English

25 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
- Advertisement -

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ চূড়ান্ত বিধিমালা জারি করার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর নিসচার স্বারকলিপি প্রদান

- Advertisements -

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ আইন কার্যকর এবং বাস্তবায়নের জন্য চূড়ান্ত বিধিমালা জারি করার দাবিতে নিরাপদ সড়ক চাই এর পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় এবং সারাদেশে প্রশাসনের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্বারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। সারাদেশের বিভাগীয় কমিশনার/জেলা প্রশাসক/ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে এই স্বারকলিপি প্রদান করা হয়।

স্বারকলিপি ১০ অক্টোবর বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় কমিটি ও প্রত্যেকটি শাখা এক যোগে প্রদান করে।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন নিসচা কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব লিটন এরশাদ। নিসচা চেয়ারম্যানের পক্ষে স্বারলিপি প্রদান করেন ভাইস চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন খান নান্টু, মহাসচিব লিটন এরশাদসহ লায়ন গণি মিয়া বাবুল-যুগ্ম-মহাসচিব, আব্দুর রহমান-সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, সৈয়দ একরামুল হক-সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, ফিরোজ আলম মিলন-দপ্তর সম্পাদক, আবু বক্কর সিদ্দিক রাব্বী-প্রকাশনা সম্পাদক, মোঃ মহসিন হোসেন খান- সমাজ কল্যাণ ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক,মফিজুর রহমান খান বাবু-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক, নাসিম রুমি- কার্যকরী সদস্য , মোঃ নুরুল হুদা- কার্যকরী সদস্য , আব্দুর রাজ্জাক- কার্যকরী সদস্য , কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সদস্য ও জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব মোঃ রোকনুজ্জামান রোকন, মোঃ জাহিদুর রহমান- কার্যকরী সদস্য, অধ্যাপক নূরনবী ভুইয়া- কার্যকরী সদস্য , মোঃ জহুরুল আলম -কার্যকরী সদস্য।

কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে সারাদেশে নিসচার শাখা রাজশাহী,বগুড়া,দিনাজপুর,লক্ষীপুর,খুলনা মহানগর, সিলেট মহানগর, বড়লেখা, যশোর, কাহালু, শিবগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ভোলা, কচুয়া, টঙ্গীবাড়ি, ডুমুরিয়া, নান্দাইল, কমলগঞ্জ, পাইকগাছা, বাগেরহাট, ময়মনসিংহ, সহ জেলা উপজেলা সর্বমোট ১২০টি শাখা এই স্বারকলিপি প্রদান করেন।

স্বারকলিপির নিম্নরূপ:

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর বিধিমালা
চূড়ান্ত ও অনুমোদনের জন্য স্মারকলিপি
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী

আমাদের শুভেচ্ছা ও সালাম রইলো। আপনি জানেন দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) দেশব্যাপী
সড়ক দুর্ঘটনারোধে সামাজিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। দেশ ও বিদেশের ১২০টি শাখার স্বেচ্ছাসেবী সড়ক যোদ্ধারা
নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে তাদের মেধা ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে সড়ককে নিরাপদ করার জন্য দিন-রাত কাজ করে
যাচ্ছে। তারই স্বীকৃতিস্বরূপ আপনি ২২ অক্টোবর মরহুমা জাহানারা কাঞ্চনের মৃত্যুর দিনটিকে ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক
দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। আপনার এই মহানুভবতায় আমরা কৃতজ্ঞ।

সড়ক দুর্ঘটনা হলো বিশ্বব্যাপী মানুষের নিহত ও আহত হওয়ার একটি অন্যতম প্রধান কারণ। যে সমস্ত কারণে মানুষের
মৃত্যু হয় তার মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু যদিও ৮ম স্থানে রয়েছে এবং এর ভয়াবহতা এমন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে যা
অচিরেই ৩য় স্থানে নেমে যেতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (গ্লোবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট অন রোড সেফটি ২০১৮ এর
তথ্যমতে বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ১০,৩৫,০০০ (দশ লক্ষ পঁয়ত্রিশ হাজার) মানুষের মৃত্যু হয় এবং প্রায় ৫০,০০,০০০
(পঞ্চাশ লক্ষ) মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করে যার ৯০ ভাগ নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের দেশে ঘটে থাকে। উন্নতমানের দেশসমূহের
তুলনায় এটি ৩ গুণ বেশি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশে প্রতিবছর মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার,
পাকিস্থানে ২৭ হাজার এবং ভারতে ৩ লক্ষ। জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা ৩.৬-অর্জনের নিমিত্তে
২০৩০ সালের মধ্যে মৃত্যুর হার ৫০% কমিয়ে আনা এবং সে নিমিত্তে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রতিটি
দেশকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও লক্ষমাত্রা ১১.২-এ রাস্তাকে সহজ, ব্যবহারযোগ্য এবং টেকসই যাতায়াত
ব্যবস্থা সকলের জন্য নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
আপনি জানেন দীর্ঘদিনের পথপরিক্রমায় সড়ক দুর্ঘটনারোধে আমরা যে বিষয়গুলো নিয়ে দাবী জানিয়ে আসছি তার
মধ্যে উল্লেখযোগ্য দেশে নতুন সড়ক নিরাপত্তা আইন তৈরি ও তা বাস্তবায়ন করা। এর প্রেক্ষিতে আপনার উদ্যোগে
সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ প্রণীত হয়, জনগণের মধ্যে স্বস্থি ফেরত আসে কিন্তু এই আইনটি আপনার নির্দেশনা
থাকা সত্ত্বেও এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। কারণ আইনটির বিধিমালা প্রণয়ন হয়নি। দীর্ঘ প্রায় ৪ বছর অতিক্রান্ত হলেও
বিধিমালা প্রণীত হয়নি, যার ফলে মূলত আইনটি অকার্যকর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এবং প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা
বাহিনীসহ কেউই কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারছে না। এছাড়া জাতিসংঘ ঘোষিত সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম ৫টি পিলার
যথাক্রমে ১. সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা, ২. ঝুঁকিমুক্ত যানবাহন, ৩. সচেতন সড়ক ব্যবহারকারী, ৪. সড়ক দুর্ঘটনায়
পরবর্তী করণীয়, ৫. গাড়ি চালনার উপযুক্ত পরিবেশ বাস্তবায়নের কার্যকর উদ্যোগ নেয়া যাচ্ছে না।

