেজ আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ নিতে চায়। এখন নাকি জমি কিনতে ৩ পার্সেন্ট ব্যবসা হয়। কি একটা ব্যাপার স্যাপার নাকি আছে। আমার বিশ্বাস এই মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও আইটি ইন্সটিটিউটসহ আরো কিছু বড় প্রজেক্ট এখানে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে করবো। একটা ওয়ান স্টপ সার্ভিস এখানে হোক চাই, যেন ঢাকার যেতে না হয় আমাদের। এবার আমি শুধুমাত্র ফতুল্লা এলাকার জন্য ৭০ কোটি টাকা পাশ করিয়েছে রাস্তাঘাট ও ড্রেন নির্মাণের জন্য।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যা চলছে এখন, যেভাবে আকাশে শকুনেরা উড়ছে আমি শামীম ওসমান হিসেবে বাড়তি কিছু দায়িত্ব থাকে আমার উপর। এসব দায়িত্ব পালন করি বলেই আমার উপর বোম ব্লাস্ট হয়, ওয়ান ইলেভেনের সরকার প্রথমে আমাকে টার্গেট করে। বাসায়ও বলি না, শেয়ার করি না। রাত ২/৩/৪ টা পর্যন্ত জেগে থাকি, দেশে বিদেশে কথা বলি। ইনশাআল্লাহ আমরা সবকিছু ওভারকাম করবো। আমি ইলেকশন করি কিনা ভোট করি কিনা ঠিক নাই, বাঁচি কিনা তাও ঠিক নাই।
বিশেষ অতিথি হয়ে উপস্থিত ছিলেন জেলা বোমা হামলায় দু’পা হারানো নারায়ণগঞ্জজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, জেলা মহিলা সংস্থার সভানেত্রী সালমা ওসমান লিপি প্রমুখ।