পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম এমপি বলেছেন, বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে এই ভূখণ্ড কোনোকালে বাঙালি শাসন করতে পারেনি। দীর্ঘ শোষণ, বঞ্চনা ও পরাধীনতার ইতিহাসে মাঝেমধ্যে তিতুমীর, সূর্যসেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার প্রমুখ স্বাধীনতা সংগ্রামী-বিপ্লবীদের মাধ্যমে স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলন দানা বাঁধলেও তারা কেউ চূড়ান্ত বিজয় তথা স্বাধীনতা এনে দিতে পারেননি। একমাত্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি জাতি বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জন করেছে। তার নেতৃত্বে বাঙালি জাতির হাজার বছরের পরাধীনতার অবসান ঘটেছে।
শুধুমাত্র জাতির পিতার নেতৃত্বে ও তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। কোনও মেজরের আহ্বানে এদেশ স্বাধীন হয়নি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে অর্জিত সবুজের বুকে লাল পতাকার মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই।
আজ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শরীয়তপুরের নড়িয়ায় বি. এল. সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, আপনাদের জন্য দেশ স্বাধীন হয়েছে । আপনারা জাতির বীর সন্তান। আপনাদের জন্য আমরা গর্বিত। তাই আপনাদের কাছে আমরা চিরঋণী আপনাদের এই ঋণ কখনো শোধ করা যাবে না। যতদিন বাংলাদেশ ও সবুজের বুকে লাল পতাকা থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধুর সাথে বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম চির অম্লান হয়ে থাকবে।
এনামুল হক শামীম বলেন, বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রধান শক্তির উৎস ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে তিনি ছিলেন সর্বদা বজ কণ্ঠ। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের তার ভাষণ গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে, স্বাধিকারের পক্ষে, স্বাধীনতার পক্ষে এক ঐতিহাসিক দলিল। ওই ভাষণ একটি জাতিকে জাগ্রত করেছে, একবিন্দুতে মিলিত করেছে। এমন ঘটনা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলনে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর নাম চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এ কথাই যেন ব্যক্ত হয়েছে অন্নদাশঙ্কর রায়ের এই শব্দগুচ্ছে- ‘যতদিন রবে পদ্মা-যমুনা গৌরী-মেঘনা বহমান/ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।’
উপমন্ত্রী বলেন, হ্যামিলনের বংশীবাদকের মতো বঙ্গবন্ধু সমগ্র জাতিকে একসূত্রে গ্রথিত করেন। তিনি ছিলেন রাজনীতির কবি। বঙ্গবন্ধুর আজীবন স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা। তার সেই স্বপ্ন আজও বাস্তবায়ন হয়নি। তাই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে, শোষণমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতেই বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কোনো সরকার প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে কিছু করেননি। জননেত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা, ভ্রমণ এবং ভাতা বাড়ানোর পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের ব্যবস্থা করেছেন। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া তাদের কেউ সম্মান করেননি, অথচ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এটা প্রাপ্য ছিল। মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে গৃহহীন, মৃত ও দরিদ্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনা পরিবারকে ৩০ হাজার বাড়ি উপহার দিচ্ছে। এটা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা। তাই জনগণ আগামী নির্বাচনেও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকেই পঞ্চমবারের মতো ক্ষমতায় আনবে।
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদউজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, নড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম ইসমাইল হক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য জহির সিকদার, নড়িয়া পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান খোকন, উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান জাকির বেপারী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মজিবর রহমান খান প্রমূখ।