কারণ সড়ক দুর্ঘটনার জন্য জাতিসংঘ ৫ অতি ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। এই ৫টি ঝুঁকিপূর্ণ
বিষয় হচ্ছে ১. গতি (Speed) ২. হেলমেট (Helmet) ৩. সিটবেল্ট (Seatbelt) ৪. মদ্যপ অবস্থায় গাড়ী চালনা
(Drink Driving) ও ৫. শিশু আসন (Child Car Restraints) । এই ৫টি ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় নিশ্চিত ও
বাস্তবায়ন করতে হলে আইনের যথাযথ প্রয়োগ অপরিহার্য। যেমন কোন রাস্তায় যানবাহন ধরন ভেদে কোন গাড়ির কত
গতি হবে সে সম্পর্কে কোন উল্লেখ নেই। মোটরসাইকেল চালকদের প্রতি হেলমেট মেইনটেইন ও পরিধানের কোন
নির্দেশনা না থাকায় শুধুমাত্র আইনের হাত থেকে বাঁচতে নিম্নমানের হেলমেট অহরহ ব্যবহারিত হচ্ছে। শুধু চালককে
সিটবেল্ট ব্যবহারে নির্দেশনা থাকায় যাত্রীদের সিটবেল্ট পরিধানের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা না থাকায় জাতিসংঘের নির্দেশনাকে
অমান্য করা হচ্ছে। ডোপ টেস্টের সঠিক ব্যবহার ও মনিটরিং না থাকায় এখনও অনেক চালক মদ্যপ ও নেশাগ্রস্ত
অবস্থায় গাড়ী চালনা করছে এবং আমাদের দেশে শিশুদের জীবন রক্ষার্থে শিশু আসনের কোন বিধান সড়ক পরিবহন
আইন ২০১৮-তে উল্লেখ নেই।

এছাড়া সড়ক পরিবহন আইন পুরোপুরি প্রয়োগে আমরা মনে করি বিআরটিএ’র কারিগরি সক্ষমতা বাড়াতে হবে,
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ করে ট্রাফিক বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্টদের উপযুক্ত ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা,
চালক, মালিক, পথচারী ও যাত্রীদের আইন সম্পর্কে জানাতে প্রচার মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার ও সড়ক ব্যবহারকারী
সকলকেই নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করে গড়ে তুলতে বিশেষ কর্মশালার গুরুত্ব রয়েছে। প্রতিটি
বিষয় সড়ক পরিবহন আইনের বিধিমালায় অন্তর্ভূক্ত অথবা আপনার জোরালো নির্দেশনার দাাাবি জানাচ্ছি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
আপনি এদেশের উন্নয়নে যথেষ্ট সোচ্চার এবং আপনার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এর ফলে দেশ আজ
উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বের কাছে পরিচিতি লাভ করেছে। আপনি উদ্যোগ গ্রহণ করলে সড়ক পরিবহন
আইন ২০১৮-এ উপরোক্ত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করে বিধিমালা প্রণয়ন ও অনুমোদন করলে এবং সে অনুযায়ী প্রশাসন
ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকল মহল কাজ করলে সড়ক দুর্ঘটনা নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে,
যার ফলে SDG-এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।

আপনার সুদৃষ্টি ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ এ দেশ থেকে সড়ক দুর্ঘটনা নিরসনে জোরালো ভূমিকা রাখবে বলে আশা
রাখি। আপনার সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনা করছি।

প্রতিলিপি:
১. মাননীয় মন্ত্রী- অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা
২. মাননীয় মন্ত্রী- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা
৩. মাননীয় মন্ত্রী- আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা
৪. মাননীয় মন্ত্রী- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন