এদেশে চলচ্চিত্র শিল্প প্রতিষ্ঠারও পূর্বে চলচ্চিত্র সাংবাদিকতার সূচনা। ‘মুখ ও মুখোশ’ নির্মাণের আগেই ‘চিত্রালী’ প্রকাশিত হয়। তখন উর্দু, হিন্দী, হলিউডের ছবির খবর প্রকাশ করতো ‘চিত্রালী’। এফডিসি নির্মাণের পর আর ভিনদেশী সিনেমার দিকে খবরের জন্য তাকিয়ে থাকতে হয়নি ‘চিত্রালী’কে। ‘চিত্রালী’ নিজের ভাষার চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক হয়ে দাড়ায়।
চলচ্চিত্র সাংবাদিকতা ও চলচ্চিত্র শিল্প হাতে হাত ধরে বড় হতে থাকে। ইন্ডাষ্টি যত সমৃদ্ধ হয়, চলচ্চিত্র সাংবাদিকতায়ও পেশাদারিত্ব তত বাড়তে থাকে। আশির দশকে এসে চলচ্চিত্র শিল্প সমৃদ্ধির চূড়ায় পৌঁছে। মেধাবী পরিচালকদের প্রতিযোগিতা শুরু হয়। বিনিয়োগকারীদের পুঁজিতে ইন্ডাস্ট্রি সয়লাব হয়ে যায়। প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা বাড়তে থাকে। হিট-সুপারহিট ছবির সংখ্যা লাগামহীন হয়ে পড়ে। তারকা তারকায় সংঘর্ষে ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রি পরিণত হয় বিনোদনের স্বর্গরাজ্যে। ততদিনে চলচ্চিত্র সাংবাদিকতা রুপালি পর্দার মতোই তরুণদের কাছে আকর্ষণীয় বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এই পেশা তার যৌবনের শীর্ষে পৌঁছে গেছে। চিত্রালী, পূর্বাণী, তারকালোক, বিচিত্রা, সিনেমা, ছায়াছন্দ, প্রিয়জন- এরকম অসংখ্য বাহারী রংঝলমলে পত্রিকা বিনোদনবুভুক্ষু পাঠকের হাতে হাতে। চলচ্চিত্র সাংবাদিকদের সংগঠন ‘চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি’র পুরষ্কার চলচ্চিত্র শিল্পে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারের জৌলুশকে ছাড়িয়ে গেছে। চলচ্চিত্র শিল্প ও চলচ্চিত্র সাংবাদিকতা আক্ষরিক অর্থেই একে অন্যের পরিপূরকে পরিণত হয়েছে। ঠিক এই সময় যে তরুণরা চলচ্চিত্র ও চলচ্চিত্র সাংবাদিকতার আকর্ষণে পা রাখেন গণমাধ্যমে, তাদেরই একজন মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন।
চলচ্চিত্র সাংবাদিকতা তখন চরম উৎকর্ষ উপভোগে মশগুল। এক ঝাক তুখোড় চলচ্চিত্র সাংবাদিক দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন রুপালি আঙিনা। চলচ্চিত্র শিল্পকে নিজেদের মুঠোতলে নিয়ে নিয়েছেন। তারকার উঠানামা, দর্শকরুচি পরিবর্তন, বক্স অফিসের হাওয়া বদল, নির্মাতাদের গ্রহণযোগ্যতা- সবকিছুই যেন চলচ্চিত্র পত্রিকাগুলোর অঙ্গুলি হেলনে সংঘটিত হতে থাকে। চলচ্চিত্র শিল্প তার উৎপাদিত পণ্যের প্রচারের স্বার্থে, পৃষ্ঠপোষকতার স্বার্থে, ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে চলচ্চিত্রের কাগজ ও সেইসব কাগজের সাংবাদিকদের সর্বোচ্চ সমীহ করতে থাকে। কিন্তু যখনই অভাব সদর দরজা দিয়ে ঢোকে, ইজ্জত-আভ্র পেছনের গলিতে মুখে লুকোয়। নব্বই দশকের মাঝামাঝিতে চলচ্চিত্র শিল্পের অধ:পতনের সাথে সাথে চলচ্চিত্র পত্রিকা, চলচ্চিত্র সাংবাদিক, চলচ্চিত্র সাংবাদিকদের সংগঠন, সব একযোগে পেছনে হাটতে শুরু করে। চলচ্চিত্র ব্যবসা নাজুক হতে থাকে। প্রযোজকরা বিনিয়োগে উৎসাহ হারান। প্রেক্ষাগৃহ ভেঙে গুদামঘর হয়। শপিংমল উঠে ড্রেস সার্কেল-রিয়াল ষ্টলের গায়ে। গুণী পরিচালকরা হাত গুটিয়ে বসেন। গুণী শিল্পীরা তাদের সাথে হাত মেলান। নতুন শিল্পীদের জন্য ইন্ডাষ্ট্রির দরজা বন্ধ হয়ে যায়। চলচ্চিত্র সংগঠনগুলো ক্যামেরার আলোছায়ার খেলা ফেলে কাঁদা ছোড়াছুড়ির খেলায় লিপ্ত হয়।
একে একে সব সিনেম্যাগাজিন বন্ধ হয়ে যায়। ধুঁকতে ধুঁকতে গেল দশকের শুরুতে মুখ থুবড়ে পড়ে ‘চিত্রালী’। যেখানে বেসরকারী সিনেষ্টুডিওগুলো ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে, গুলিস্তানের মতো শানদার ছবিঘর ভোজভাজির মতো গুলিস্তানের বুক থেকে হারিয়ে গেছে, সেখানে দেশের প্রথম চলচ্চিত্র পত্রিকার টিকে থাকাটাই আশ্চর্যের। ‘চিত্রালী’ ও চলচ্চিত্রের বেড়ে উঠা পায়ে পায়ে। একের প্রাণভ্রোমরা লুকিয়ে ছিল আরেকটির ভেতরে। চলচ্চিত্র শিল্পকে দাঁড় করাতে পত্রিকা হিসেবে ‘চিত্রালী’র অবদানের শেষ নেই। আবার চলচ্চিত্র, শিল্প হিসেবে টিকতে না পারলে চলচ্চিত্র পত্রিকাই বা টিকে কী করে। আখেরী দম ছেড়ে ২০০৪ সালে বন্ধ হয়ে যায় ‘চিত্রালী’।
চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নতির স্বাক্ষী, সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক তলিয়ে যায় ইতিহাসে। তারপর চলচ্চিত্র শিল্পও তার প্রাণপ্রিয় বন্ধুকে হারিয়ে অন্ধকারে ডুবে যেতে থাকে। বাচসাস পুরষ্কার বন্ধ হয়ে যায়। এফডিসি লোকসানে নিমজ্জিত হয়। প্রেক্ষাগৃহগুলো সমাজ ধ্বংসের ক্যান্সারে পরিণত হয়। সেখানে ছবি চলার চেয়ে বন্ধ থাকলেই সমাজের বেশি উপকার হয় বলে সবাই একমত হয়।
প্রকৃতিতে কোনো জায়গাই খালি থাকে না। চলচ্চিত্র শিল্প নষ্ট-ভ্রষ্ট বলে খেতাব কুড়ালেও এর বিনাশ শক্ত শিকড়ের কারণে অসম্ভব ঠেকে। দৈনিক পত্রিকাগুলো সিনেপত্রিকার জায়গা নেয়। চলচ্চিত্রের খবর পরিবেশন করতে তারা এগিয়ে আসে। বিনোদন পত্রিকার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেয়। এরকমই একটি ট্যাবলয়েড ‘মানবজমিন’ তখন সিনেমার খবর সবার আগে পাঠকের হাতে তুলে দিতে মরিয়া। আশির দশকের শেষে যে তরুণ চলচ্চিত্র সাংবাদিক মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন চলচ্চিত্রের চরম উৎকর্ষের যুগে পদাপর্ণ করেছিলেন, তিনি এবার হাল ধরেন পত্রিকাটির সিনেমা বিষয়ক লেখালেখির। চলচ্চিত্র শিল্প ডুবছে আর উঠে দাঁড়াচ্ছেন মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন। আশেপাশে কেউ নেই। সহযোদ্ধারা স্যাটেলাইট বিস্ফোরণের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বড় বড় পদে বিভিন্ন চ্যানেলে যোগ দিয়েছেন। কেউ কেউ বড় পত্রিকার বড় দায়িত্ত নিয়েছেন। মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন কিন্তু পড়ে রইলেন সিনেমার আতুড়ঘর এফডিসিতেই। তার কলম লিখে চললো চলচ্চিত্রের তলিয়ে যাওয়ার ইতিহাস।
এফডিসি আর কাকরাইলপাড়া- এক জায়গায় ছবি শুরু আরেক জায়গায় শেষ। এই দুই জায়গাতেই আওলাদ হোসেনের সরব পদচারণা। সিনেমার মহরত আওলাদ হোসেন ছাড়া ভাবা অসম্ভব। সিনেমার প্রিমিয়ারে আওলাদ হোসেন থাকবেনই। প্রেস কনফারেন্সে সবচেয়ে আক্রমণাত্বক প্রশ্নটি করবেন আওলাদ হোসেন। ফ্লোরে আওলাদ হোসেন গেলেই পূর্ণতা পায় শুটিং। ছবি রিলিজ দেবেন আওলাদ হোসেন ছাড়া? নতুন প্রযোজকরা যার নসীহত ছাড়া বেকার তিনি আওলাদ হোসেন। নতুন পরিচালকদের প্রশাসনিক জটিলতার খুঁটিনাটি যিনি শেখাচ্ছেন তার নামটিও আওলাদ হোসেন। শিল্পী খুঁজছেন? আওলাদ হোসেনই সবচেয়ে ভালো জানেন কাকে দিয়ে ‘সিনেমা হবে’।
অশ্লীলতা থেকে পাইরেসী- সিনেমার সবচেয়ে বড় দুশমনের বিরুদ্ধে অক্লান্তভাবে লড়াই করেছেন আওলাদ হোসেন। যার নাম শুনলেই এফডিসির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ফ্লপ ছবির নির্মাতা পর্যন্ত, অনেকেই কেঁপে উঠতো। সিনেমার যেকোনো অনিয়মের তথ্য আওলাদ হোসেনের কানে পৌঁছালে আর রক্ষা নেই। বেফাঁস মন্তব্য করেও স্বস্তি নেই। আওলাদ হোসেন জানলেন তো তার কলম সেটা কাগজে ঢেলে দেবেই। নিজের পত্রিকায় তো প্রতিদিন লিখছেনই অবিরাম, যেটা ছাপার সুযোগ নেই বড় দৈনিকে, সেটা আলগোছে ছেপে দিচ্ছেন শৃভাকাক্ষদের কাগজে। হরদম কলাম লেখার তাগিদ তার কাছে ছোট ভাইদের। সিনিয়র চলচ্চিত্র সাংবাদিকরা জীবিকার টানে বড্ড ব্যস্ত। আওলাদ হোসেনের টান কেবল সিনেমা। তাই তাকে ফি হপ্তায় দিস্তায় দিস্তায় লিখতে হতো।
স্মৃতিশক্তিই তাকে আওলাদ হোসেন বানিয়েছে। সবাই ভুলে বসে আছেন। আওলাদ হোসেন সেই টপিক নিয়েই লিখলেন। তথ্য নিয়ে খেলতে ভালোবাসতেন। লিখতেন সিনেসাংবাদিকতার সনাতন ষ্টাইলে। চলচ্চিত্র সাংবাদিকতা যে টেলিভিশন, মিউজিক ইত্যাদি নিয়ে লেখালেখির চেয়ে অনেক বেশি আলাদা, সেটা বোঝার জন্য কোনো চলচ্চিত্র সাংবাদিকের লেখাই আজ আর সুলভ নয়। চলচ্চিত্র বিষয়ক সংবাদের বিশেষ ধরন সম্পর্কে কৌতূহল মেটাতে পারে আওলাদ হোসেনের লেখা। আশির দশকের চলচ্চিত্র সমালোচনার ধার যার লেখায় আজো বলবৎ, সেই লেখকের নাম আওলাদ হোসেন।
একটা প্রশ্ন সবাইকে প্রায়ই তাড়িয়ে বেড়িয়েছে। আওলাদ হোসেন আসলে কাদের লোক? তিনি কী সিনেমার মানুষ? নাকি সাংবাদিকরা তার বেশি আপন? এফডিসির দাড়োয়ান, সহকারী পরিচালক, প্রডাকশন বয়, এরা যাকে নিজেদের মানুষ মনে করে, তাকেই আবার কীভাবে সাংবাদিকরা মনে করে অভিভাবক? বয়োজ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের কাছে আওলাদ হোসেন এক সিনেপাগলার নাম, জুনিয়র সাংবাদিকরা ‘আওলাদ ভাই’কেই বানিয়েছে সিনেমায় উঠার সিঁড়ি। অমুক পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা দরকার। ‘আওলাদ ভাই’ দুজনকে মিলিয়ে দিচ্ছেন। অমুক নায়িকা বেয়াদবী করেছে। ‘আওলাদ ভাই’কে নালিশ দিলে নায়িকা কানেধরে উঠবস করতেও রাজি। নতুন পরিচালক কীভাবে মিডিয়া কাভারেজ পাবেন ভেবে টেনশনে অস্থির। ‘আওলাদ ভাই’ ভাই-ব্রাদারদের একটেবিলে বসিয়ে দিচ্ছেন। কোনো সাংবাদিক ভুল-ভাল লিখলে পরিচালক-শিল্পীর পক্ষে দাঁড়াতে দুবার ভাবছেন না আওলাদ হোসেন। আওলাদ হোসেনের পারিবারিক পার্টিতে সিনেমার হোমরা-চোমরা থেকে শুরু করে নবাগতরাও হাজির। আবার সিনেমার সবচেয়ে গোপন পার্টিতে একজন চলচ্চিত্র সাংবাদিকই আমন্ত্রণ পান- বলাই বাহুল্য নামটি আওলাদ হোসেন।
