ঈদ যাত্রায় দুর্ঘটনা ও বিকল যানবাহনের কারণে যানজটের আশঙ্কা করছে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)।গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) মহাসচিব এস এম আজাদ হোসেন জানিয়েছেন, বিগত তিনটি ঈদযাত্রায় মহাসড়ক পর্যালোচনায় দেখা যায়, মহাসড়কে দুর্ঘটনায় ও বিকল যানবাহনের কারণে যানজট বেড়েছে। আসন্ন ঈদ উল আযহা উপলক্ষে সড়ক ও মহাসড়কে ইতোমধ্যে অন্য সময়ের চেয়ে পশুবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহনের চাপ বেড়েছে।তাছাড়া এরমধ্যে উত্তরবঙ্গ থেকে মৌসুমী ফলের ট্রাকভর্তি গাড়ি ঢাকার দিকে ও অন্যান্য বিভাগীয় এবং জেলা শহরের দিকে যাচ্ছে।এতে পশু ও মালামাল পরিবহন বেড়েছে। ফলে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ এমনিতেই বেড়ে গেছে।
এদিকে, ১২ জুন থেকে ঈদ যাত্রা শুরু হচ্ছে।স্বভাবতই তখন যাত্রীবাহী যানবাহনের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে কয়েকগুণ। ইতোমধ্যে বর্ষাকাল শুরু হয়েছে।এমতাবস্থায় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে নসিমন-করিমন-ভটভটি-ব্যাটারি চালিত ভ্যান-রিক্সা-অটো কোনভাবেই চালাতে দেয়া যাবে না।এসব ধীরগতির যানবাহনের কারণে অনাকাংখিত রোডক্রাশ বৃদ্ধি পায়।ঈদুল আজহায় মহাসড়ক যানজট ও দুর্ঘটনামুক্ত রাখতে এখনই সঠিক পরিকল্পনা নেওয়া একান্ত জরুরী। মহাসড়কে পরিবহন চলাচল নিবিঘœ করতে স্বস্ব জেলা পুলিশের সদস্যদের পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করার নির্দেশনা দেয়ার আহবান জানাচ্ছি।বৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে যাতে হাইওয়ে পুলিশ মাঠে থাকে সে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা প্রয়োজন।
ঈদুল আজাহায় মহাসড়কে মাটিবাহী ট্রাক ও কম গুরুত্বপূর্ণ পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল কঠোরভাবে বন্ধ রাখা।
এছাড়া রাস্তার পাশে পশুর হাট না বসিয়ে রাস্তা থেকে দূরে বসানোর নির্দেশনা দেয়া।
পদ্মা সেতু,যমুনা সেতু ও মেঘনা-দাউদকান্দি সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে-মোটরসাইকেলের জন্য আলাদা টোলবুথ স্থাপন করতে হবে। সেতুর উপর যানবাহনের কোনো সমস্যা দেখা দিলে কিভাবে সেটাকে অতিদ্রুত রিমুভ করা যায়-সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। সড়ক ও সেতুর পাশে যত যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকবে- ততই যানজটের লক্ষণ থাকে। এজন্য ভাঙতি টাকা দিয়ে টোল পরিশোধ করতে চালকদের সচেতন করতে হবে। এতে সেতুর টোল পরিশোধ করতে ভাঙতির জন্য অপেক্ষা করতে হবেনা।
নিসচা মনে করে,সড়ক-মহাসড়কে যত ফিটনেসবিহীন যানবাহন কম আসবে-ততই দুর্ঘটনা ও যানবাহন বিকল কম হবে। এতে যানজটের আশঙ্কাও কম থাকবে। পরিবারের সাথে ঈদ করতে যাওয়া মানুষের ভোগান্তিও কম হবে।
সড়ক ও মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমাতে অবশ্যই মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা মেনে চলতে বাধ্য করতে হবে।এজন্য দেশের রাস্তা,যানবাহনের ধরন ও পরিবেশ অনুযায়ী গতি নির্ধারণ ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত গাইডলাইন ঈদের পূর্বেই প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করতে হবে।মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী উভয়েরই মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার নিশ্চিত করতে বাধ্য করা, মদ বা নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করে মোটরযান পরিচালনা না করা সংক্রান্ত বিধি-বিধান বাস্তবায়ন করা জরুরী।
সর্বোপরি, বিশ্বব্যাপী সমাদৃত সেইফ সিস্টেম এপ্রোচের আদলে সমন্বিত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা সময়ের দাবী।
ইতিমধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ‘মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা ২০২৪’ প্রণয়ন করেছে। জারি করা মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা বাস্তবায়ন হলে তা রোডক্র্যাশ ও প্রতিরোধযোগ্য অকাল মৃত্যু ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি।