নিরাপদ সড়ক চাই-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেছেন, সবাই মিলে সচেতনভাবে চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারলে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করে বিশ্বে উদাহরণ তৈরি করা সম্ভব। তিনি বলেন, একটু চেষ্টা করলেই সড়কের পরিস্থিতি পাল্টে দেওয়া যাবে। কেউ নিজে অন্যায় করছেন কি না, সেটা দেখবেন। পরে অন্যকে শোধরানোর কাজটা করতে হবে। শনিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে নিরাপদ সড়ক চাই-এর (নিসচা) নবম মহাসমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ তত্ত্বাবধানে উচ্চপর্যায়ের মনিটরিং সেল গঠন করে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার ও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে মহাসড়কের যাবতীয় বিষয় নজরদারি করতে হবে।
৫ শতাংশ গতি কমলে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০ শতাংশ প্রাণহানি কমবে উল্লেখ করে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, যানবাহনের অতিরিক্ত গতি সড়ক দুর্ঘটনার বড় কারণগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, গড়ে ৫ শতাংশ গতি কমলে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০ শতাংশ প্রাণহানি কমবে। ঘণ্টায় এক কিলোমিটার গতি বাড়ালেই দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ৪ থেকে ৫ শতাংশ বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ২০১৮ সালে সংসদে আইন পাস হওয়ার পর ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর তা বাস্তবায়ন হওয়ার কথা থাকলেও, আজও তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি।
এছাড়া বাস রুট রেশনালাইজেশনের যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তাও পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। এটি বাস্তবায়ন হলে ঢাকা শহরে যানজট ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আসবে। যতদিন পর্যন্ত গতি নিয়ন্ত্রণ করা না হবে, তত দিন পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে না।
এক সমীক্ষার বরাত দিয়ে নিসচার চেয়ারম্যান বলেন, গত ২৫ এপ্রিল থেকে ৮ মে এই দুই সপ্তাহে দেশে ২৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭৬ জনের প্রাণ গেছে। আহত হয়েছেন অন্তত দেড় হাজার মোটরসাইকেলচালক। বিক্রেতাদের উচিত ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া মোটরসাইকেল বিক্রি না করা। কারণ দেশে প্রতিনিয়ত মোটরসাইকেলের সংখ্যা বাড়ছে। এ কারণে দুর্ঘটনাও বাড়ছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিসচার ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসান-উল হক কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। সংগঠনের ভাইস-চেয়ারম্যান মো. রফিকুজ্জামান, কানিজ ফাতেমা মঞ্জুলি কাজী, যুগ্ম-মহাসচিব লিটন এরশাদ, লায়ন গণি মিয়া বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আজাদ হোসেনসহ কেন্দ্রীয় ও শাখা কমিটির সদস্য মহাসমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।