জনগণের প্রত্যাশিত সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর পূর্ণ বাস্তবায়ন চাই- এই দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ চাঁদপুর জেলা শাখা। পহেলা নভেম্বর রোববার বেলা ১১টায় সারা দেশের ন্যায় একযোগে চাঁদপুর প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনু্ষ্িঠত হয়। শুরুতেই পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন নিরাপদ সড়ক চাই চাঁদপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রহমান।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলনেরর সভাপতিত্বে ও নিসচা চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ মহিউদ্দিন রাসেলের পরিচালনায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক প্রেরিত সংগঠনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা শাখার সভাপতি সাংবাদিক এম এ লতিফ।
লিখিত বক্তব্যে নিসচা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার পরও ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর প্রয়োগের দিন থেকেই ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ আইনটি এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। আইনটির যথাযথ প্রয়োগে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবহন সেক্টরের একটি কূচক্রী মহল। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ও করোনা পরিস্থিতির কারনে সরকার দুবার সময় বাড়িয়ে আগামি ডিসেম্বর পর্যন্ত এই আইন বাস্তবায়নে শিথিলতা আনে। এমতাবস্থায় আগামি ডিসেম্বরের পর যেন কোন ভাবেই এই আইনের পূর্ণ বাস্তবায়নে কোন মহল বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে না পারে এ জন্যই ঢাকাসহ সারা দেশেই ইলিয়াস কাঞ্চনের প্রাণের সংগঠন নিরাপদ সড়ক চাই এর সকল শাখা একযোগে সাংবাদিক সম্মেলন করেন।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, সারা দেশেই সড়ক দূর্ঘটনা এখন মহামারীর রূপ ধারন করেছে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকার কারনে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়ক দূর্ঘটনা। আর এতে হাজার হাজার নারী-পুরুষ অকালেই প্রাণ হারাচ্ছে। আবার অনেকে না মরেও মরার মত বেঁচে থেকে পরিবারের বোঁঝা হয়ে অসহায় ভাবে দিন কাটাচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হাজার হাজার পরিবার।
আর এই অবস্থা থেকে উত্তোরণে সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ এর পূর্ণ বাস্তবায়ন। যদিও পরিবহন শ্রমিকদের ব্যবহার করে ওই চক্রটি ফয়দা লুটে নিচ্ছে। অথচ শ্রমিকদের জীবনের সুরক্ষায় তারা কিছুই করছে না। আমরা মনে করি, যদি চালক, যাত্রী এবং পথচারী সবাই যদি সড়কে আইন মেনে চলে তাহলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে হ্রাস পাবে। একজনের জন্যে আন্যজন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। সড়কে যদি শৃঙ্খলা ফিরে না আসে তাহলে কোনো অবস্থাতেই সড়ক নিরাপদ হবে না অভিমত ব্যক্ত করেন বক্তারা।
সাংবাদিকদের মধ্যে বিভিন্ন প্রশ্ন ও প্রস্তাবনা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এইচএম আহসান উল্লাহ, সহ-সভাপতি সোহেল রুশদী, ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি এ কে আজাদ, দৈনিক চাঁদপুর প্রতিদিনের প্রধান প্রতিবেদক আশিক বিন রহিম প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, যুগ্ম সম্পাদক মো. শাহ আলম, দপ্তর সম্পাদক মো. মামুন শনি, প্রচার সম্পাদক সাইফুল ইসলাম আকাশ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. আলী শেখ, কোষাধ্যক্ষ সুজয় চৌধুরী লিটন, মহিলা সম্পাদিকা নুরজাহান বেগম কুমকুম, যুব বিষয়ক সম্পাদক এম আই দিদার, সদস্য মো. শরীফুল ইসলাম, বাদশা ভূইঁয়া, সাইফুল ইসলাম দিলদার, রুবেল হোসেন বেপারী, মো. শাহজাহান প্রমূখ।
প্রসঙ্গত ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর থেকে আইনটি কার্যকর শুরু করে সরকার। প্রথম ১৪ দিন সহনীয় মাত্রায় এর প্রয়োগ ছিল। পরবর্তীতে সরকার পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দাবিতে আইনের কয়েকটি বিষয় পরবর্তী ছয়মাস পর্যন্ত কনসিডারের সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে করোনার কারণে এই আইন যথাযথ প্রয়োগের সময়সীমা বৃদ্ধি করে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু প্রত্যাশার জায়গায় বারবার হোচট খেলে হতাশ হতে হয়। তবে আমরা আশাবাদী জনগণের প্রত্যাশিত ‘সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ এর যেন পূর্ণ বাস্তবায়নের সময় যেন আর বৃদ্ধি করা না হয়।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন