পরীমনিকে অকথ্য ভাষা গালি দিতে দিতে যারা বোর হয়ে গেছেন, আসেন পরীমনিকে একটু চিনি।
পরীমনির আসল নাম স্মৃতি। ছোট বেলায় তার মা আগুনে পুড়ে দীর্ঘ দুই মাস ভুগে- তারপর মারা গেছেন।
এরপর মারা যায় পরীমনির বাবা। তাঁর মৃত্যুও স্বাভাবিক নয়। ব্যবসায়িক কারণে সে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হোন।
অতএব বাংলা সিনেমার মতো পরীমনি খুব শৈশবে এতিম হয়ে যায়। পরীমনি পালিত হয় নানার সংসারে। একটি স্কুল থেকে সে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়। এর আগে কেউ এই স্কুল থেকে বৃত্তি পায়নি। শুধু তাই নয়, এখন পর্যন্ত ওই স্কুল থেকে আর একজন শিক্ষার্থীও বৃত্তি পায়নি।
সাংবাদিকরা পরীমনির স্কুলের শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছেন। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তারা পরীমনিকে এখনো স্নেহ করেন। শৈশবে পরীমনি ছিলো নম্র, ভদ্র এবং সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা এক মেয়ে।
এরপর যা হয়। পরীমনিকে বিয়ে দেয়া হয়-ওই গ্রামের একজনের সাথে। সেই সংসার দুই বছরের বেশি টেকেনি। সংসার পরীমনির কারণে ভাঙ্গেনি। স্বামী যৌতুকের জন্য দুই লাখ টাকা চেয়েছিলেন পরীমনির নানার কাছে। সে টাকা না দেয়া, সেই স্বামী পরিমনীকে তালাক দেন!
তখনো কিন্তু পরীমনির নাম স্মৃতি। যেহেতু স্মৃতির রূপ ছিলো, একই সাথে ছিলো এক সাগর দুঃখ। একজন রূপবতী দুখী মেয়ে, শিকারের জন্য এর চেয়ে ভালো হরিণ আর কী হতে পারে?
পরীমনির নানার নাম, বাপের নাম পত্রিকাওয়ালারা ছবিসহ ছাপাচ্ছে। কিন্তু পরীমনির গডফাদারদের ক্ষেত্রে লিখছে, ” জনৈক ব্যবসায়ী, জনৈক ব্যাংকার, জনৈক রাজনীতিবিদ, জনৈক আমলা, জনৈক পুলিশ কর্মকর্তা?
এই সমাজের জনৈকরা একজন স্মৃতিকে একটা ভালো সিনেমা দিতে পারতো। একটা ভালো গল্প দিতে পারতো। ভালো লেখাপড়ার সুযোগ দিতে পারতো। তা না করে, স্মৃতিকে এই জনৈকরা পরীমনি বানিয়েছেন, দেশ বিদেশে ঘুরিয়েছে।
পরীমনির বাসায় যে মদের ভান্ডার , সেই মদ কি পরীমনি একাই খেতো? নাকি অন্য জনৈকরা ছিলো? তারা কারা? পরীমনি কাদের জন্য এত মদ জমিয়েছিলো? গত কয়েকদিনে পশুর মতো পরীমনিকে গালিগালাজ, কেউ কেউ পাথর ছুড়ে তাকে হত্যা করার দাবি জানাচ্ছেন! এটি একটি সমাজের অসুখ। আপনি ফেসবুক খুলবেন। পরীমনিকে গালি দিবেন, একশ পরীমনিকে ফাঁসি দিবেন, এতে সমাজের এ অসুখ কমবেনা।
তার জন্য দরকার একটি সংবেদনশীল সমাজ। সেই সমাজ গড়ার দায়িত্ব আপনার। তা হলে আপনি এবং পুরো দেশে ভালো থাকবে।
(সংগৃহীত)