আজ থেকে ৯ বছর আগে নিখোঁজ হন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী। এ ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে বরাবরই দায়ী করে আসছে বিএনপি। তবে এবার ভিন্ন এক কথা বললেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি জানান, ইলিয়াস আলী ‘গুমে’র নেপথ্যে সরকার নয়, বিএনপির লোকই রয়েছে।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে ভার্চুয়াল সভায় তিনি একথা বলেন। ঢাকাস্থ সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী সংহতি সম্মেলনীর উদ্যোগে নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর সন্ধানের দাবিতে এই ভার্চুয়াল সভা হয়।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব যে ভুলন্ঠিত হতে যাচ্ছে এটার জ্বলন্ত প্রমাণ হলো ইলিয়াস আলীর গুম। আমি জানি, বাংলাদেশ সরকার বা আওয়ামী লীগ সরকার ইলিয়াসকে গুম করে নাই। কিন্তু গুমটা করল কে? এই সরকারের কাছে আমি এটা জানতে চাই।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আব্বাস বলেন, ‘ইলিয়াস আলী গুমের নেপথ্যে আমাদের দলে যারা রয়েছে তাদের চিহ্নিত করা দরকার, তাদের সবাই জানেন।’
তিনি বলেন, ‘ইলিয়াস গুম হওয়ার আগের রাতে দলীয় অফিসে কোনো এক ব্যক্তির সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয় মারাত্মক রকমের। তখন ইলিয়াস খুব গালিগালাজ করেছিলেন তাকে। সেই যে পেছন থেকে দংশন করা সাপগুলো, আমার দলে এখনো রয়ে গেছে। যদি এদের দল থেকে বিতাড়িত না করেন, তাহলে কোনো পরিস্থিতিতেই দল সামনে এগোতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘একজন জলজ্যান্ত তাজা রাজনৈতিক নেতা গুম হয়ে গেলো দেশের অভ্যন্তর থেকে, আমাদের একজন নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকে দেশ থেকে পাচার করে নিয়ে গেলো, আমাদের চৌধুরী আলমকে গুম করে দেয়া হলো, আমাদের কত ছেলেকে গুম করে দেয়া হলো, আমি বুঝলাম এই সরকার করে না। করল কারা? আমি বলতে চাই, যারা করেছে তারা এদেশের স্বাধীনতা চায় না, তারা এদেশটার স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব থাকতে দেবে না।’
বিভিন্ন থানায় সম্প্রতি যে সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে তার সমালোচনা করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘যেখানে পুলিশ জনগণকে সুরক্ষা দেবে। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখবে সেখানে পুলিশের সুরক্ষা আমার ভাবতেই আশ্চর্য লাগে। পুলিশকে কে আক্রমণ করতে যাবে? বরং পুলিশের অত্যাচারে আমরা পাগল হয়ে গেলাম। এই ঘুম স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ধ্বংসের লক্ষণ।’
জাতীয়তাবাদী যুব দলের সাবেক সহ-সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, জহিরউদ্দিন স্বপন, কামরুজ্জামান রতন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল এবং নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার বনানী থেকে গাড়ি চালক আনসার আলীসহ নিখোঁজ হন ইলিয়াস আলী।