বর্তমানে যেহেতু পরিবহন মালিকদের সড়কে কোন চাদা দিতে হচ্ছেনা। এই চাদার টাকার পরিমানটা যদি যাত্রীদের ভাড়া কম নিয়ে গাড়ি চালাতো এতে করে যাত্রীরা বাড়তি সেবা পেতো। একারণে পরিবহন মালিকদের প্রতি ইলিয়াস কাঞ্চন আহবান জানান বাস ভাড়া কমিয়ে যাত্রী সেবা নিশ্চিত করতে। পাশাপাশি তিনি নিত্যপন্যের দামও কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে আনার আহবান জানান। আজ এক ভিডিও বার্তায় ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, প্রিয় দেশবাসী এবং এই আন্দোলনে যুক্ত সকলকেই ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। বিশেষ করে ধন্যবাদ দিচ্ছি যে গত ভিডিওতে আমি বলেছিলাম বাজার মনিটরিং করার জন্য। আজকে নিউজে দেখলাম ছাত্ররা বাজার মনিটরিং করছে। এটার জন্য আমি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি যে আমার এই ভিডিওটি আসলে কাজে লেগেছে। বাজার মনিটরিং শুরু হয়েছে। মানুষের উপকারে আসবে।
আমি বাজার মনিটরিং এর আগে পরিবহন মালিক এবং চালক ভাই, শ্রমিক ভাইদের উদ্দেশ্যেও একটা ভিডিওতে কথা বলেছিলাম। এই সময় আপনারাও অবদান রাখুন। আপনারা কেন পিছনে পড়ে থাকবেন? সেই সুযোগটা কিন্তু আপনাদের হাতে এখন এসেছে।
যেমন আমি আপনাদেরকে এই বুদ্ধিটুকু দেই যে আগে কিন্তু আপনাদের টার্মিনাল চাঁদা তারপরে পথে পথে পুলিশের চাঁদা রাজনীতি চাঁদা নানান রকমের চাঁদা কিন্তু আপনাদের দিতে হতো। এবং এই সবকিছু মিলিয়ে পরিবহনের যে ভাড়াটা সেটা কিন্তু আপনারা অনেক বেশি ধার্য করেছেন। যেহেতু এই সময়ে এখন আর ওই চাঁদাগুলো আপনাদের দিতে হচ্ছে না। স্বাভাবিক ভাবেই আপনাদের কি করা উচিত।
আপনাদের নিশ্চয়ই বোঝা উচিত এবং সেটি যদি করেন, এই যে টাকাটা বেঁচে যাচ্ছে, চাঁদা না দেওয়ার ফলে। এই টাকাটা যদি ভাড়ার মধ্যে থেকে আপনি কম নেন। তাহলেই কিন্তু আপনারা এর একটা প্রতিফল আমাদের উপরে আসবে।
বাজারে জিনিসপত্রের দামগুলো কমে যাবে। এবং মানুষের উপকারে আসবে। মানুষের একটা শ্রদ্ধাবোধ ভালোবাসাও কিন্তু আপনাদের ওপরে জেগে উঠবে কাজেই আপনারা যাত্রী ভাড়া এবং পরিবহন ভাড়া টা এই জনগণের জন্য এই সময়টার মধ্যে কমিয়ে দেন। কমিয়ে দিলে দেখবেন স্বাভাবিকভাবেই কিন্তু আপনাদের প্রতি মানুষ একটু খুশি হবে।
পাশাপাশি ইলিয়াস কাঞ্চন ব্যবসায়ীদের বলেন, ব্যবসায়ী ভাইয়েরা যারা আছেন নিত্য প্রয়োজনীয় যে জিনিসগুলো এবং যেগুলো কাঁচামাল বিশেষ করে বাইরে থেকে যারা নিয়ে আসেন তাদেরও কিন্তু অনেক চাঁদা দিতে হতো কিন্তু পথে পথে। আর এই যে পরিবহনের ভাড়াটা যখন কমে যাচ্ছে এবং আপনাকেও ওই চাঁদাবাজির টাকাটা দিতে হচ্ছেনা তো স্বাভাবিক ভাবে আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ রইলো দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে আপনারাও কিন্তু নিত্য পণ্যের দাম কমিয়ে দিতে পারেন।