চলচ্চিত্রের নির্বাক যুগ, সবাক যুগ পেরিয়ে আমরা এমন একটা ‘অবাক’ যুগে বাস করছি যেখানে প্রতি ঘন্টায় একজন সেলিব্রেটি জন্ম নিচ্ছে! অভিনয়ে ক-অক্ষর গোমাংস হয়েও নায়ক-নায়িকা বনে যাচ্ছে যে কেউ। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়া একরাতে পরিচালকের খাতায় নাম লেখাচ্ছে যে কেউ। এরা যখন এফডিসিতে ঢুকছে, আওলাদ হোসেনের মতো সাংবাদিককে মহীরুহ ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছে না। সারাজীবন সেলিব্রেটির খবর বিলিয়ে তারকা সংকটে আওলাদ হোসেন নিজেই মস্ত সেলিব্রেটিতে পরিণত হয়েছিলেন। যারা রোজ তারকা সেজে ঘুরে বেড়ান, ইন্টারভিউ দেন, তারা আওলাদ হোসেনের সামনে পরলে চুপসে যেতেন। তারকা তৈরির কারিগর সাংবাদিক নিজেও নিজের অগোচরে সেলিব্রেটি লাইফ লিড করছিলেন। চ্যানেলওয়ালারা সিনেমার সঙ্গে তাদের যোগসূত্র মনে করতেন আওলাদ হোসেনকে। যেকোনো বড় ইভেন্ট তদারকির অলিখিত ভার এসে পড়তো তার কাছে। কোনো সংকটে চলচ্চিত্রের প্রতিনিধিরা চুপ করে বসে থাকলে, আওলাদ হোসেন কলমের খোঁচায় না পারলেও তার স্পষ্ট ভাষণে ঘুম ভাঙাতেন নেতাদের।
চলচ্চিত্র সংগঠনের বড় নেতা না হয়েও তিনি ছিলেন তরুণ বিনোদন সাংবাদিকদের অভিভাবক। তার সমসাময়িকরা বহু আগে ‘ফিল্ড’ ছাড়লেও পঞ্চাশোর্ধ¦ বয়সেও তিনি স্পটে স্পটে ঘুরে বেড়াতেন। ফিল্মের প্রতিটি অফিসে ছিল তার যাতায়াত। প্রায় তিন দশক চলচ্চিত্রে বহু প্রতিভাকে ছড়িয়ে যেতে সহযোগিতা করলেও সংবাদ লেখা ছাড়া আর কোনো ধরনের সৃজনশীল লেখায় মনোনিবেশ করেননি আওলাদ হোসেন। তার হাটুর বয়সী বিনোদন সাংবাদিকরা গান লিখে, নাটক লিখে রাতারাতি সেলিব্রেটিও হয়ে গেলেও আওলাদ হোসেন ছিলেন নির্বিকার। পরিচালনা না করে, বই না লিখে, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান না খুলেও তিনি সেলিব্রেটি হয়ে গিয়েছিলেন স্রেফ নিজের বয়সকে জয় করে, তারুণ্যের সাংবাদিকসুলভস্পৃহা নিজের মধ্যে ধরে রেখে।
একজন পেশাদার চলচ্চিত্র সাংবাদিকের দায়িত্ব-কর্তব্য ঠিকঠাক পালনের জন্য মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন ছিলেন তরুণ বিনোদন সাংবাদিকদের আইডল। তার মতো একজন মাঠকর্মীর পক্ষেই সম্ভব ছিল চলচ্চিত্রের সব খবরাখবর নখদর্পণে রাখা। পত্রিকা অফিসের উঁচু চেয়ারের প্রতি তার ছিল না কোনো আকাক্সক্ষা। আর এটাই তাকে ‘ফিল্মের লোক’ অভিধা দিয়েছে। খ্যাতি, নাম, যশ তিনি যতোটাই কুড়ান না কেন, সিনেমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে গিয়ে চলচ্চিত্র পরিবারের একান্ত আপন মানুষ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। চলচ্চিত্র সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র শিল্পের মধ্যকার সম্পর্ক কতটা ঘনিষ্ঠ, কার্যকরী ও সুদূরপ্রসারী, এটা দুই অঞ্চলেরই ক্ষয়িষ্ণু সময়ে যিনি সবাইকে উপলব্ধি করিয়েছিলেন, তিনি মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন। চলচ্চিত্র শিল্পের প্রগতির স্বার্থে মোহাম্মদ আওলাদ হোসেনের মতো নিবেদিতপ্রাণ চলচ্চিত্র সাংবাদিক দরকার। দরকার চলচ্চিত্র সাংবাদিকতার হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার করা। আর দরকার যুগোপযোগী চলচ্চিত্র পত্রিকা। তবেই এই কথার বাস্তবায়ন সম্ভব- ‘চলচ্চিত্র সাংবাদিকতা ও চলচ্চিত্র শিল্প একে অন্যের পরিপূরক’।