নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটকে উপেক্ষা, নিসচার ইতিহাসকে বদলে ফেলার অপচেষ্টা এবং নিসচার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনকে অসম্মান ও তাঁর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে আজ ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। নিসচা কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব এস এম আজাদ হোসেন এর নেতৃত্বে ভাইস চেয়ারম্যান লিটন এরশাদ, অর্থ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ও কাইয়ূম খান স্মারকলিপি তুলে দেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর হাতে।
এসময় বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন নিসচা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা। তারা ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারকে জানান, গত ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ২০২৪ এর সরকারি অনুষ্ঠানে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটকে উপেক্ষা করা হয়েছে নিসচার ইতিহাসকে বদলে ফেলার অপচেষ্টা এবং নিসচার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনকে অসম্মান ও তাঁর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করায় আমরা সকল নিসচা কর্মিরা ব্যাথীত।
যে ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ইলিয়াস কাঞ্চন এবং নিরাপদ সড়ক চাই-এর দাবি ও নিরবচ্ছিন্ন প্রয়াসে এসেছিলো সে মানুষটিকে অবহেলা করায় আমরা মর্মাহত। নেতৃবৃন্দরা সেদিন এর অনুষ্ঠানে নিসচাকে খাটো করে কতিপয় শিক্ষার্থীদের সম্মুখসারিতে তুলে এনে সেখানে তারা ২০১৮ সালের ছাত্র আন্দোলনের কথা যেভাবে উপস্থাপন করে নিসচার প্রকৃত ইতিহাস বিকৃত করে জনমনে বিভ্রান্তি ছরিয়েছে তারও নিন্দা জানান।
নিসচা নেতৃবৃন্দরা বলেন, আজ যে ২০১৮ সালের প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হচ্ছে। একথা অনিস্বীকার্য যে, ২০১৮ সালে যে স্লোগানটি ধারন করে আন্দোলনটি ঘনীভূত হয়েছিলো এবং সকলের হৃদয় কেড়েছিল এই স্লোগানটিই ছিলো নিরাপদ সড়ক চাই। যার সূচনা যার সৃষ্টি করেছিলেন ১৯৯৩ সালে ইলিয়াস কাঞ্চন।
২০১৮ সালের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে সেসময় ছাত্রদের এই আন্দোলন প্রতিটি ক্ষেত্রে ইলিয়াস কাঞ্চনের অবদান ইলিয়াস কাঞ্চনের স্লোগান ও ইলিয়াস কাঞ্চনের দাবি সম্মুখে রেখেই তারা এই আন্দোলনটি করেন। ঐ আন্দোলন চলাকালে বিগত সরকারের পক্ষ থেকে যখন সে আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিলোনা ঠিক তখন প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায় থেকে ইলিয়াস কাঞ্চনকে চাপ প্রয়োগ করা হয় এই আন্দোলনটি থামিয়ে দেবার জন্য শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরিয়ে নেবার জন্য। পাশাপাশি তারা প্রতিশ্রতি দেয় এই আন্দোলনের দাবি তারা মেনে নেবে যদি শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরে যায়। ফলশ্রতিতে আন্দোলনের একটা পর্যায়ে যখন নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর পেশীবাদি শক্তির থাবা পড়ছিল তখন ইলিয়াস কাঞ্চন প্রশাসনের সাথে দেনদরবার করেন ২০১৮ সালের যে আইনটি ২০১২ সাল থেকে পাশ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিলো সে আইনটি পাশ করার দাবি আদায়ে তিনি মহাসমাবেশের মাধ্যম্যে এবং সংবাদ সম্মেলন করে তিনি শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাবার আহবান জানান।
এবং সে সময় শিক্ষার্থীরা ইলিয়াস কাঞ্চনের আহবানে সাড়া দিয়ে ঘরে ফিরে যান। সরকারও ২০১৮ সালের আইনটিকে পাশ করেন। পরবর্তিতে দেখা গেছে এই আন্দোলনটিকে ভিন্নখানে প্রবাহিত করা এবং নিরাপদ সড়ক চাই এর যৌক্তিক যে অবস্থান যে অবদান সেটিকে পেছনে ফেলে দেবার জন্য যে পরিবহন চক্রটি নিরাপদ সড়ক চাইকে সবসময় প্রতিপক্ষ ভাবে তাদেরই দোসর এবং তারা ঐ কতিপয় ছাত্রদের মাধ্যমে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। যে সংগঠনকে দিয়ে ২০১৮কে সম্মুখে তুলে এনে নিরাপদ সড়ক চাই এর যে ইতিহাস সে ইতিহাসকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা করছে। আমরা এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে কেন্দ্র সহ সারাদেশে নিরাপদ সড়ক চাই শাখার পক্ষ থেকে এই স্বারকলিপি প্রদান করছি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর।