বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে যে জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক ছিলেন না। অনেকে বলেন, তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেননি। তিনি পাকিস্তানের অনুচর ছিলেন। এভাবে তাকে একটা খলনায়কে পরিণত করতে চায় আওয়ামী লীগ।
আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের উদ্যোগ ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান : ইতিহাসের ধ্রুবতারা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বইটিতে ১৪ জন শিক্ষকের ও জিয়াউর রহমানের নিজের লেখা তিনটি প্রবন্ধ স্থান পেয়েছে। রয়েছে জিয়া পরিবারের ছবিসংবলিত অ্যালবাম। বইটি পাওয়া যাবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ষষ্ঠতলায় জিয়া স্মৃতি পাঠাগারে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে শিশুদের শেখানো হয় যে জিয়াউর রহমান হচ্ছেন কিলার। শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার সঙ্গে নাকি জিয়াউর রহমান জড়িত। একথা সব জায়গায় বলা হয়। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন যে কর্মী সবাই একই কথা বলেন। ওটাকে আমাদের কাউন্টার দিতে হবে। আমরা যারা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করি, শহীদ জিয়ার আদর্শে বিশ্বাস করি। এটা বোঝাতে হবে যে এটা তো সঠিক নয়ই, বরং উল্টোটা মিথ্যাটা তারা বলছে। কেন বলছে, কী কারণে বলছে, এটাও আমাদের বুঝতে হবে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যে যুদ্ধ হয়েছে, রেসকোর্সে যে অস্ত্র সমর্পণ হয়েছে সেখানে কারা কারা ছিল? আমরা যারা ইতিহাস পড়ি তারা জানি, আমাদের যে সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানী, তিনিই ছিলেন না। অথচ (ভারতের) আর্মির কাছে সারেন্ডার করেছে। এ বিষয়গুলো জানা দরকার। কেন কী কারণে তিনি উপস্থিত হতে পারলেন না, কেন তাকে উপস্থিত হতে দেওয়া হলো না। ‘৭৫ সালের পরে কেন কী কারণে এত বড় একটা রাজনৈতিক দল, একজন অবিসংবাদিত নেতা, কী কারণে অতিদ্রুত এ দেশের মানুষের আস্থা হারালেন- এ জিনিসগুলো বোঝা দরকার, জানা দরকার।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমি কখনো কাউকে ছোট করতে চাই না। যার যেটা পাওনা আছে সেটা তাকে দিতে হবে। পাওনাটা আছে যার, যিনি যুদ্ধ শুরু করলেন, অবস্থা পাল্টে দিলেন, যুদ্ধ শুরু করে দেশের স্বাধীনতার মূল কাজটা শুরু করলেন, তাকে একেবারে বাদ দিয়ে দিলেন? শুধু তাকে না, তাদের (আওয়ামী লীগ) লোকগুলোকেও বাদ দিয়েছে। ওসমানীর কথা একবারও বলে না। তাজউদ্দীনের কথা কেউ একবার উচ্চারণও করে না। মানে একজন মানুষ ছাড়া আর কোনো মানুষই নাই, এখন এই হচ্ছে তাদের ইতিহাস।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ও বিএনপির শিক্ষা সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাদা দলের বর্তমান আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, সাবেক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান প্রমুখ।
আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক ড. মো. হাসানুজ্জামান স্বপন, অধ্যাপক মো. আবুল কালাম সরকার, অধ্যাপক ড. আল মোজাদ্দেদী আলফেছানী, মো. শহীদুল ইসলাম, অধ্যাপক আবদুল করিম, মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, দেবাশীষ পাল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. ছবিরুল ইসলাম হাওলাদার, অধ্যাপক ড. মো. আতাউর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান, ড. নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক মঞ্জুর এলাহী, অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. এমতাজ হোসেন, ড. মো. তোজাম্মেল হোসেন, অধ্যাপক মতিউর রহমান, বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন অসীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, বিএনপির সহ-শিক্ষা সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহিম, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান, যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এলবার্ট পি কস্তা, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের প্রকোশলী মাহবুব আলম, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, শফিকুল ইসলাম, বিএনপি নেতা ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম, মো. আবু তৈয়ব প্রমুখ।