English

28 C
Dhaka
সোমবার, নভেম্বর ১৮, ২০২৪
- Advertisement -

শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক ভাবনা

- Advertisements -

সড়কে প্রতিদিনই ঝড়ছে প্রাণ, পঙ্গুত্ব বরণ করছেন হাজারো মানুষ। সড়ক নিরাপদ করতে দেশে সরকারের পাশাপাশি ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ সহ বেশ কিছু সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে। তবে সুষ্ঠু ও পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা, ব্যক্তি সচেতনতায় কমতে পারে সড়ক দুর্ঘটনা। সড়ক নিরাপদ রাখতে ব্যক্তি করণীয়, দুর্ঘটনার কারণ এবং সমাধান নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভাবনা তুলে ধরেছেন মুরাদ হোসেন।

সড়ক দুর্ঘটনায় কার্বন মনোক্সাইডের প্রভাব
সড়ক দুর্ঘটনার বড় একটি কারণ কার্বন মনোক্সাইড (CO), যা সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলোতে উল্লেখ করা হয় না। রসায়নবিদদের পরীক্ষালব্ধ তথ্যমতে, গাড়ির কালো ধোঁয়া থেকে নির্গত কার্বন মনোক্সাইড প্রশ্বাসের সঙ্গে গ্রহণের ফলে তাৎক্ষণিকভাবে মানুষের শরীরে পৌঁছায়। রক্তের পাশাপাশি মস্তিষ্কেও হানা দেয় এটি। তাৎক্ষণিকভাবে মানুষের বিচার শক্তি লোপ পায়। গাড়ির চালকদের দীর্ঘদিন গাড়িতে থাকতে হয়। ফলে তাঁদেরও বিচার শক্তি লোপ পায়। একই সঙ্গে বেশিক্ষণ ধরে বা বায়ুতে বেশি ঘনত্বের কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস থাকলে, সেই বায়ুতে শ্বাস-প্রশ্বাস চললে বিপাকীয় বৈকল্য দেখা যায়। স্বাভাবিকভাবে চালকের এসব সমস্যার জন্য দুর্ঘটনা হয়। চালকেরা ধূমপান করলেও নীরব ঘাতক খ্যাত CO ধূমপায়ীর স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করে। যানবাহনের নির্গত ধোঁয়া থেকে কার্বন মনোক্সাইড নির্গমন রোধ করা কঠিন কিছু নয়। অন্তর্দাহ ইঞ্জিনের আংশিক পরিবর্তন ও অন্য কোনো শক্তির উৎস সন্ধান, ইঞ্জিনে উচ্চ তাপমাত্রার চেম্বার যুক্ত করে CO নির্গমন রোধ করা যায়। একই সঙ্গে গাড়ির জ্বালানির বিকল্প উদ্ভাবন করতে হবে।

সজিব সরকার
ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ

প্রয়োজন সমন্বিত অংশগ্রহণ
বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত এবং দুশ্চিন্তার বিষয় হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনা। সকালে পত্রিকা খুললেই চোখে পরে সড়ক দুর্ঘটনার বিভিন্ন নিউজ। নিরাপদ সড়ক চাই এ নীতি প্রণয়ন সম্ভব করার জন্য প্রয়োজন সর্বপ্রথম ব্যক্তি উদ্যোগ। সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ চালকের অসচেতনতা, উদাসীনতা। সরকারের কার্যমুখী নীতিমালার বাস্তবায়ন ও জনগনের সচেতনতাই পারে একটি নিরাপদ সড়ক ভাবনার সফলতা আনতে। দেশে গণপরিবহনের সংকট ও দুরবস্থার কারণে মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। তাই গণপরিবহনব্যবস্থা উন্নত করতে হবে, ফিটনেস ও রুট পারমিটবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে হবে, সড়কের ত্রুটি দূর করতে হবে এবং ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে হবে।বাংলাদেশের মত একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে ব্যক্তির একার পক্ষে এ সকল নীতিমালার বাস্তবায়নে লড়াই করা সম্ভব না। এজন্য প্রয়োজন সমন্বিত অংশগ্রহণ। সবাই সচেতন হলেই তৈরি হবে “একটি নিরাপদ সড়ক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন”

প্রতিভা জাহান নিপা
বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ

অবকাঠামোগত উন্নতিসাধন করতে হবে
‘একটি দুর্ঘটনা সারাজীবনের কান্না’ এই কথাটি যেন আজ চরম বাস্তবতার রূপ নিয়ে দিন দিন বেড়েই চলেছে। যানবাহনের বেপরোয়া চলাচল , রাস্তার অবকাঠামোগত দুর্বলতা ও মানুষের অসাবধানতার কারণে প্রানহাণি বেড়েই চলেছে। দুর্ঘটনার কারন হিসেবে রয়েছে ফিটনেসবিহীন গাড়ি,ওভারস্পিড, ওভারলোড, বেপরোয়া ওভারটেকিং, চালকের মাদকাশক্তি এবং ট্রাফিক ও রোড সাইন সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণও উল্ল্যেখযোগ্য । এমনকি আজকাল গাড়ি চালানো বা রাস্তা পারাপারের সময় মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলেও দুর্ঘটনা ঘটছে । নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নে গাড়ি চালকদের প্রশিক্ষণের জন্য সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ নিতে হবে ,পরিবর্তন করতে হবে গড়ি চালকদের প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাব, ট্রাফিক আইন সম্পর্কে জনসাধারণ ও গাড়ি চালকদের সচেতন করতে হবে, সড়ক-মহাসড়ক পথচারীদের সহজেই যাতায়াত করার জন্য জেব্রা ক্রসিং ,আন্ডারপাস,ওভারব্রিজ নির্মান এবং সেগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সাথে রাস্তাঘাট ও যানবাহনের অবকাঠামোগত উন্নতিসাধন করতে হবে। উপরোক্ত পদক্ষেপ গুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

রেজাউল করিম
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার
আমরা চাই সুরক্ষিত জীবন। আমাদের জীবনের নিশ্চয়তা অনেকাংশেই নির্ভর করছে নিরাপদ সড়কের উপর। আমরা একবিংশ শতাব্দীর এই যুগে বসবাস করছি। আমাদের বেঁচে থাকার ত্যাগিদেই প্রত্যক্ষভাবে রাস্তায় চলাচল করতে হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম সড়ক হলেও এটি আমাদের জন্য তা অনিরাপদ। নেই কোন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা।
চালকের মাদকাসক্তি, অদক্ষ চালক, হেলপার কর্তৃক গাড়ি চালানো, অতিরিক্ত গতিবেগ, চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা, ঘুমিয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত যাত্রী উঠানো,আঁকা-বাঁকা রাস্তা ইত্যাদি সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। চালকেরা বেপরোয়া হচ্ছে দিন-দিন, ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনার সংখ্যা। হাজারো মানুষের জীবন যন্ত্রদানবের চাকায় পিষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে অকালে অকস্মাৎ মৃত্যু বা পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে হাজারো সাধারণ মানুষ কে। তাই আইন সংস্কার করে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি উপরোক্ত সমস্যাগুলো সমাধানের মাধ্যমেই আমরা পেতে পারি- ‘নিরাপদ সড়ক নিরাপদ জীবন’।

শাহিদ হাসান মামুন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন