সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
বুধবার (৭ জুলাই) বিকালে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিন এই অভিযোগ করেন। খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘গত ১২ বছর যারা ফ্যাসিবাদী কায়দায় ক্ষমতায় টিকে আছে, শুধু ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য তারা এদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার ৫০ বছরের ইতিহাসকে সম্পূর্ণভাবে বিকৃত করে জনগণ ও এই প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করছে।’
আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের তাদের ত্যাগ, তাদের সাহসিকতাকে আমরা বার বার শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে চাই এবং তাদের সেই প্রেরণা নিয়ে আমরা একটি সুখী সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক, স্বনির্ভর, স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়তে চাই, এটাই হোক আমাদের শপথ।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা যখন প্রকৃত ইতিহাসের কথা বলি তখন আওয়ামী লীগের কাছ থেকে বিরূপ প্রতিক্রিয়া আসে। কারণ তাদের গায়ে জ্বালা ধরে যায়। যদি মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস নতুন প্রজন্ম জানে, যদি ৫০ বছরের স্বাধীনতার ইতিহাস জানে আওয়ামী লীগের এদেশে রাজনীতি করার কোনো ক্ষেত্র থাকবে না। আওয়ামী লীগের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। সেজন্য তারা মুক্তিযুদ্ধে ইতিহাসকে বিকৃত করছে।’
‘বিএনপি যেহেতু মুক্তিযুদ্ধের ঘোষকের দল, মুক্তিযোদ্ধাদের দল, যেহেতু গণতন্ত্রের পক্ষে দল, যেহেতু আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন। সেজন্য বিএনপির এটা দায়িত্ব প্রকৃত ইতিহাসকে সামনে তুলে এনে নতুন ভবিষ্যত সৃষ্টি করার জন্য আজকের প্রজন্মকে পথ দেখানো।’
এ সময় জেডফোর্সের কমান্ডার জিয়াউর রহমানসহ এই বিগ্রেডের সকল সেনা কর্মকর্তা, সৈনিক, মুক্তিযোদ্ধাসহ দেশের জন্য জীবন উতসর্গকারীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান তিনি।
জেড ফোর্সের অন্যান্য সেনা কর্মকর্তা অলি আহমেদ, সাদেক হোসেন, আবদুল হালিম, হুমায়ুন হাই, মইনুল হোসেন চৌধুরী, জিয়াউদ্দিন, সাফায়েত জামিল, আবু জাফর মো. আমিনুল হক, বজলুল গনি পাটোয়ারি, মাহবুবুর রহমান, হাফিজ উদ্দিন, আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, শমসের মবিন চৌধুরী, মহসিন উদ্দিন আহমেদ, আশরাফুল আলম, আনোয়ার হোসেন, আকবর হোসেন, মহসিন উদ্দিন, এসআইএম নুরুন্নবী খান, খালিকুজ্জামান চৌধুরী, মোদাচ্ছের হোসেন খান, মাহবুবুল আলম, ওয়াকার হাসান প্রমুখের নামও স্মরণ করেন খন্দকার মোশাররফ।
তিনি ক্ষমতাসীন দলের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আজকে যারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছেন, ফ্যাসিবাদী কায়দায় দেশ চালাচ্ছেন, আরও ক্ষমতায় থাকার জন্য ইতিহাসকে বিকৃত করছেন। জিয়াউর রহমানকে পাকিস্তানের চর বলছেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না বলেছেন। যদি তাই হয় এই জেড ফোর্সের কমান্ডার জিয়াউর রহমানের অধীনে যারা বিভিন্ন পদকে ভুষিত হয়েছিলেন, তারাও কি পাকিস্তানের চর ছিল কি-না, তা এই সরকারকে জনগণের কাছে পরিষ্কারভাবে বলতে হবে।’
বিএনপির স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা কমিটির উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধে জেড ফোর্স গঠন উপলক্ষে এই আলোচনার আয়োজন করা হয়।
দলের স্বাধীনতা সূবর্ণ জয়ন্তী মুক্তিযোদ্ধা সন্মাননা কমিটির আহ্বায়ক ব্যারিস্টার অবসরপ্রাপ্ত মেজর শাহজাহান ওমর বীর উত্তমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল জয়নাল আবেদীনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আব্দুস সালাম, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান অবসপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।