জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নির্বাচন কমিশনকে রাবার ষ্ট্যাম্প বানিয়েছে। সাধারন মানুষ যদি সঠিকভাবে প্রতিনিধি নির্বাচন করতে না পারে তাহলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় না, জবাবদিহিতা থাকে না। দেশের মানুষ চায় একদিনের জন্য হলেও ভোটের মাধ্যমে তার প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। তিনি বলেন, ১৯৯১ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে প্রথমে ভোটার বিহীন নির্বাচন, পরে খুনোখুনির নির্বাচন এখন হচ্ছে ফলাফল পরিবর্তনের নির্বাচন কায়েম করেছে। মানুষ ভোট দেয় একজনকে, ফলাফলে ঘোষণা হয় অন্যজনের নাম।
মামলা করলে ৫ বছরে মামলার রেজাল্ট আসেনা, কিন্তু মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তিনি বলেন, রাবার ষ্ট্যাম্প নির্বাচন কমিশন হলে কেউ আর নির্বাচনে যাবে না, রাজনৈকি দল থাকবে না, দেশে রাজনীতিও থাকবে না। নির্বাচন নিয়ে জনগনের আস্থা তলানীতে পৌঁছেছে। তিনি বলেন, চলমান নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে একদল, আবার নৌকার সমর্থকরাই নৌকা ডুবিয়ে দিচ্ছে।
আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবি মোঃ নজরুল ইসলাম খান এর নেতৃত্বে কয়েকজন আইনজীবি জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এর হাতে ফুল দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আলম রুবেল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত যোগদান অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ পদত্যাগ করার পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতৃত্বে দেশে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আর গণতন্ত্র নিপাত গেছে। তিনি বলেন, একটি দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে দেশকে দুর্ণীতিতে চ্যাম্পিয়ণ করেছে পরবর্তীতে অন্যদলটি রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে পরপর চারবার দেশকে দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ণ করেছে। আবার একটি দল বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ড শুরু করেছে, অন্যদলটি বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ডে দেশকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছে। একটি দল ভোট ডাকাতি শুরু করেছে, অন্যদল ক্ষমতায় এসে নির্বাচন কমিশনকে রাবার ষ্ট্যাম্প বানিয়েছে। এমন একটি দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়নি, এমন দেশের জন্য বীর শহীদরা জীবন দেয়নি, এমন দেশের জন্য মা-বোনেরা সম্ভ্রম দেয়নি।
দেশের মানুষ এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চায়। দেশের মানুষ আর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে চায় না, দেশের মানুষ আবারো জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়। জুলুম, দুর্নীতি ও দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকে প্রত্যাশা করছে, তাই প্রতিদিন বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ জাতীয় পার্টির পতাকাতলে যোগ দিচ্ছেন।
এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, রাজনীতিতে সবার আগে দেশের স্বার্থ বিবেচনা করতে হবে, তারপর দলের স্বার্থ এবং সব শেষে বিবেচিত হবে ব্যক্তিগত ইজ্জত ও সম্মানের বিষয়টি। এখন সবকিছু উল্টে গেছে যারা নিজের স্বার্থে লুটপাট করে, যারা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে তাদেরই মাথায় তুলে রাখা হচ্ছে।
এরপর লুটপাট ও শক্তি প্রদর্শনের জন্য দলের স্বার্থ দেখা হয়, সবশেষে দেখা হয় দেশের স্বার্থ। স্বাধীনতার আগে দেশের সম্পদ শুধু পশ্চিম পাকিস্তানে পাচার হতো, এখন দেশের সম্পদ সারা বিশে^ পাচার হচ্ছে। দেশের মানুষ এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চায়, দেশের মানুষকে মুক্তি দিতেই আমাদের রাজনীতি।
এসময় জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব ও প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিপরীতে জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়। তাই সচেতন মহল বিশ্বাস ও ভালোবাসা নিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন। দেশের মানুষ বিশ্বাস করে জাতীয় পার্টি সরকার গঠন করলেই তাদের সকল অধিকার নিশ্চিত হবে। দেশ থেকে দুর্ণীতি ও দুঃশাসন চির বিদায় দিতে জাতীয় পার্টির বিকল্প নেই।
এডভোকেট মোঃ নজরুল ইসলাম খানের জাতীয় পার্টিতে যোগদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা জহিরুল আলম রুবেল, পিরোজপুর জেলা জাতীয় পার্টির আহয়ক মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, যোগদানকারী এডভোকেট মোঃ নজরুল ইসলাম খান। উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, নাজমা আখতার এমপি, ভাইস চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম শরু চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব ফকরুল আহসান শাহজাদা, ইকবাল হোসেন তাপস, মোঃ বেলাল হোসেন। সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মোঃ হুমায়ুন খান, আনোয়ার হোসেন তোতা, এমএ রাজ্জাক খান, এডভোকেট খন্দকার ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ, যুগ্ম সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মোঃ নজরুল ইসলাম, নুরুল হক নুরু, আক্তার হোসেন দেওয়ান, এসএম সুবহান, মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, শেখ মোহাম্মদ শান্ত, মোঃ ইব্রাহীম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা সামছুল হুদা মিয়া, ফজলে এলাহী সোহাগ, হুমায়ুন কবীর শাওন, তাসলিমা আকবর, সাফিয়া পারভীন, নুরুজ্জামান, জিয়াউর রহমান বিপুল, রেজাউল করিম রেজা, জয়নাল আবেদীন, মোঃ কাদির, হুমায়ুন কবীর মজুমদার, মো: নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক মো: জুলফিকার শরীফ, নুরুজ্জামান লিটন, বশির আহমেদ, মিজানুর রহমান দুলাল।