এদেশে জঙ্গিদের তীর্থস্থান বানিয়েছেন বিএনপি। আয়নাঘর নাকি আওয়ামীলীগ তৈরি করছেন। বিএনপি প্রায় বলে, ২০০৭ সালে তারেক রহমানকে অত্যাচার করা হয়েছে আয়নাঘরে। সেই সময়ে তো বিএনপি সমর্থিত সেনাশাসক ছিলেন। তার মানে পরোক্ষভাবে আয়না ঘরের সৃষ্টি বিএনপি করেছেন।
বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আইইবি সদর দফতরস্থ আইইবি সেমিনার হলে আজ (২৮ আগষ্ট ২০২২ খ্রি., রবিবার) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এবং ১৫ আগষ্টের সকল শহিদদের স্মরণে ‘আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এই সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৫ আগষ্টের হত্যাকাণ্ড ক্ষমতা দখলের হত্যাকাণ্ড ছিল না। ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র। বিদেশিরা এখনো বলেন, বাঙালি জাতিকে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আর বিশ্বাস করা যায় না। বঙ্গবন্ধু একজন বিশাল মাপের নেতা ছিলেন। আমরা উনাকে যথাযথ মূল্যায়ন করতে পারিনি।
মাহবুব উল হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধু একজন বিশ্ববন্ধু ছিলেন। আমরা দুর্ভাগা যে বঙ্গবন্ধুকে আমরা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারিনি। পঁচাত্তরের সকল ঘুনীদের ফাঁসি নিশ্চিত করা গেলে এই রকম হত্যাকান্ডের পুনারাবৃত্তি হতো না।
তিনি আরও বলেন, ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় বিএনপি রাষ্ট্র যন্ত্র ব্যবহার করেছেন। বাংলাদেশের রাজনীতিকে ধ্বংস করেছেন। তখন এই হামলার মামলাও নেননি সরকার৷ কি নিষ্ঠুর, অমানবিক হলে এই ঘটনা ঘটাতে পারেন। সেই ঘটনায় পাকিস্তান দূতাবাস জড়িত ছিল।
কারন ১৯৭১ সালে জামাত ছিল এদেশে পাকিস্তানের সৈনিক। আর সেই সৈনিকদের নিয়েই বিএনপি রাজনীতি করছেন৷ বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাজনীতি করার চেষ্টা বিএনপিই করে। ১৫ আগস্ট, ২১ আগষ্ট সকল হত্যাকান্ডের জন্য দায়ী বিএনপি এবং জামাত। সেই হত্যাকান্ডের বিচার করে বাংলাদেশকে কলংকমুক্ত করতে হবে৷
জিয়াউর রহমান প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মূল চক্রান্তকারী যদি না হতো তাহলে কেন ইনডেমনিটি আইন বাতিল করেছেন? জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা দাবি করলেও উনিই মুক্তিযুদ্ধের সকল চিহ্ন নিশ্চিহ্ন করেছেন। জামাত ইসলামের আমির গোলাম আযমকে এই দেশের রাজনীতিতে স্থান করে দিয়েছেন।আর বিএনপি তা অব্যহতি রেখেছে’।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু সারা জীবনই কারাগারে কাটিয়েছেন৷ বঙ্গবন্ধুর পরিবার, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবস সারা জীবনই কষ্টে কাটিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তনয় সজিব ওয়াজেদ জয় ও ১৯৭১ এর যুদ্ধের সময় জন্ম গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর পুরো জীবনীই সংগ্রাম, ত্যাগে কাটিয়েছেন। সর্বশেষে নিজের এবং পুরো পরিবার ঘাতকদের হাতে প্রাণ দিয়ে প্রমান করেছেন, বঙ্গবন্ধুর মত ত্যাগী নেতা পৃথিবীতে কম দেখা যায়।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং আইইবির সাবেক প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, স্বাধীনতা বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন যা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সাড়ে তিন বছরে যে কাজ করেছেন তা আগামী ভবিষ্যৎ বিনির্মানেও ভূমিকা রাখছে। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা দীর্ঘ চৌদ্দ বছর দেশ শাসন করে অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছেন। আগামীর যেকোন আন্দোলনে প্রকৌশলীরা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার পাশেই থাকবে৷
বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. ইঞ্জিনিয়ার এম. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ইঞ্জিনিয়ার খায়রুল বাসারের সঞ্চালনায় বক্তব্য প্রদান করেন বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. নুরুজ্জামান, আইইবির প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. নূরুল হুদা, প্রকৌশলী শাহাদাৎ হোসেন শীবলু, এস এম মঞ্জুরুল হক, রনক আহসান, মনির হোসেন, ওয়ালিউল্লাহ শিকদার, আবুল কালাম হাজারী, শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন, মোঃ নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সহ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হোসাইনসহ বিভিন্ন সরকারি/আধা-সরকারি/বেসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের প্রকৌশলীবৃন্দ।