অভিনেতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয়ের ওপর চটেছেন ঢাকাই ছবির প্রয়াত সুপারস্টার নায়ক মান্নার স্ত্রী বিমানবালা শেলী মান্না। সম্প্রতি ‘জীবনের গল্প’ নামে একটি অনুষ্ঠানে বিমানের কেবিন ক্রুদের নিয়ে আপত্তিকর প্রশ্ন করায় জয়ের ওপর ক্ষেপেন বিমানবালা শেলী। ওই প্রশ্ন করার অপরাধে জয়কে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে, অন্যথায় তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন।
জয়ের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে বিশদ এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন শেলী। পাঠকের উদ্দেশে সেই স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-
‘জনাব জয়, সাম্প্রতিককালে একটি টিভি চ্যানেলের লাইভ অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন বিমানের সাবেক ক্যাপ্টেন মোশতাক। আপনি সেই অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছিলেন। আপনি এভিয়েশন নিয়ে অনেক প্রশ্ন করেছেন। একজন সম্মানীয় ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ করে তার জীবনবৃত্তান্ত, পেশাগত দক্ষতা ও কর্মময় জীবন সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন স্বাভাবিক নিয়মেই। তারপর আপনি আপনার চিরাচরিত অভ্যাসের দরুন অপ্রাসঙ্গিকভাবে কেবিন ক্রুদের সঙ্গে ক্যাপ্টেনদের প্রণয়ঘটিত ব্যাপার থেকে শুরু করে বিদেশ থেকে জিনিসপত্র এনে বিক্রি প্রসঙ্গেও প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন, যা অত্যন্ত আপত্তিকর! ক্যাপ্টেন মোশতাক অত্যন্ত সজ্জন ও অমায়িক ব্যক্তি বিধায় তিনি এর উত্তরে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমি একটি কথাই বলতে চাই– এ জগতে হায়, সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি! কেবিন ক্রু সম্প্রদায় তাদের বৈধ আয় দিয়ে সচ্ছলভাবে জীবনযাপন করে আসছেন। কিছুটা টানাপোড়েন তো পৃথিবীর সব সেক্টরেই চলমান রয়েছে। কোনো সেক্টরই এর ঊর্ধ্বে নয়। নইলে তো পৃথিবী জান্নাতময় হতো। ভালো শব্দের পাশাপাশি মন্দ বলে কোনো শব্দ থাকত না।’
জয়ের সমালোচনা করে প্রয়াত নায়কের স্ত্রী আরও লেখেন, ‘আপনি এ দেশের শিল্পীসমাজকেও চরমভাবে হেয় করেছেন। যারা এ দেশের সাংস্কৃতিক জগতকে সমৃদ্ধ করে এ দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছেন, তাদেরও আপনার অনুষ্ঠানে অশালীন প্রশ্নে জর্জরিত করেছেন। মৌসুমী-শাবনূর থেকে শুরু করে শিল্পী সমিতিকেও ন্যূনতম সম্মান দেখাননি। অথচ আপনি একজন শিল্পী! ভাবতেও অবাক লাগে। আমরা অত্যন্ত রক্ষণশীল সমাজে বাস করি। তাই এ ব্যাপারে আপনার প্রচণ্ড সৌজন্যবোধ ও সীমারেখা থাকা উচিত ছিল।’
বিমানবালা শেলী সবশেষে তার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘কেবিন ক্রুদের জীবনযাপনে প্রচণ্ড সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আইনের বাইরে কাজ করার কোনো বিধান এখানে নেই। কেবিন ক্রুরা পেশাগত কারণে নিদ্রাহীনভাবে প্রতিনিয়ত ঝুঁকির জীবন নিয়ে জাতীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইনসকে নিয়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন, দেশের সেবা করছেন। তারা পারিবারিকভাবে প্রতিটি মুহূর্ত থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এমনকি প্রিয়জনের অসুস্থতা ও মৃত্যুর সময়ে পাশে থাকতে পারেন না। এমন একটি সম্মানজনক ও রিস্কি পেশার সম্প্রদায়কে আপনি কোন যুক্তিতে ও সাহসে অবমাননা করলেন? আপনার ধারণা থাকা উচিত যে, মানুষের কথায়, প্রশ্নে, যুক্তিতে, আচার-ব্যবহারে এবং চিন্তা-ভাবনায় একটি শালীনতা ও সীমারেখা থাকা উচিত। কোনো অবস্থাতেই সীমা লঙ্ঘনকারীকে প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়।’