পরিবহন চালক ও হেলপারদের সন্তানদের সরকারি স্কুলে লেখাপড়ার খরচ বিনামূল্যে এবং পাবলিক স্কুল/বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ধেক ফিতে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আবারও আহ্বান জানালেন ইলিয়াস কাঞ্চন।
গত বছর এই দাবি নিয়ে নিসচার সারাদেশে থাকা শাখা মানবন্ধন করে। আজ নিরাপদ সড়ক চাই টাঙ্গাইল জেলা শাখার আয়োজনে টাঙ্গাইল বাস টার্মিনালে আইন মেনে সড়কে চলি- নিরাপদে ঘরে ফিরি” জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২২ উদযাপন উপলক্ষে শ্রমিক, চালক ও মালিকদের নিয়ে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক সমাবেশে আবারও এই দাবি উপস্থাপন করেন নিসচার প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।
সমাবেশ ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, পরিবহন শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত তাদের জীবন বাজি রেখে জীবিকা অর্জন করছে। তাদের দৈনিক রোজগারের পরিমান স্বল্প। আর সেকারণে পরিবহন শ্রমিকদের সন্তানদের বিনা বেতনে পড়ালেখার সুযোগ সৃষ্টির করার দাবি যথার্থ। তিনি বলেন, সারাদেশে কজন পরিবহন শ্রমিকদের সন্তান রয়েছে। সামান্যতম কিছু শিক্ষার্থী হবে, এই সামান্য কিছু শিক্ষার্থীদের এই সুযোগটি দিলে কি এমন ক্ষতি হবে।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, পরিবহন চালক, হেলপাররা আমাদের ভাই। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে হলে তাদের জীবনমানের উন্নতি করতে হবে। বিশেষ করে তাদের সন্তানেরা লেখাপড়া শিখে শিক্ষিত হলে এই শিক্ষার আলো তাদের উপরও পড়বে। তখন তারা অনেক কিছুৃ জানতে পারবে। মানবিক মূল্যবোধ তৈরি হবে।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আমি মনে করি এবং বিশ্বাস করি পরিবহন শ্রমিকদের জীবনমান যদি আমরা উন্নত করতে পারি তাহলে তাদের মধ্যে বিবেক কাজ করবে, বোধদয় হবে। তাদের মাঝে যে বেপরোয়া মনোভাব রয়েছে তা আর থাকবেনা। অথচ এই পরিবহন শ্রমিকদের নিয়ে ভাববার যেন কেউ নেই। বরং নেতৃত্বের ঢাল বানাতে ব্যস্ত অনেকে। তাঁদের পেশাগত ও জীবনমানে কোন উন্নতি নেই। তাদের জন্য কোন হাসপাতাল তৈরী করা হয়নি। তাদের বাসস্থানের পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এই দেশটি সকলের জন্য। শুধু একটি শ্রেণী ভোগ করবে তা হতে পারেনা। আমি আশা করি আমাদের এই দাবির সাথে সকলে একাত্মতা ঘোষণা করবেন।
ইলিয়াস কাঞ্চন সমাবশে থাকা সকল চালক/ হেলপার/ পরিবহন শ্রমিকদের এই দাবি বাস্তবায়নের জন্য নিসচার পাশে থাকার আহবান জানান। তিনি সকলকে দাবি বাস্তবায়নে আওয়াজ তুলতে বলেন।
তিনি আরো বলেন, চুপ করে থাকলে কিছু হবেনা। একা ইলিয়াস কাঞ্চন চাইলেও হবেনা। যদি এই দাবি বাস্তবায়ন করতে চান তাহলে আসুন সকলে মিলে দাবি তুলি পরিবহন শ্রমিকদের সন্তানদের বিনা বেতনে পড়া লেখা করার সুযোগ দিতে হবে।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আমি কারও পক্ষে-বিপক্ষে নই। আমি আপামর মানুষের স্বার্থে কথা বলি। বাস-ট্রাকচালক, যাত্রী, রিকশাচালক, পথচারী, ব্যক্তিগত গাড়িচালক সবাই সড়কে আইন মানলে দুর্ঘটনা ঘটবে না। একজনের জন্য অন্যজন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এরপরও আমার বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়। কিছু শ্রমিকনেতার ভুল বোঝানোর কারণে চালকেরা ধরে নেন, আমি তাঁদের বিপক্ষে কথা বলছি। এটা দুঃখজনক, ভুল-বোঝাবুঝি।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুক, চেয়ারম্যান, টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ ও সভাপতি, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগ।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জনাব ড. মো: আতাউল গনি, জেলা প্রশাসক, টাঙ্গাইল। জনাব সরকার মোহাম্মদ কায়সার, পুলিশ সুপার, টাঙ্গাইল। জনাব এস এম সিরাজুল হক আলমগীর, মেয়র, টাঙ্গাইল পৌরসভা। জনাব লিটন এরশাদ, মহাসচিব, নিরাপদ সড়ক চাই। জনাব খন্দকার ইকবাল হোসেন, সভাপতি, টাঙ্গাইল জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতি। জনাব চিত্ত রঞ্জন সরকার, সাধারণ সম্পাদক, টাঙ্গাইল জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন।
সম্মানিত অতিথি ছিলেন, জনাব এস এম আজাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক, নিরাপদ সড়ক চাই, কেন্দ্রীয় কমিটি। জনাব আবদুর রহমান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক, নিরাপদ সড়ক চাই, কেন্দ্রীয় কমিটি। জনাব রোকনুজ্জামান রোকন, সদস সচিব, নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপন কমিটি। জনাব মোঃ মহসিন খান, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক, নিরাপদ সড়ক চাই, কেন্দ্রীয় কমিটি। জনাব আবু বকর সিদ্দিক রাব্বী, প্রকাশনা সম্পাদক, নিরাপদ সড়ক চাই, কেন্দ্ৰীয় কমিটি। জনাব এম কাইয়ুম খান, নির্বাহী সদস্য, নিরাপদ সড়ক চাই, কেন্দ্রীয় কমিটি। এম নাহিদ মিয়া, যুব বিষয়ক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি।