আজ শনিবার জাতীয় সমবায় দিবস। স্বেচ্ছাব্রতী নাগরিক সংগঠন প্রত্যাশা ২০২১ ফোরাম এর উদ্যোগে ৪৯ তম সমবায় দিবস উদযাপন করা হয়। “বঙ্গবন্ধুর দর্শন, সমবায়ে উন্নয়ন” প্রতিপাদ্য নিয়ে একটি অনলাইন সেমিনারের আয়োজন করা হয়।প্রত্যাশা ২০২১ ফোরাম এর সভাপতি এস এম আজাদ হোসেন এর সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সমবায় একাডেমির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হরিদাস ঠাকুর।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মো. মশিউর রহমান, বিভাগীয় নিবন্ধক, সমবায় অধিদপ্তর, ময়মনসিংহ। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আমিন উদ্দিন মৃধা। হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড এর কান্ট্রি ডিরেক্টর আতাউর রহমান মিটন, প্রত্যাশা ২০২১ ফোরাম এর কার্য নির্বাহী সদস্য শামসুন নাহাজার আজীজ লীনাসহ আরো অনেকেই। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন । সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রত্যাশা ২০২১ ফোরামের সদস্য সচিব রুহি দাস।
সভাপতির বক্তব্যে এস এম আজাদ হোসেন অংশগ্রহণকারী সকলকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার জনমানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আজীবন লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন। এ প্রেক্ষিতে তাঁর ভাবনা ও সমবায়ের কর্মকাণ্ড ছিল একই সূত্রে গাঁথা। গণমানুষের চাহিদা পূরণে সমবায় পদ্ধতিকে তিনি সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করেছিলেন। সর্বদাই বাঙালী জাতির উন্নত জীবন প্রতিষ্ঠায় ছিলেন সোচ্চার। তাঁর আদর্শিক চিন্তা-ভাবনা সমবায় পদ্ধতিকে সার্থক করে তুলতেও সহায়ক ছিল। জাতীয় অর্থনীতির দ্বিতীয় খাত হিসেবে সমবায় মালিকানাকে স্বীকৃতি দান বঙ্গবন্ধুর অনন্য অবদান।
তিনি বলেন,১৯৭২ সালের ৩০ জুন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক সমবায় সম্মেলনে সমবায়ীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, শিক্ষা পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে- এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন।’ বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে সমবায় নিয়ে ভাবনা ও দিকনির্দেশনাকে সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছিলেন। এই ধারাবাহিকতায় তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘আমার বাড়ি-আমার খামার’এবং ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ প্রকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে চলেছেন।
তিনি বলেন, সমবায়ের ভিত্তি হলো পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস, ভালবাসা, একতা, পরস্পরের সহযোগিতা চবড়ঢ়ষব ঐবষঢ় চবড়ঢ়ষব. সমবায়ের মাধ্যমে সদস্যদের স্বল্প পুঁজি একত্র হয়ে বৃহৎ পুঁজিতে রূপান্তর করে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। প্রচলিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ব্যাংক বা অন্য কোন অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানের সেবা থেকে যারা বঞ্চিত তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে সমবায় কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দরিদ্র ও সাধারণ মানুষ অমর্যাদাকর ও হতাশা থেকে উদ্ধার হয়ে আত্মবিশ্বাসে বলিয়ান হয়।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও স্বনির্ভরতা অর্জনের সমবায়ের গুরুত্ব অপরসীম। শতাব্দী প্রাচীন এ আন্দোলন বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সমবায়ের চেতনাকে প্রবল ও অর্থবহ করে তুলেছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও শোষণমুক্ত সোনার বাংলাদেশ বির্নিমাণের। বঙ্গবন্ধু দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভাগ্যন্নোয়নের গণমুখী সমবায় আন্দোলনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। এ বছর কোভিড-১৯ পুরো বিশ্ব স্থবিরতা সৃষ্টি করলেও, সমবায় সমিতিগুলো এ সময়ে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে।
অর্থাৎ আমরা যে ক্ষুধা- দারিদ্র্যমুক্ত স্বনির্ভর সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখছি, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সমবায়ের ধারণা আমাদেরকে অনেকটাই পথ দেখাবে। বঙ্গবন্ধুর দর্শন, সমবায়ে উন্নয়ন এই চেতনাকে লালন করে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারব।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন