স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনা এখন দেশের অন্যতম জাতীয় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে সার্বিক পদক্ষেপ প্রয়োজন। শনিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমিতে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর ১০ম মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে ২০২৩ সালে পাঁচ হাজার ৪৯৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ২৪ জন। এটা বেশ উল্লেখযোগ্য একটা সংখ্যা। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে অদক্ষ ও অসচেতন চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বাদ দেওয়া হচ্ছে ফিটনেসবিহীন গাড়ি।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ আহত হচ্ছে, নিহত হচ্ছে। সড়কে খালি হচ্ছে হাজারও মায়ের কোল। এসব দুর্ঘটনা নিরসনে সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনার কারণ চিহ্নিত করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে বিভিন্ন সময় দাবি জানিয়ে আসছে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’। সরকার ২২ অক্টোবর নিরাপদ সড়ক দিবস ঘোষণা করে, যা দেশে গুরুত্ব সহকারে পালিত হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, সড়ক পরিবহন আইনে গাড়িচালক, হেলপার, মালিক এবং বিভিন্ন ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি সবার দায়িত্ব যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। যে যেই দায়িত্বে থাকবে তার গাফিলতি হলে কী ধরনের শাস্তি হবে, তার সবকিছুই আইনে পরিষ্কার করা হয়েছে। আমরা চাই দুর্ঘটনা কম হোক, দুর্ঘটনায় আর যেন কেউ মৃত্যুবরণ না করে। পৃথিবীর সব দেশে দুর্ঘটনা ঘটে, মানুষের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশে যাতে সড়ক দুর্ঘটনা কমে সেজন্যই কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
দুর্ঘটনা রোধের কারণ খুঁজে বের করা দরকার উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত যতটা দেখছি সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ সচেতনতার অভাব। দক্ষ চালকের হাতে যাতে স্টিয়ারিং থাকে আমরা সেই ব্যবস্থা করতে যাচ্ছি। ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিষয়ে খেয়াল রাখছি। চালকদের প্রশিক্ষণের অভাবও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। গাড়ি চালানো অবস্থায় চালকের মোবাইল ব্যবহার, অপরিকল্পিত ভঙ্গুর সড়ক, ওভারটেকিং, অতিরিক্ত গতি, ওভার ব্রিজের স্বল্পতা, ট্রাফিক আইন অমান্য করা, ট্রাফিক পুলিশের গাফিলতিও আমরা মাঝেমধ্যে দেখি।
একটি শহরে ২৫ ভাগ সড়ক থাকা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে কোনো শহরে তা নেই। এজন্য উড়ালসড়ক, ফ্লাইওভার হচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী ছয় দফা নির্দেশনাও দিয়েছেন। আমরা জেনেও আইন মানি না। এতে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ে।’
মন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার কারণ আগে খতিয়ে দেখা উচিত। সবচেয়ে বেশি সচেতনতার অভাব।
নিসচার কর্মীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের কিছু দায়িত্ব আছে। আপনারও কারণ খুঁজে বের করেন। সেগুলো আমাদের দিন। আমরাও কাজ করছি। ঢাকাকে যানজট মুক্তসহ কীভাবে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে যাওয়া যায় তার চেষ্টা হচ্ছে।’
নিসচার চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, নিসচার মহাসচিব এস এম আজাদ, যুগ্ম মহাসচিব লায়ন গনি মিয়া বাবুল, ভিসতা ইলেক্ট্রনিক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমান হোসেন আকাশ এবং আমেরিকান ওয়েলনেস’র পরিচালক মোহাম্মদ ইমতিয়াজ প্রমুখ।
আমার মনে হয় সবগুলো সড়কে ডিভাইডার (হাইওয়ে) করে দিলে সড়ক দূর্ঘ টনা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেশি।