২০২১ সালে সারা দেশে সড়ক, নৌ ও রেল পথে মোট ৪ হাজার ৯৮৩টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫ হাজার ৬৮৯ জন। এছাড়া আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৮০৫ জন।
আজ সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আয়োজিত ‘২০২১ সালের সড়ক দুর্ঘটনা পরিসংখ্যান উপস্থাপন’ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান সংগঠনটির চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।
ইলেকট্রনিক মিডিয়ার তথ্য, ১১টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার তথ্য, অনলাইন পোর্টালের তথ্য, অনুমেয় অনুজ্জ বা অপ্রকাশিত ঘটনা এবং শাখা সংগঠনগুলোর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে এক হাজার ১৮২ জন নারী রয়েছেন। গত বছর বিমান পথে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। সড়কপথের দুর্ঘটনায় কবলিত হওয়া বিভিন্ন যানবাহনের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৯২০টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার কারণ হয়েছে নসিমন, করিমন, পিকআপ, অটোরিকশা, ভ্যান ও রিক্সা মিলিয়ে এক হাজার ৯৭৫টি গাড়ি। এরপর সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা আক্রান্ত হয়েছে মোটরসাইকেল, এক হাজার ৪৪৯টি।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৩১ শতাংশ গাড়িচালক ও পরিবহন শ্রমিক। এর মধ্যে ২৪ শতাংশ হলো মোটরসাইকেলে চালক ও আরোহী। মোটরসাইকেলে চালক ও আরোহী মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা এক হাজার ২৯২ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয় ২০২১ সালে বিগত দুই বছরের তুলনায় সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে। ২০২১ সালটিও ছিল করোনা মহামারির বছর। প্রায় ৬ মাস জরুরি যানবাহন ছাড়া অন্যান্য যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। যে কারণে সড়ক দুর্ঘটনা আরও কম হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণিত হচ্ছে গেল বছর সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যানে। গত বছর সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ও কারণ হিসেবে নিসচা জানায়, সড়কে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিংয়ের অভাব, টাস্কফোর্স কর্তৃক প্রদত্ত ১১১টি সুপারিশনামা বাস্তবায়ন না হওয়া, চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর প্রবণতা, দৈনিক চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানো, লাইসেন্স ছাড়া চালক নিয়োগ, পথচারীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে ওভারটেকিং করা, বিরতি ছাড়াই দীর্ঘসময় ধরে গাড়ি চালানো, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধে আইনের প্রয়োগ না থাকা, সড়ক ও মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও তিন চাকার গাড়ি বৃদ্ধি ও মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি।