তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সন্ত্রাস ও রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে রাজনীতি করা দল বিএনপি যাতে রাজপথ দখল করতে না পারে সেজন্য যুব মহিলা লীগকে অতন্দ্র প্রহরায় থাকতে হবে।’
শুক্রবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শহীদ শেখ রাসেল দিবস ও ফিলিস্তিনি গণহত্যার প্রতিবাদে যুব মহিলা লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
শহীদ শেখ রাসেলের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ইতিহাস স্মরণ করে বলেন, ‘১০ বছরের শিশু শেখ রাসেল এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান কুশীলব ছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। যে খুনের মাধ্যমে তাদের উত্থান, সেই খুনের রাজনীতি তারা এখনও অব্যাহত রেখেছে। সন্ত্রাস ও মানুষের রক্তের ওপর তাদের রাজনীতি।’
তিনি বলেন, ‘২০০৪ সালে এইখানে, এই বঙ্গবন্ধু এভিনিউ অফিসের সামনে খালেদা জিয়ার সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় তারেক রহমানের পরিচালনায় বৃষ্টির মতো গ্রেনেড ছুঁড়ে তারা জননেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আমাদের ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত, ৫০০ জন আহত হয়েছিল, আমার শরীরে এখনো ৪০টি স্প্রিন্টার।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপি বলেছিল অক্টোবর মাসে নাকি ফাইনাল খেলা। তারা বলেছিল খালেদা জিয়াকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দিতে হবে। সেটিও হয় নাই। অর্থাৎ তারা সেমিফাইনালেই হেরে গেছে। তাদের সাথে তো আর ফাইনাল খেলা হয় না। আওয়ামী লীগ তাদের সাথে খেলবে না। তারা যুব মহিলা লীগের সাথে খেলুক।’
ফিলিস্তিন পরিস্থিতি নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ফিলিস্তিনে হাসপাতালে হামলায় ৮শ’ মানুষ এবং শতশত শিশু মৃত্যুবরণ করেছে। তাদেরকে কবর দেওয়ার জায়গা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে একদিনের শোক ঘোষণা করেছেন, শেখ রাসেল দিবসেও এই বর্বরতার প্রতিবাদ করেছেন। সমস্ত পৃথিবী প্রতিবাদ করেছে, ফ্রান্স থেকে শুরু করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও সেই হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে। শুধু বিএনপি এবং তার মিত্র ‘‘ইসলাম ইসলাম বলা’’ জামায়াত নিশ্চুপ। একটি বৃহৎ শক্তি নাখোশ হতে পারে বলে নিরব থেকে বিএনপি কার্যত এই বর্বরতা, এই শিশুহত্যার পক্ষ অবলম্বন করেছে, ইসরাইলের পক্ষ অবলম্বন করেছে। জনগণ এদের চিনে রাখছে।’
বিএনপির নির্যাতনের মধ্যে যুব মহিলা লীগের জন্ম উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, পুলিশের ছুঁড়ে দেওয়া টিয়ার গ্যাসের সেল তুলে নিয়ে ছুঁড়ে ফেরত দেওয়ার দলের নাম যুব মহিলা লীগ। তিনি বলেন, ‘আমরা রাজপথের দল, রাজপথে আমাদের জন্ম হয়েছে, সুতরাং আমরা জানি, রাজপথে কিভাবে কাকে মোকাবিলা করতে হয়। আমরা বিএনপিকে রাজপথ দখল করতে দেবো না। যুব মহিলা লীগকে বলবো রাজপথে অতন্দ্র প্রহরীর মতো থাকার জন্য।’
যুব মহিলা লীগ সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজির সভাপতিত্বে সভায় আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদবিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি প্রমুখ। বক্তৃতাপর্ব শেষে মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের হাতে মেধাবৃত্তি সনদ তুলে দেন এবং ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে যুব মহিলা লীগের মিছিলে অংশ নেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তথ্যমন্ত্রী
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেসক্লাবের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে যোগ দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তসহ সংস্থার বর্তমান ও সাবেক নেতা ও সদস্যদের নিয়ে কেক কেটে মন্ত্রী দিবসটি উদযাপনে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় প্রেসক্লাবের ৩১ তলায় বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্সের ভিত্তিফলক উন্মোচনের কথা স্মরণ করে তথ্যমন্ত্রী জাতীয় প্রেসক্লাবের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।
এ সময় তিনি বলেন, আমাদের সরকারের লক্ষ্য দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে একটি মানবিক কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করা। সাংবাদিকরা রাষ্ট্র ও সমাজকে পথ দেখাতে পারে, মানুষের তৃতীয় নয়ন উন্মোচন করতে পারে। তাই দেশকে এগিয়ে নিতে, মানবিক কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অতীব গুরুত্বপূর্ণ।