দেশর সকল সেক্টর থেকে রাজনৈতিক কোটা দুর করার দাবি জানালেন নিরাপদ সড়ক চাই এর চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি এক ভিডিও বার্তায় গতকাল রাতে জানান, দেশের এই সময়ে যার যতটুকু করা দরকার সেগুলো করা উচিত। যার যতটুকু উপদেশ বুদ্ধি সেগুলো প্রয়োগ করা দরকার। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী আমার ছাত্রছাত্রীদেরকে আমি বলবো শুধু কোটার সমস্যা শুধু চাকুরীতে না। বৈষম্য সকল সেক্টরে আছে। এগুলো দুর করতে হবে।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, একটি বিষয় এড়িয়ে যাচ্ছি তা হলো রাজনৈতীক কোটা। রাজনীতিকভাবে নিয়োগ দেওয়া। এইটা যদি বন্ধ না করা যায় তাহলে কিন্তু বৈষম্য থেকেই যাবে।
রাজনৈতিক বৈষম্যর জন্য প্রথমেই আমাদের যেটি করা দরকার সেটি হল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সকল বিদ্যালয়ে লেজুর ভিত্তিক পার্টির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত কোনো রাজনীতি আমাদের শিক্ষাঙ্গনে থাকতে পারবে না। কারণ এই শিক্ষাঙ্গনে যদি রাজনীতি থাকে তাহলে কিন্তু এরা যখন পাশ করে বেরিয়ে আসবে এখান থেকেই তখন বলবে যে আমি এই দল ওই দল তমুক দল করি। এই জিনিসটা কিন্তু আমাদেরকে অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। হয়তো বলতে পারেন, তাহলে কি ছাত্ররা রাজনীতি করবেনা?
আমি বলবো রাজনীতি করবে। কিন্তু শিক্ষাঙ্গনে কোনো রাজনীতি না।
শিক্ষাঙ্গনে কোন রাজনীতি চলবে না, কেউ যদি রাজনীতি করতে চায় সে তার বাসায় থেকে রাজনৈতিক অফিস ভিত্তিক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে তার সেই জায়গার মধ্যে রাজনীতি করতে পারবে। কিন্তু শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতিটা যেটা থাকবে সেটি ছাত্রদের সুযোগ-সুবিধা তাদের অসুবিধা এই সমস্ত জিনিসগুলো তাদের শিক্ষকদের কাছে এবং কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানানোর জন্য। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের হয়ে সেইখানে কোনো রাজনীতি থাকতে পারবে না। যদি থাকে তাহলে কিন্তু বৈষম্য আসলে দূর হবে না ।
আরেকটি জিনিস আপনারা অনেকে খেয়াল করেছেন কিনা, আমাদের যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে যেগুলোতে যারা চাকরি করছেন তারা কিন্তু প্রজাতন্ত্রের চাকরি করছেন। আমাদের চাকরি করছেন।
কিন্তু আপনারা কি সেখানে দেখেছেন? সেখানেও কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হয়ে সে প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যেও কিন্তু তারা রাজনীতি করে যাচ্ছে। একটা জনগণের প্রতিষ্ঠানে যারা আমাদের টাকা আমাদের ট্যাক্সের টাকা আমাদের জন্য যাদেরকে নিয়োগ করেছে তারা দলের হয়ে কিভাবে সেখানে রাজনীতি করে?
কোন দলের হয়ে রাজনীতি এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে করা মানে আমাদের যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে রাষ্ট্রের যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেইখানে অবশ্যই সে রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। এবং এই রাজনীতির কারণেই কিন্তু এই যে দুর্নীতি, ঘুষ, এই সমস্ত জিনিসগুলো সেখানে হচ্ছে।
এবং তারা কিন্তু বিভিন্ন নামে রাজনীতি ভিত্তি বা সংগঠন বানিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে যারা এই কাজগুলো করছে তারাই কিন্তু সুযোগ সুবিধা গুলো নিচ্ছে ।
আপনারা যে দুর্নীতি করার সুযোগ পাচ্ছেন মন্ত্রীদের এমপিদের এবং সরকারি চাকুরিজীবীদের তাদের কিন্তু দালালি করছেন এবং আমাদেরকে কিন্তু প্রতিনিয়তই তারা ঠকাচ্ছে। কাজেই আমি আমার এই আন্দোলনের ছাত্র/ছাত্রী আমার সন্তান তুল্য যারা তাদেরকে বলছি এবং আগামীতে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনুরোধ করছি যে শিক্ষাঙ্গনে এবং আমাদের সকল প্রতিষ্ঠানে কোনোভাবেই রাজনৈতিক দলের হয়ে প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রাজনীতি করতে যেন কেউ না পারে।
আমাদের কথা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় যে প্রতিষ্ঠানগুলো সেটা জনগণের প্রতিষ্ঠান। সেই জনগণের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অমুক নাম, তমুক নামে রাজনীতি করবে। আর আমরা যখন যাবো তখন আমাদেরকে অবহেলা করবে। আমাদের কাছ থেকে ঘুষ নেবে। এই সমস্ত জিনিসগুলো বন্ধ করতে হবে। আর আদারওয়াইজ এই রাজনীতি যদি প্রতিষ্ঠান গুলো থেকে আমরা না দূরে সরাতে পারি তাহলে আমাদের এই দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ এবং বৈষম্য বিরোধী বাংলাদেশ আমরা গড়তে পারবো না।