দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে চলছে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন। গত চার বছরে এ আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে সরকারও। প্রতি বছর ২২ অক্টোবর পালন করা হচ্ছে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস। এর মধ্য দিয়ে আসলে সড়কের নিরাপত্তা কতটুকু নিশ্চিত করা গেলো?
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, এখনো সড়ক নিরাপদ হয়নি। বরং অনিরাপদ হয়েছে বেশি। গ্যাপটা হলো- কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটে, কী করলে দুর্ঘটনা কমানো যেতে পারে- গত ২৮ বছরে যত সরকার এসেছে, প্রত্যেককেই আমরা সেটি জানিয়েছি। অসুখ ধরেছি, ডায়াগনোসিস করেছি, কী ওষুধ লাগবে সেটিও বলেছি। কিন্তু এ সড়কের অসুখ সারানোর দায়িত্ব যিনি নেবেন বা যারা ওষুধ দেবেন, খাওয়াবেন, তারা কাজটা করছেন না।
তিনি বলেন, ২৮ বছর আমরা আন্দোলন করছি। ২০১৭ সাল থেকে সরকার দিবস পালন করছে। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনা রোধের জন্য যে সাজেশন আমরা দিয়ে আসছি, সেগুলো যতক্ষণ পর্যন্ত বাস্তবায়ন না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা সুফল পাবো না।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আগের যে সমস্যা ছিল, সেগুলো তো সমাধান হচ্ছেই না, বরং নতুন নতুন সমস্যা সৃষ্টি করা হচ্ছে। যেমন- নসিমন-করিমন ভটভটি আসছে, ব্যাটারিচালিত গাড়ি আসছে। আগের গাড়িগুলোই যেন সঠিক ফিটনেস নিয়ে চলে, চালকরা যেন উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে গাড়ি চালান এবং জনগণও যেন নিয়ম মেনে রাস্তায় চলেন, পারাপারে নিয়ম মেনে পার হন- এসব সমস্যা তো সমাধান হচ্ছেই না, নতুন সমস্যা সৃষ্টি করা হয়েছে। যে কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা।
উল্লেখ্য, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন ১৯৯৩ সালে ২২ অক্টোবর বান্দরবানে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের চন্দনাইশে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। সেই থেকে শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে ইলিয়াস কাঞ্চন নামেন পথে। ‘পথ যেন হয় শান্তির, মৃত্যুর নয়’ স্লোগান নিয়ে গড়ে তোলেন একটি সামাজিক আন্দোলন ‘নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)।’
নিসচার আন্দোলনের ফলস্বরূপ ২০১৭ সালের ৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ২২ অক্টোবরকে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ওই বছর থেকেই বাংলাদেশে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত হয়ে আসছে।