নাম কোহিনুর। একজন প্রতিবন্ধী। ছোটবেলায় ডাক্তারে ভুল চিকিৎসার কারণে আজকে তার দুটি পা বিকলাঙ্গ। সেই থেকে সে নানান কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করছেন। তার পরিবারে একজন বৃদ্ধ বাবা যিনি অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী, বৃদ্ধা মা যে কর্ম করতে অক্ষম। তাদের পরিবারের অবলম্বন বাবার বয়স্ক ভাতা এবং মেয়ে কোহিনূরের প্রতিবন্ধী ভাতা। যেটা দিয়ে খুব কষ্ট করে তাদের জীবন যাপন চলছে বর্তমানে।
একটি হুইল চেয়ার কেনার সামর্থ্য নেই কোহিনুরের। স্বাভাবিক মানুষের মতো পা না থাকায় পায়ের চাপটা নিতে হয়েছে কোমল হাতে। গোটা শরীরের ভর তার হাতের তালুতে। তবুও থেমে নেই তার পথচলা। কোহিনুরের আছে প্রবল ইচ্ছাশক্তি। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অদম্য ইচ্ছা। কোন কর্ম করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান কোহিনুর।
নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠন দুর্ঘটনারোধের পাশাপাশি অনেক মানবিক কাজ করে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় নিরাপদ সড়ক চাই বগুড়া জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দরা কোহিনুরের কথা জনাতে পেরে নিসচার একটি টিম গতকাল যায় কোহিনুরের বাড়ি সাত শিমুলিয়া কারিগর পাড়া লাহিড়ি পাড়া ইউনিয়ন বগুড়া সদরে একটি প্রত্যন্ত গ্রামে।
সেখানে গিয়ে কোহিনুর বিবির খোজ খবর নেয়া হয়। তার সাথে কথা বলার পরে সে নিসচার নেতৃবৃন্দদেরকেও জানান, সে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজে পরিশ্রম করে জীবন চালিত করতে চান। তার এরকম দৃঢ় মনোবল দেখে নিসচা বগুড়া জেলা শাখার নেতৃবৃন্দরা তাকে আশ্বস্ত করেরন নিরাপদ সড়ক চাই এর পক্ষ থেকে একটি মুদিখানার দোকান নির্মাণ করে দেবার।
এবং নিরাপদ সড়ক চাই বগুড়া জেলা শাখার পক্ষ্য থেকে আজ বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফিরোজা পারভীন এর সঙ্গে কোহিনুর এর বিষয়টা উপস্থাপন করা হয়। ইউএনও ফিরোজা পারভীন বিস্তারিত শুনে নিসচার প্রতিনিধি দলকে আশ্বস্ত করেন কোহিনুরের পাশে তিনিও দাঁড়ানোর জন্য সম্মতি জ্ঞাপন করেন।
নিসচা বগুড়া জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক রকিবুল ইসলাম সোহাগ জানান, শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হলেও সবাই নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। কিন্তু সামর্থ্যের কারণে অনেকের সেই সুযোগ হয়ে ওঠে না। কোহিনুর তাদের মাঝে একজন সে নিজের পায়ে দাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে। আমরা কি তাদের পাশে দাঁড়াতে পারিনা? অবশ্যই আমাদের উচিৎ সমাজের পতিবন্ধীদের পাশে দাড়ানো। বিগত দিনে আমরা সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারসহ নানা অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছি। এবার আমরা উদ্যোগ নিয়েছি কোহিনুরের পাশে দাড়ানোর।
আমাদের সাংগঠনিক প্রক্রিয়া মোটামুটি শেষ পর্যায়ে। হয়তোবা খুব শীঘ্রই সংগঠন থেকে সেই অসহায় প্রতিবন্ধী মহিলাটার পাশে দাঁড়াবো।