জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। একের পর এক বিতর্ক—নতুন অফিস, বন্দর কমিটিতে নাম থাকা, হাতিয়ায় গাড়িবহরসহ শোডাউনসহ প্রশ্ন উঠেছে কার গাড়িতে ঘুরছেন হান্নান? এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে দেশে-বিদেশের অ্যাক্টিভিস্টদের নিয়ে পোস্ট দিয়েছেন হান্নান।
শনিবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন আব্দুল হান্নান মাসউদ।
তার পোস্টটি যুগান্তরের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘একটা ইনফরমেশন পেলেন, সত্য ধরে নিয়ে পোস্ট করে দিলেন, মিথ্যাচার বুঝে কয়েক ঘণ্টা পর ডিলিটও করলেন। মাঝ দিয়ে এদেশের ও দেশের বাইরের লাখো মানুষের কাছে ব্যক্তি আব্দুল হান্নান মাসউদ বিতর্কিতভাবে উপস্থাপিত হলো।
৫ আগস্টের পর নিয়মিতই এমন কয়েকজন অ্যাক্টিভিস্টের কর্মকাণ্ড আমাকে হতাশ করেছে। যাদের খুবই দায়িত্বশীল ভাবতাম, তাদের প্রতি হতাশ হচ্ছি।
কয়েকদিন আগে কালের কণ্ঠের বিতর্কিত থাম্বনেইল দেখে, পুরো সাক্ষাৎকার না শুনেই বহু অ্যাক্টিভিস্টকে আমাকে নিয়ে পোস্ট দিতে দেখলাম-যেন কেউ আমাকে সারাজীবনের জন্যে গাড়ি গিফট করে দিয়েছে, অথচ বলেছিলাম হাতিয়ায় থাকাকালীন ব্যবহারের জন্যে হাতিয়ারই একজন ব্যবসায়ী আমাকে ব্যবহার করতে দিয়েছেন।
আপনারা তো অনেক বড় অ্যাক্টিভিস্ট, একটা পোস্ট কিংবা একটা ভিডিও তৈরির আগে পুরো সাক্ষাৎকারটি দেখার ইচ্ছে জাগেনি আপনাদের?
কিছুদিন আগে ইলিয়াস হোসাইন ভাইও পোস্ট দিয়েছিলেন, আমাকে নিয়ে। আমি তুলে ধরেছিলাম কতটা মিথ্যাচার আমাকে নিয়ে! কিন্তু এরপর আজও সেই বিষয় নিয়ে কেউ কেউ লিখে যাচ্ছে।
বনি আমিন স্যার দুই কি তিনদিন বিতর্কিত পোস্ট দিয়ে কয়েকঘণ্টা পর যখন অনুধাবন করতে পারলেন ভুল ইনফরমেশন, তখন নিজের পোস্ট ডিলিট করেছিলেন। কিন্তু মাঝ দিয়ে লাখো মানুষের কাছে ভুল মেসেজ চলে গেল।
জুলকার নাইন সায়ের ভাইও লিখেছিলেন, আমি ফোন দিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছিলাম যে ভাই ভুল মেসেজ পেয়েছেন। সত্যতা যাচাইয়ে ভাইকে অনুরোধও করেছিলাম। কিন্তু আজও ভাইয়ের কাছ থেকে রিপোর্ট পাইনি।
সবমিলিয়ে আপনাদের দেশ-বিদেশের সব অ্যাক্টিভিস্টদের অনুরোধ থাকবে অন্তত যেকোন বিষয়ে ফেসবুকে পোস্টের আগে আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়েন। তাহলে কিছুটা হলেও আপনারা সত্যের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। এটা না হলে, আসলে আমাদের নতুনদের জন্যে আপনারাই রাজনীতিটা কঠিন করে তুলবেন।
আরেকটা বিষয় আপনারা প্রায়শই বলেন, পাঁচ আগস্টের আগে কেন কেউ আমাকে সহযোগিতা করল না, ব্যবহারের জন্যে গাড়ি দিল না। আরেহ ভাই, পাঁচ তারিখের আগে আপনাদের অ্যাক্টিভিস্টদেরও তো আমি হান্নান মাসউদকে নিয়ে ৫ আগস্টের আগে মাথাব্যথা ছিল না, একলাইন লেখা তো দূরের কথা। কিন্তু এখন তো পান থেকে চুন খসলেই লিখতেছেন।
এর কারণ তো পাঁচই আগস্ট-ই। পাঁচ আগস্টের পর আসলেই অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে। অনেক অনেক মানুষের যেমন শত্রু হয়েছি, তেমনি হাজারো মানুষের ভরসা ও বিশ্বাসের জায়গা পেয়েছি। পরিবর্তন তো দেখবেনই। জাস্ট মেনে নেওয়ার মানসিকতাটা চাই।’