ভিডিও বার্তার শেষ অংশে ইলিয়াস কাঞ্চন আক্ষেপ করে কিছু কথা বলেন সবার উদ্দেশ্যে।
তিনি বলেন, একটি জিনিস আমি দেখলাম আমাকে অনেকেই ভালোবাসেন তার মধ্যে থেকে দু একজন যে ধরনের মন্তব্য করেন সেটা আমাকে খুব কষ্ট দেয়। আপনাদের বোঝা উচিত আমার সম্পর্কে।
আমি একত্রিশ বছরে কি কোন সরকারের কাছে চামচামি করতে গেছি কখনো? আমি কি কখনো বলেছি যে আমাকে এই দেন ওই দেন? তারপর এখনো যারা আসছে তাদের পিছনে কি আমাকে দেখছেন? কোথায় আমাকে কোথায় দেখছেন? আমাকে কিন্তু রাস্তায় দেখেছেন।
আমি কিন্তু কখনোই সত্য কথা বলতে সত্যের পথে চলতে পিছপা হই না। আমি কিন্তু ভয় পাই না। আমি ভয়ে কখনও চলি না। আর এবার যে রাস্তায় নেমেছি আমার কতটা ত্যাগ করে আমি রাস্তায় নেমেছি সেটা আপনারা তো অনেকে জানেনইনা।
এই যে আমার নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন। এই আন্দোলনের একটি দিবস আছে যা প্রতি বছর ২২ অক্টোবর জাতীয় ভাবে পালন করা হয়ে থাকে। এই দিবসটি নিয়েও কিন্তু ষড়যন্ত্র চলছিল। এই দিবসকে বাতিল করার জন্য। আমি এটা মাথায় নিয়েও কিন্তু তারপরেও সড়কে গেছি ছাত্রদের পাশে দাড়িয়েছি।
আরও একটি বিষয় যে গভর্নমেন্ট ছিল সেই গভর্নমেন্টের সময় আমার ছবিতে কি জুতার মালা পড়ায় নাই? আমার পুত্তলিকা কি তাঁরা দাহ করে নাই? ঝাড়ু দিয়া আমার ছবি মধ্যে পিটায় নাই?
কাজেই আমার সম্পর্কে কেউ কোন কথা বলার আগে আমার সম্পর্কে বুঝে বলবেন। তাহলে আমি অন্তত শান্তি পাবো। আমার সম্পর্কে আজেবাজে কোন কথা বলবেন না।
আমি একটা জিনিস মনে করি, আমি পৃথিবীতে আসছি সৃষ্টিকর্তা আমাকে পাঠিয়েছেন। তার একটা মিশন দিয়ে পাঠিয়েছেন। এবং আমি বিশ্বাস করি যে আমি শুধু আমার জন্যে নয়। আমি এই পৃথিবীতে আসছি দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য। এবং সেটার প্রমাণ আমি দিয়েছি এই একত্রিশ বছর ধরে।
আমার যে সেক্রিফাইস, আমার যে ত্যাগ সেটা আপনাদের বোঝা উচিত। কাজেই আমি আবারো বলবো যে কিছু মানুষ আছেন যারা নিজেরা তো কোনো কিছু করবেন না কোনো মানুষ যদি ভালো কাজ করেন তো তার পিছনে আবার আপনারা লাগবেন। আমি কোনোদিন কোনো দলবাজি করি নাই আমি কোনোদিন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হইনি।
আমি আমার এই নিরাপদ সড়ক চাইর জন্য আমি অনেক অনেক কিছু ত্যাগ করেছি। আমি কোনো কিছু চাওয়ার আশায় কোনো কিছু পাওয়ার আশায় করিনি।