সেন্টমার্টিন নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে এতে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বায়তুল ইজ্জতে অবস্থিত বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজে (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি) প্যারেড গ্রাউন্ডে ১০১তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি এ আহ্বান জানান।
ডিজি বলেন, মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও বিদ্রোহী দলের মধ্যে নাফ নদীর তীরবর্তী এলাকায় তুমুল যুদ্ধ চলছে। যখন একটি দেশে দুটি দলের মধ্যে যুদ্ধ চলে তখন এর পাশাপাশি এদিক-ওদিক গোলাগুলি হতে পারে। কিছু গোলা এদিক-ওদিক গেছে, কিছু গুলি আমাদের ট্রলারের দিকে এসেছে। আমরা মিয়ানমারের দুই পক্ষকে জানিয়েছি যে আমাদের দিকে পরবর্তীতে যেন কোনো ঘটনা না ঘটে। এরপর কিন্তু আর গোলাগুলি হয়নি। তবুও সেন্ট মার্টিনে যেসব ট্রলার চলাচল করে তাদেরকে বাংলাদেশের পতাকা উঁচু করে বেঁধে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হবে না।
তিনি আরও বলেন, তারপরও সাবধানতা অবলম্বন করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিকল্প পথে কক্সবাজার থেকে জাহাজ, ট্রলার গমনাগমন করছে। তারপরও ঝুঁকিপূর্ণ ওই এলাকা বাদ দিয়ে চলাচলের জন্য আমরা চেষ্টা করছি।
সেন্ট মার্টিনকে নিয়ে অনেকে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি নিজেও সেখানে গিয়েছি। সেখানে বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করে সাবধান করে এসেছি।
পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) অপতৎপরতার প্রতিরোধের বিষয়ে এক প্রশ্নে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, এখনও যৌথ বাহিনীর অপারেশন চলছে। এর মধ্যে অনেক সফলতা এসেছে। বান্দরবান অধ্যুষিত থানচি, রুমাসহ বিভিন্ন এলাকা সম্পূর্ণভাবে বিপদমুক্ত ও জনসাধারণের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ না করার পর্যন্ত যৌথ বাহিনীর অপারেশন চলমান থাকবে।
আরাকান আর্মি বাংলাদেশের জন্য হুমকি মনে করা হচ্ছে কি-না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আরাকান আর্মি মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর জন্য থ্রেট। তারা আমাদের জন্য থ্রেট কিংবা বন্ধু কোনো কিছুই না। আমরা অবজারভ করছি। কোনোভাবেই যেন আমাদের দেশের সীমান্তে কোনো নিরাপত্তা বিঘ্ন না হয়।
এর আগে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ৫৫৬ জন নবীন সৈনিকের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। এর মধ্যে ৩৬ জন নারী সৈনিক। প্রশিক্ষণে প্রথম স্থান অধিকার করেন মিনহাজ হোসেন রাফি এবং নারীদের প্রথম স্থান অধিকার করেন ছাবাতুন উল্লাহ জীম। নবীন সৈনিকদের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দেন তিনি।
এ সময় বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, বিজিটি এন্ড সি’র কমানড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এবি এম নওরোজ এহসান, বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় অসামরিক প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও আমন্ত্রিত ব্যক্তিরা ছিলেন।