ভূমি সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ বলেছেন অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর (এলডি ট্যাক্স/ জমির খাজনা) ব্যবস্থা ভূমি সেক্টরে দুর্নীতি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর দেওয়ার পর দাখিলা (রশিদ) সংগ্রহ করতে গিয়ে এখন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে না জনগণের। অনলাইনে এলডি ট্যাক্স দেওয়ার সাথে সাথে অনলাইনেই দাখিলা পাওয়া যাচ্ছে।
আজ রোববার সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিভাগীয় কমিশনারদের সাথে সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করার সময় ভূমি সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ এই কথা বলেন।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে সম্প্রতি পটুয়াখালীতে পাইলটিং শুরু হওয়া বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে (বিডিএস) বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। এই জরিপে যেমন সময় কম লাগবে, তেমনি দুর্নীতির সম্ভাবনাও কমবে। ডিজিটাল ম্যাপ প্রস্তুত করার পর খসড়া খতিয়ান প্রস্তুত ও প্রদানের কাজও ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা হবে। বিডিএস-এ প্রস্তুত করা মানচিত্রের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হল স্মার্ট ম্যাপ, যেখান থেকে ম্যাপে ক্লিক করেই সংশ্লিষ্ট প্লটের মালিকানার তথ্য পাওয়া যাবে। “আমি বিশ্বাস করি বিডিএস বাংলাদেশে জমি সংক্রান্ত মামলা ৬০ শতাংশ কমিয়ে দেবে”- তিনি এসময় যোগ করেন।
ভূমি সচিব স্থানীয় পর্যায়ে অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদানে উৎসাহিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভাগীয় কমিশনারদের আহ্বান জানান। এছাড়াও, ই-নামজারি আবেদনের সময় সরকারের কাছে সংরক্ষিত দলিলাদি/কাগজ-পত্রাদি পুনরায় যেন আবেদনকারী থেকে চাওয়া না হয় সে ব্যাপারে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে বিভাগীয় কমিশনারদের নির্দেশ প্রদান করেন সচিব। তিনি মাঠ পর্যায়ের ভূমি অফিসের কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের জন্য রিপোর্টিং ড্যাশবোর্ড নিয়মিত পর্যালোচনা করার অনুরোধ জানান।
সম্মেলনে প্রদর্শিত এক সচিত্র প্রদর্শনিতে (PowerPoint presentation) দেখা যায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পর্যালোচনা অনুযায়ী, অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ে ঢাকা বিভাগ, কম সময়ে ই-নামজারি নিষ্পত্তিতে রংপুর বিভাগ এবং ডাকযোগে খতিয়ান ও ম্যাপ সরবরাহে খুলনা বিভাগ অন্যান্য বিভাগের চেয়ে এগিয়ে আছে। ভূমি সচিব আশা প্রকাশ করেন অন্যান্য বিভাগও বিভিন্ন ভূমি সেবা প্রদানে দ্রুত অগ্রগতি লাভ করবে।
আজ প্রতিটি বিভাগে প্রাথমিকভাবে একটি ভূমিসেবা কিয়স্ক (kiosk) সরবরাহের ঘোষণা দেন ভূমিসচিব। কিয়স্ক বিভিন্ন জনবহুল এলাকা যেমন স্টেশন, বিপণী-বিতান, অফিস কমপ্লেক্স ইত্যাদি জায়গায় স্থাপন করা হবে। নাগরিক প্রয়োজনীয় ফি এর বিনিময়ে প্রয়োজনীয় আবেদন ও জমির খতিয়ান প্রিন্ট করতে পারবেন।
অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর, ডিজিটাল রেকর্ড রুম, আন্ত জেলা ভূমি বিরোধ, ভূমি অফিস নির্মাণ, জনবল নিয়োগ সহ প্রভৃতি ভূমি বিষয়ক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় সমন্বয় সভায়।
ভূমি আপীল বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান সোলেমান খান, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন-সহ বাংলাদেশের সকল বিভাগীয় কমিশনার ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিববৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।