মহাসড়কে খর শুকানো রোধকল্পে বগুড়া নিসচা শাখার ক্যাম্পেইন পরিচালনা এবং কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে লিফলেট বিতরন করা হয়। আজ বিকালে বগুড়া এরুলিয়া এলাকায় বগুড়া-নওগা মহাসড়কে এই ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হয়।
নিসচা বগুড়া জেলা শাখার পক্ষ থেকে জানানো হয়, বগুড়ার বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর শুকানো হচ্ছে খড়। এতে সংকুচিত হয়ে পড়েছে সড়কের অর্ধেক অংশ। যানবাহনসহ চলাচলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে চালকদের। প্রায় ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এমনকি পথচারীরাও পড়ছে বিপাকে। মহা সড়কে শুধু খড় শুকানোর কাজই হচ্ছেনা এখানে মেশিনে ধান মারাই এর কাজও করা হচ্ছে। এই সব কাজ বন্ধ করতে আজ জেলা শাখার আয়োজনে সচেতনমুলক ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হয়।
ক্যাম্পেইন চলাকালে নিসচা কর্মিরা কৃষকদের সাথে কথা বলেন। কৃষকেরা জানান, সড়কে খড় শুকাতে দিলে তেমন কষ্ট করতে হয় না। এক দিনেই খড় শুকানো হয়ে যায়। তাই বেশির ভাগ মানুষ সড়কে ধান ও খড় শুকাচ্ছে। যদিও মহাসড়ক আইন, ২০২১ অনুযায়ী ফসল, খড় বা অন্য কোনো পণ্য শুকানো বা এ ধরনের কোনো কাজে মহাসড়ক ব্যবহার করা যাবে না উল্লেখ রয়েছে, তবু মানছে না তারা।
জেলার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা মাঠ থেকে ধান কেটে রাস্তায় রাখছেন। আবার সেখানেই ধান মাড়াই করে খড় রাস্তায় বিছিয়ে শুকাচ্ছেন। ওই সব খড়ের ওপর দিয়ে আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করছে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কারসহ অটোরিকশা, অটো ভ্যান, সাইকেল ও মোটরসাইকেল। মাঝেমধ্যে খড়ের ওপরে চলতে গিয়ে পিছলে পড়ছে ছোট যানবাহন। তবু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করছে পথচারীরা।
চালকেরা বলছেন, নিজের সম্পদ মনে করে সড়কে এভাবে ধান ও খড় বিছিয়ে রাখে। ধান ও খড়ের কারণে যে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, তা তারা চিন্তা করে না। কখন যে দুর্ঘটনার কবলে পড়ি, ভয় পাই।
মোটরসাইকেল আরোহীরা জানান, কোনো বাস বিপরীত দিক থেকে এলে পাশ কাটিয়ে ব্রেক করা হয়। কিন্তু সড়কে খড় থাকার কারণে মোটরসাইকেলটি স্লিপ করে। এতে ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। রাস্তায় খড় রাখার কোনো নিয়ম না থাকলেও দিব্যি খড় শুকানো হয়। এতে যে দুর্ঘটনা ঘটার শঙ্কা বাড়ে, তা নিয়ে কারও চিন্তা নেই।
নিসচা জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক রকিবুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘কৃষক ও কৃষি যেমন বাঁচাতে হবে, তেমনি সড়কে চলাচলকারী মানুষকেও বাঁচাতে হবে। আইন রয়েছে, সড়কে খড় শুকানো যাবে না। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় আমাদের আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।’
আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতি বছর আমরা কৃষকদের সচেতন করি। ‘সড়কে খড় শুকাতে নিষেধ করি। আমরা বুঝানোর চেষ্টা করি সড়কে খড় শুকাতে দিলে দুর্ঘটনা ঘটার শঙ্কা বাড়ে। কৃষকরা শুনে এবং আমাদের কথা মানার আশ্বাস প্রদান করেন। কিন্তু এরপরও এই ধরনের কাজের সংখ্যা কমছেনা। আইন প্রয়োগ ছাড়া এই অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
ক্যাম্পেইন পচিলনার সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আলামিন , আইন বিষয়ক সম্পাদক আরমান হোসেন ডলার, কার্যনির্বাহী সদস্য, রায়হান, আমিন, মিঠুন আকন্দ প্রমুখ।