১৬ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিজয় শোভাযাত্রা করে ব্যাপক জনসমাগম ঘটাতে চায় বিএনপি। শোভাযাত্রার অনুমতি চেয়ে ইতোমধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কার্যালয়ে (ডিএমপি) আবেদন করেছে দলটি।
২৮ অক্টোবর সংঘর্ষের পর আইনশৃংখলা বাহিনীর হামলায় দলের মহাসমাবেশ ভেস্তে যাওয়ার একদিন পর ২৯ অক্টোবর থেকে তালাবন্ধ নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও তালা খোলা হয়নি। নেতাকর্মীদের সেখানে যেতেও দেখা যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকে আত্মগোপনে রয়েছেন। কেউ কেউ আত্মগোপনে থেকেই অবরোধ-হরতাল কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।
ক্ষমতাসীন দল ও প্রশাসনের পক্ষে বলা হচ্ছে, নয়াপল্টন কার্যালয়ে যেতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাধা নেই। তাই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে থেকেও ১৬ ডিসেম্বর র্যালি বের করার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির।
একটি সূত্রে জানা গেছে, টানা হরতাল-অবরোধের বাইরে আন্দোলনে ভিন্নতা আনতে চাইছে বিএনপি। ১৬ ডিসেম্বর শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে সেই অভিযাত্রা শুরু করতে চায় দলটি।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, আত্মগোপনে থাকা দলের নেতাকর্মীরা শোভাযাত্রায় যোগ দেবেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা বিজয় দিবসের শোভাযাত্রা বের করব। সোমবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু জানান, শোভাযাত্রার অনুমতি পেলে সর্বস্তরের মানুষ সমাবেশে যোগ দেবেন।
সেই পরিকল্পনা মোতাবেক শোভাযাত্রার অনুমতি চাইতে বুধবার বিকাল ৪টার পর ডিএমপি কমিশনার অফিসে যায় বিএনপির প্রতিনিধি দলটি।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান।
গত ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে সারাদেশে মানববন্ধন করেছে বিএনপি। মানববন্ধন কর্মসূচিতে দলের মধ্যম সারির বেশ কয়েকজন নেতা যোগ দিলেও জ্যেষ্ঠ নেতাদের উপস্থিতি ছিল কম।
ওই দিন রাজধানীতে মানববন্ধন চলাকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভও করেন বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিজয় দিবসে কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্ধান্তহীনতায় ছিলেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক ‘বিজয় মিছিল’ বের করার ঘোষণায় বিএনপি ১৬ ডিসেম্বর শোভাযাত্রা করার পরিকল্পনা করে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শোভাযাত্রায় ঢাকা ও এর আশপাশের জেলা থেকে দলের নেতাকর্মীদের আসতে বলা হবে। র্যালি হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ।
এদিকে কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা অবরোধ-হরতাল কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারছেন না। মূলত গ্রেফতার আতঙ্কে ভুগছেন নেতারা। এমতাবস্থায় তৃণমূল নেতাকর্মীরা কিছুটা হতাশা প্রকাশ করছেন। তারা চাইছেন নেতারা কর্মসূচিগুলোতে নেতৃত্ব দিক।
জানা গেছে, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরু হবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে। ওই দিন থেকে বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনের পরবর্তী ধাপ শুরু হবে।
১৬ জানুয়ারির শোভাযাচ্ছাকে ওই আন্দোলনের ওয়ার্মআপ হিসেবে দেখছে বিএনপির হাইকমান্ড।